শহর প্রতিনিধি-
চাঁদপুর শহরে বিপণীবাগ আব্দুর ছাত্তার মিয়ার মালিকানাধীন চতুর্থ তলায় ভাড়াটিয়া অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর সদস্য ইব্রাহীমের ছেলের বউ ফাহিমা আক্তার হ্যাপীর রহস্যজনক হত্যার ঘটনায় নানা গুঞ্জণ শুনা যাচ্ছে।
গতকাল রোববার সকালে হত্যা মামলার আটক আসামী ফরিদগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিক ও চাঁদপুর শহরের কর্ণফুলি হাসপাতালের কর্মরত সরোয়ার হোসেন সুমন (৩২) ও তার মা সালেহা বেগম (৪৮)-কে কোর্টে প্রেরণ করলে তাদের জামিন না মঞ্জুর করে আদালত জেল হাজতে প্রেরণ করে। এলাকাবাসী ও হ্যাপীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফরিদগঞ্জ গরিয়ানা সরদার বাড়ি ইব্রাহীমের ছেলে সমুনের সাথে পুরাণবাজার পশ্চিম জাফরাবাদ সাবেক চেয়ারম্যান আলম মোল্লা বাড়ির নাজিম উদ্দিন মোল্লার মেয়ে ফাহিমা আক্তার হ্যাপীর সাথে বিবাহ হয়। বিয়ের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার রাতে হ্যাপীর সাথে তার স্বামী সমুন ও শ্বাশুরি সালেহা বেগমের সাথে স্বর্ণের আংটি কেনার জন্য টাকা নিয়ে উভয়ের মধ্যে ভাকবিত-ার সৃষ্টি হয়। বহুদিন আগথেকে হ্যাপীর স্বপ্ন ছিল জাঁকজমকভাবে বিবাহ বার্ষিকীর দিনটিকে পালন করা। কিন্তু নিষ্ঠুর নিয়তির কারণে তার স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। পৃথিবীর সব মায়া ত্যাগ করে ঐদিনই চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ঘটনার দিন শনিবার সকাল ৮টায় বিবাহ বার্ষিকীর ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বামী ও শ্বাশুরী গৃহবঁধূ হ্যাপীকে প্রথমে বাকবিত-ার সৃষ্টি হয়, পরে মারধরের ঘটনা ঘটে। অতিথি ভিলার পার্শ্ববর্তী ভাড়াটিয়া কয়েকজন জানায়, ঘটনার দিন সকালে তার (হ্যাপীর) শ্বশুর ইব্রাহীম নামাজ পড়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে যায়। সকাল ৮টায় সুমন ও তার মা সালেহা বেগমের সাথে হ্যাপীর ঝগড়া সৃষ্টি হয়। হ্যাপী ব্যাপক চিৎকার করলে একপর্যায়ে তার আওয়াজ বন্ধ হয়ে যায়। ধারণা করে যাচ্ছে, হ্যাপীকে জামাই-শ্বাশুরি বালিশ চাঁপা দিয়ে হত্যা করেছিল পরে ঘটনাটি অন্য দিকে ধাবিত করার লক্ষে তাকে স্বেচ্ছায় ফাঁসি দিয়ে আত্যাহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ্য করে।
তারা আরো জানায়, হ্যাপীর মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে বিছানায় শুয়ে রেখে তার শ্বাশুরি বউ’র মৃত্যুর হয়েছে বলে চিৎকার করতে থাকে। ঘটনার পর পরেই তার আশপাশের প্রতিবেশীরা এসে তাকে মৃত দেখতে পায়। এদিকে হ্যাপীর পরিবারের অভিযোগ জামাই সুমন অতিরিক্ত নেশাগ্রস্থ হয়ে ঘটনার দিন রাতে ও সকালে ব্যাপক মারধর করে। একই সাথে তার শ্বাশুরি সালেহা বেগমের কাছে স্বর্ণের আংটি কেনার টাকা চাওয়ার কারণে একই সময় উভয়ই তাকে মারধর করে হত্যা করে।
এই নিয়ে হ্যাপীর পরিবার ও শ্বশুর বাড়ির পার্শ্ববর্তী ভাড়াটিয়াদের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। গৃহবঁধূর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় হ্যাপীর বাবা নাজিম উদ্দিন মোল্লা বাদী হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০/সংশোধনী ২০০৩এর ১১(ক)/৩০ ধারায় সুমন, সালেহা বেগম ও ইব্রাহীমকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। মামলার নং ৩৯। তারিখ ২৮-০৯-২০১৩ খ্রিঃ।
পুলিশি সূত্রে জানা যায়, মৃত্যুর ঘটনাটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা তা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পাওয়ার পরে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব। আটককৃতদের বিরুদ্ধে বাদী পক্ষ হত্যা মামলা দায়ের করেছে বিধায় তাদেরকে উল্লেখ্যকৃত ধারায় মামলা করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্ত স্বাপক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তারা জানায়।
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ