রেদওয়ান আহমেদ জাকির:
মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর বাজার সংলগ্ন পপুলার জুনিয়র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের টিনের তিনটি ঘর দীর্ঘদিন যাবৎ জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ৭শ’ শিক্ষার্থীর স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় রোদ-বৃষ্টিসহ অনেক সমস্যা নিয়ে খোলা আকাশের নিচে তাদের ক্লাস চলছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়টি ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভবন নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে, কিন্তু অদ্য পর্যন্ত কোনো সাড়া মেলেনি।
বিদ্যালয়টিতে ৬ষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ৭ শতাধিক ছাত্রী রয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছে ৭ জন। তিনটি টিনের ঘরে ৭ কক্ষ বিশিষ্ট স্কুলটি। স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় বিদ্যালয়ের কয়েকটি ক্লাস নিতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। কোমলমতি ছাত্রীরা খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছে। অনেকের এ দৃশ্য নজরে পড়লেও কেউ এদিকে সুদৃষ্টি দিচ্ছে না।
বৃষ্টির সময়ে স্কুলের টিনের ফাঁক দিয়ে পানি পড়ে। যার ফলে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বই খাতা ভিজে নষ্ট হয়ে যায় এবং স্কুলের মেঝে সেত সেতে হয়ে যায়। বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে একটি খাল রয়েছে। যার ফলে বিদ্যালয়টি হুমকির সম্মুখীন।
বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা জানায়, আমাদের বিদ্যালয়ে কক্ষ কম থাকার কারণে আমাদের বাইরে ক্লাস করতে হচ্ছে। আমাদের শিৰকগণ ভবনের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন কিন্তু সরকার নজর দিচ্ছে না। আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছি। বৃষ্টি হলে ক্লাস বন্ধ থাকে। আর বৃষ্টি না থাকলে ক্লাস চলে। বৃষ্টি হলে স্কুল ঘরে পানি পড়ে, যার ফলে আমরা বই খাতা টেবিলের উপর রাখতে পারি না। ক্লাস রুমের অবস্থা স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যায়। এ অবস্থায় ছাত্রীরা লেখাপড়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিরিন আক্তার জানান, বিদ্যালয়টি জরাজীর্ণ ও ৩টি ঘরের ৭টি কৰে পাঠদান শুরু থেকেই চলছে। কিন্তু জরাজীর্ণতার কারণে ও ভবনের অভাবে ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টির ছাত্রীদের ক্লাস করাতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। প্রতি বছরই বিদ্যালয়ের ফলাফল সন্তোষজনক হচ্ছে। ২০১১ সালে জেএসসি পরীক্ষায় ৫জন এ পস্নাস পেয়েছে, ৫জন ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। ২০১২ সালে জেএসসি পরীৰায় ৫জন এ প্লাস পেয়েছে, ৫ জন ট্যালেন্টপুলসহ ২জন সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি পেয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজিম উদ্দিন জানান, বিদ্যালয়টি বিভিন্ন সমস্যা নিয়েই পাঠদান চলছে। আমি অফিসিয়ালভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তবে স্থাপিত হওয়ার পর থেকে সরকারিভাবে বিদ্যালয়টিতে কোনো ভবন নির্মাণ করা হয়নি।
এ ব্যাপারে কথা হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সফিকুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কৰ না থাকার কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান সমস্যা হচ্ছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপৰসহ বিদ্যালয়টিতে ভবন নির্মাণে আমার সহায়তা থাকবে।