নিজস্ব প্রতিবেদক :
রমজানকে সামনে রেখে চাঁদপুর জেলার বাণিজ্যিক কেন্দ্র হাজীগঞ্জে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। রমজানের এখনো বেশ কয়েকদিন বাকি কিন্তু এরই মধ্যে প্রতিদিন হুহু করে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। এ উপজেলা বেড়েছে চাল, ডাল, চিনি, ছোলা, পিঁয়াজ, রসুন, আদা, লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কয়েকটি পণ্যের দাম। কাঁচা সবজির দামও কমছে না। শুধু দাম বাড়াতে ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা। অব্যাহত দাম বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ। রমজানের পণ্য হিসেবে পরিচিত ছোলা, চিনি, পিঁয়াজ, মসুর ডালের দাম প্রতিদিন ২ টাকা থেকে ৫ টাকা করে বাড়ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে হাতে গোনা কিছু ব্যবসায়ী পণ্য গুদামজাত করে রেখেছে। সরকারের নজরদারির অভাবেই তারা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বাজারে চলছে রীতিমত দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতা। পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দোকানগুলোতে মূল্য তালিকা টানানো হয়নি। বাজারে কোন তদারকিও নেই। এই সুযোগে ইচ্ছেমতো দাম নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বাজার সংশ্লি¬ষ্টরা বলছেন, রোজার মাসকে সামনে রেখে কর্তৃপক্ষের এখনই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে রমজানে ভোক্তাদের দুর্ভোগ বাড়বে। বিক্রেতারা জানান, গত সপ্তাহে ছোলার দাম ছিল কেজি প্রতি ৫৮ থেকে ৬০ টাকা আর এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকায়। একই অবস্থা পিঁয়াজের ক্ষেত্রেও। দেশে উৎপাদিত ও আমদানি করা পিঁয়াজ কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্রি হয়েছে ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা ও ২৮ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে। এখন দেশি পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। আমদানি করা পিঁয়াজ ৩৫ টাকা। বেড়ে গেছে চিনির বাজারদর। প্রতিকেজি চিনি ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে এখন তা ৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চিনির দাম বেড়েছে ২শ’ থেকে ২শ’ ৫০ টাকা। ছোট দানার দেশি মসুর ডাল কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। আমদানি করা মোটা মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। এছাড়া মুগ ডাল, খেসারি ডাল, ডাবলি, বুটসহ সবধরনের ডালে কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বা টিসিবির কোন নির্দেশনা ও মূল্য তালিকা তারা পাননি। আর এ জন্য প্রায় প্রতিদিনই ক্রেতাদের সাথে তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে। গেল দুই সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন জাতের চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ২ থেকে ৮ টাকা। মানভেদে বিভিন্ন নাজিরশাইল প্রতিকেজি ৪৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫২ টাকা, মিনিকেট ৪২ থেকে ৪৬ টাকা, বিআর-২৯ বিআর-২৮ জাতের চাল ৩৪ থেকে ৩৬ টাকা, গুডি স্বর্ণা ৩৪ থেকে ৩৬ টাকা, পারিজা ৩৬ থেকে ৩৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে।