==============================
গত ১৯ বছর ধরে নেকাবের আড়ালে নিজের মুখ লুকিয়ে রেখেছেন ইন্দোনিশিয়ার অগুস্তিনা ডরম্যান। মুসলিম নারীদের মতো পর্দা করার জন্য তিনি নেকাব পড়া শুরু করেননি। নিজের শশ্রুমণ্ডিত চেহারা লোকচক্ষুর আড়াল রাখতেই তিনি নেকাবের আশ্রয় নিয়েছেন।
ইন্দোনেশিয়ার পেনগা গ্রামের বাসিন্দা অগুস্তিনার থুতনিতে যখন প্রথমবারের মতো দাড়ি গজানো শুরু হয় তখন সে ১৯ বছরের যুবতী। সদ্যই কোল জুড়ে এসেছে তার প্রথম সন্তান। কিন্তু সন্তান লাভের খুশিকে আড়াল করে দেয় এক গুচ্ছ কালো লোম। কয়েকদিনের মধ্যেই সেগুলো লম্বা আর ঘন হয়ে ওঠে। প্রথম প্রথম সে এগুলো কাটার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু প্রচণ্ড ব্যাথার কারণে তার সে চেষ্টা সফল হয়নি। তারপর থেকে নিরুপায় অগুস্তিনা এগুলোর বেড়ে ওঠা দেখেতে থাকে। তখন লোকজনের অতিরিক্ত কৌতুহল এড়াতে নিজের চেহারা লুকিয়ে রাখেন নেকাবের আড়ালে। শুধু মুখ নয় তার বুকেও রয়েছে ছেলেদের মতো ঘন লোম।
এখন দুই সন্তানের জননী অগুস্তিনা। বড়টার বয়স ১৯ আর ছোটটার বয়স তিন। তাদের কথা চিন্তা করেও সমসময় মুখ লুকিয়ে রাখতো সে। পাছে মায়ের দাড়ি নিয়ে বাচ্চাদের লজ্জায় পড়তে হয়, তা নিয়েও সবসময় শঙ্কিত থাকতেন অগুস্তিনা। কিন্তু এতেও শেষ রক্ষা হয়না। সম্প্রতি তার দাড়ির বিষয়টি প্রকাশ পেলে বড় ছেলেকে নিয়ে অনেকে ঠাট্টা করতে থাকে। এরপর তিনি সকল সঙ্কোচ কাটিয়ে সাহস করে নেকাবের আড়াল থেকে বেরিয়ে আসেন। চলতি সপ্তাহে দীর্ঘ ১৯ বছর পর ছেলেদের সঙ্গে নেকাব ছাড়াই গ্রামের রাস্তায় হাঁটেন তিনি। আশা করছেন লোকজন তার অবস্থা বুঝতে পারবে এবং কোনো রকম ঠাট্টা তামাসা ছাড়াই তাকে সহজে মেনে নেবে।
অগুস্তিনা কিন্তু একা নন। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রতি দশজন নারীর একজন এই অতিরিক্ত লোম বা হেয়ারস্যুটিজম সমস্যায় পড়ে থাকেন। লন্ডনের হুইপস ক্রস বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রিনা ডেভিসন বলেন, জাতিগত বা পারিবারিক কারণে অনেকের দেহে অতিরিক্ত লোম দেখা যায়। দক্ষিণ এশিয়া এবং ভূমধ্যসাগরীয় এলাকার মানুষের মধ্যে লোম প্রবণতা বেশি দেখা যায় বলে তিনি জানান।
তবে হরমোনজনিত কারণেও নারীদের দেহে অতিরিক্ত লোম এবং মুখে দাড়ি গোফ গজাতে পারে। সব মেয়েদের শরীরেই পুরুষ হরমোন অ্যান্ড্রোজেনস অল্প পরিমাণে থাকে। কিন্তু যাদের অ্যান্ড্রোজেনসের পরিমাণ বেড়ে যায় তাদেরই দাড়ি বা গোফ গজায়। অনেক সময় অনিয়মিত ঋতুস্রাবের কারণেও কোনো কোনো নারী এ সমস্যায় পড়তে পারেন।
চলতি বছরের গোড়ার দিকে এক ব্রিটিশ টিভি অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন জার্মানির মারিয়াম। অগুস্তিনার মতো তিনি কিন্তু তার থুতুনির দাড়ি নিয়ে মোটেও লজ্জিত নয়। বরং এতে নাকি তিনি নিজেকে বেশি সেক্সি অনুভব করেন। দাড়ির বদৌলতে ইতিমধ্যে এক সার্কাস টিমে কাজও জুটিয়ে নিয়েছেন। সবমিলিয়ে নিজের দাড়িসমেত চেহারাটাকে ভালই উপভোগ করছেন মারিয়াম। ‘আমি লোকজনকে একজন দাড়িওয়ালিকে দেখার সুযোগ করে দিচ্ছি এটা কিন্তু কম ব্যাপার নয়।’ মজা করে বললেন মারিয়াম
=======================
চিকিৎসা–
==============
মেয়েদের দাড়ি-গোঁফ : হার্সুটিজম
========================