চাঁদপুর: চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ কমে গেছে। জেলার আড়ৎ বা হাটবাজারে আমদানি হওয়া ইলিশের বেশির ভাগই দক্ষিণাঞ্চল জেলার। জেলেরা আগের মতো দিনরাত পরিশ্রম করে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশ শিকার করতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়েছেন। নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ড্রেজিং এবং ডুবোচরের কারণে এ অবস্থা হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাটের বিসমিল্লাহ মৎস্য আড়তের মালিক দুলাল রাঢ়ী, খান মৎস্য আড়তের মালিক খোকন খান, মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজের মালিক আবদুর রহমান খান সুমন জানান, চাঁদপুরের ইলিশ দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। নদীর গতিপথ পরিবর্তন, অবাধে ড্রেজিং এবং নদীর তলদেশে মাছের খাদ্য উৎপাদন কমে যাওয়ায় এখন আর ঠিকমতো ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া নির্বিচারে জাটকা আহরণের ফলেও ইলিশ হ্রাস পেয়েছে।
বর্তমানে বড়স্টেশন মাছঘাটে ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের প্রতিমণ ইলিশ ২৫ থেকে ২৭ হাজার টাকা, ৭০০-৯০০ গ্রামের প্রতিমণ ইলিশ ৩৫ থেকে ৩৭ হাজার টাকা এবং ১ কেজি সাইজের প্রতিমণ ইলিশ ৩৯ থেকে ৪২ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ১ কেজির বেশি ওজনের প্রতিমণ ইলিশ ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব ইলিশ দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে আমদানি করা। তবে পদ্মা-মেঘনা নদীর ইলিশ প্রতিমণ ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির পরিচালক মাঈনুদ্দিন বেপারি জানান, ইলিশ আহরণ বিগত বছরগুলোর তুলনায় অনেক কম। অনেক মৎস্য ব্যবসায়ী পেশা পরিবর্তন করেছেন। আগে বড়স্টেশন মৎস্য আড়তে কয়েক হাজার শ্রমিক কর্মরত থাকলেও বর্তমানে কয়েকশ রয়েছে। তিনি জানান, গত বছরের এই সময় প্রতিদিন এই মাছঘাটে ৬০০-৭০০ মণ ইলিশ আমদানি হতো। এ বছর প্রতিদিন গড়ে আড়াইশ মণ আমদানি হচ্ছে। স্থানীয় ইলিশ বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন ৬০-৭০ মণের মতো আমদানি হচ্ছে। মৎস্য ব্যবসায়ী আবদুর রহমান খান সুমন জানান, মাছ আমদানি কমে যাওয়ায় রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বৃষ্টি ও নদীর স্রোত বৃদ্ধি পেলে আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের চাঁদপুর নদী কেন্দ্রের ইলিশ গবেষক ড. মো. আনিসুর রহমান জানান, সাধারণত জেলেরা জুন মাস থেকে ইলিশের ভরা মৌসুম মনে করে থাকেন। প্রকৃত পক্ষে ইলিশের ভরা মৌসুম আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর। বৃষ্টিপাতের ওপর ইলিশের প্রাপ্যতা নির্ভর করে।
শিরোনাম:
রবিবার , ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২৪ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।