এম.এইচ.মাহিন:
মানুষের আচরনে হঠাৎ একদিন স্বীয় মনে প্রশ্ন জাগে মানুষ বদলে গেল নাকি ভূবনজগৎ। না ভূবন নয় মানুষই বদলে গেছে। কারণ আজও পূর্বদিকে সূয উদয় হয় এবং পশ্চিম দিগন্তে অস্তমিত হয়। অপরদিকে বেলা শেষে পাখি ফিরে তার আপনণীড়ে এবং জলপানে ভাসা হাঁসগুলো স্বীয়গতিতে ফিরে গৃহস্থের বাড়ি।
মানুষ প্রেক্ষাপটে দেখলাম গ্রাম এবং শহরে ব্যাপক পরিবর্তন। প্রচলিত কথায় যদি বলি তাহলে ডিজিটাল। আমার দেখা ভোরবেলা দেখতাম পাড়ার মুরব্বিরা প্রার্থনা সেরে কেউ কাস্তে হাতে, কেউ মুইয়া জাল হাতে এবং ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে আমপারা-কোরান শরীফ হাতে মক্তব পাড়ায়। কি যে আর্দশ, দেখাপানে সালাম-কালাম সরল ভাষায় শান্তিময় পরিবেশ।
এবার আসি শহরের কথায়, মায়ামমতায় ছিল পরিপূর্ণ, অপরের দুখে দুখী হত, বাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়ার ব্যথা বুঝত যা বর্তমানে হিতে-বিপরীত। তাহলে কি আমরা মানবকূল পৃথিবীকে ধবংশ করছি নাকি পৃথিবী মানবকূলকে ধবংশ করছে। মানবকূলই ধবংশ করছে এই শান্তিময় বসুন্ধরাকে। ছোটবেলা দাদুর মুখে শুনতাম কলিযুগের কথা ,কলি যগের মানুষরই পৃথিবীকে ধবংশ করবে। দাদুকে আমি বলতাম দাদু কলি যুগটা কেমন হবে এবং এর বুকে বিচরন মান মানুষগুলো দেখতে কেমন হবে।
দাদু বলল, ধর আজ তোদের বাড়িতে যারা কাজ করে একদিন দেখবি তারা অনেক টাকার মালিক হবে, তাদের থাকবে বড় বড় দালানকোটা। এধরনের মানুষকে মানুষ ভয়ে সম্মান করবে এবং তাদের কাছ থেকে শিক্ষিত মানুষরা পাশ কেটে যাবে অপমানের ভয়ে। তবে দাদু আমরা না পড়ছি শিক্ষিত মানুষ জাতির মেরুদন্ড তাহলে মূর্খ লোকের প্রাধান্য কেন।
দাদুর আমার সরল উত্তর , মানুষরা অর্থের মোহে পড়ে সামাজিকতা ভুলে যাবে আর অপরদিকে শিক্ষিত মানুষরাতো ঐ গোবর- গনেশের কথা মততো চলবে নারে দাদাভাই। আর দেখবি কিছু অযোগ্য, অশিক্ষিত লোক সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিচার-সালিশ করবে, জায়গার অভাবে পথে-ঘাটে হাট- বাজার বসবে, স্ত্রীর প্রাধান্য থাকবে মায়ের আদর-কদর কমে যাবে, ভাইয়ে- ভাইয়ে দ্বন্দ্ব থাকবে, মানুস মানুষকে খুন করবে এরকম আরো কত শত ধবংশের আলামত দেখবিরে ভাই বাইচা থাকলে। দাদু আমার পৃথিবী বিয়োজন কিন্তু তার কথার বাস্তবতা পাচ্ছি । দাদু তোমার গামলার বাড়িতে আমার বাবা শ্রম দেয়, দাদু আমার পাড়ার ছিচকা চোরটা এখন বিরাট বিরাট বিচার-সালিশ করে, দাদু ঘরে ঘরে এখন জেলখানার ফাইলপত্র নাড়াচাড়া করা হয়।দাদু তোমার ভাষ্যমতে আমরা কলি যুগের গোল্ডেন এইজে আছি।
বর্তমানে আমি ঢাকায় অবস্থান করছি, জীবন-চলার পথে দাদু তোমার সব কথাগুলোর ফল পেয়েছি। দাদু তুমি স্বপ্নযুগে হলেও আমার কাছে এসে বল তোমার জগতে কেমন আছো। দাদু তোমার চলে যাওয়ার কথা মনে হলে আমার ভীষন ভয় হয়। ভয়টা দাদু স্বার্থমুখী। কারণ পৃথিবীটা অনেক সুন্দর , এখানে আমার পূর্ণ স্বাধীনতা আছে, আমি আমার মত চলতে পারি। দাদু আমার জগতের মত কি স্বাধীনতা তোমার জগতে রয়েছে , থাকলে বল আমিও হই তৈরী হতে তোমার মিছিলের যাত্রী।