শাহরিয়ার খাঁন কৌশিক ॥ চাঁদপুর
সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের পশ্চিম সকদিতে গৃহবধূকে অপহরন করে ঘরে আটকে রেখে প্রতিবন্ধির সাথে বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় শশুর বাদি হয়ে থানায় অভিযোগ দেওয়ায় পুলিশ গৃহবধুকে উদ্ধার করেছে। রবিবার বিকেলে মডেল থানার এসআই মাসুদ সামিম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে বাগাদী ইউনিয়নের পশ্চিম সকদি গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রতিবন্ধি অপুকে আটক ও গৃহবধূ পান্না বেগমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। লোমহর্সকর এ ঘটনায় গৃহবধূর পরিবার প্রতিবাদ করলে তাদের হত্যার হুমকি দিয়ে প্রতিবন্ধির বাড়িতে পান্না বেগমকে জোরপূর্বক আটকে রেখে বিয়ের কার্যক্রম শেষ করেছে। গত ১৩ তারিখ শুক্রবার দুপুরে গৃহবধূ পান্না বেগমকে বাড়িতে আটকে রেখে প্রতিবন্ধির সাথে বিয়ে দেয়। ঘটনার পর খবর পেয়ে গৃহবধূ পান্নার প্রথম স্বামী করিমের বাবা শহর আলী বাদি হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিবন্ধি অপুকে আটক ও গৃহবধূ পান্না বেগমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসার পর প্রতিবন্ধির বড় ভাই মানিক মিয়া খবর পেয়ে থানায় এসে বাদিকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এছাড়া প্রত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করায় মানিক মিয়া থানার ভিতরে এসে পূর্ব হতে থানায় উপস্থিত থাকা কয়েকজন সাংবাদিকদের উপর হঠাৎ করে চড়াও হয় এবং মারধর করার চেস্টা করে। এমনকি এ ব্যাপারে পত্রিকায় কোন সংবাদ প্রচার করলে মামলা দিয়ে হয়রানি করে অপহরন করে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। এই ঘটনার দৃশ্য ভিডিও ধারন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চাঁদপুর সদর উপজেলার ১১নং ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের পশ্চিম জাফরাবাদ এমদাদিয়া মাদ্রাসার পিছনে গফুর আলী শেখ বাড়ির আবু তাহের শেখের মেয়ে পান্না বেগমের সাথে মানিকগঞ্জ জেলার পাল্লা গ্রামের শহর আলীর ছেলে করিমের সাথে ২ বছর পূর্বে বিয়ে হয়। পশ্চিম সকদি গ্রামে প্রতিবন্ধী অপুর বাড়ির পাশে গৃহবধূ পান্না বেগমের বড় বোন সুমির শশুর বাড়ি। বোনের বাড়িতে বেড়াতে আসলে রফিকুল ইসলামের প্রতিবন্ধী ছেলে অপুর কু-নজর পড়ে তার দিকে। ১০ নভেম্বর পান্না বেগম চাঁদপুর এসে খালার বাড়ি হয়ে বোনের বাড়িতে বেড়ানোর উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে প্রতিবন্ধী অপু তার সহযোগীদের নিয়ে সিএনজি স্কুটার যোগে বাবুরহাট নিয়ে তার বন্ধুর বাড়িতে আটকে রাখে। এ খবর জানাজানি হলে প্রতিবন্ধীর বড় ভাই বাগাদি ইউনিয়নের চেয়াম্যান প্রার্থী রাজনৈতিক দলের নামধারী নেতা মানিক মিয়া বাবুরহাট থেকে গৃহবধূকে এনে তার বাড়িতে ৩ দিন যাবৎ আটকে রাখে। সেখানে রেখেই প্রতিবন্ধী ভাইয়ের আবদার রক্ষায় গৃহবধুকে জোর করে ১ম স্বামীকে তালাক দেওয়ার কাগজে স্বাক্ষর করায়।
গৃহবধু পান্না বেগম বিয়েতে রাজি না থাকলে ও তাকে জোর করে বাড়িতে আটকে রেখে বিয়ের কার্যক্রম শেষ করছে বলে তার পরিবার অভিযোগ করেছে।
এলাকাবাসীরা জানায়, পরের স্ত্রীকে বিয়ে করতে হলে ১ম স্বামীকে তালাক দেওয়ার ৩মাস পুনরায় বিয়ে করতে পারবে। তা না হলে বিয়ে বৈধ নয়, অবৈধ। ঠিক সে কাজটি পশ্চিম সকদি গ্রামের রফিকুর রহমানের ছেলে প্রতিবন্ধী তাজুল ইসলাম অপু করেছে। গৃহবধু পান্নার বড় বোন সুমিকে হুমকি দিয়ে তার ছোট বোনকে আটকে রেখে এ ঘটনা ঘটায়। সাংবাদিক আসার খবর শুনে প্রতিবন্ধীর ভাই মানিক মিয়া মুঠোফোনে ও শশরীরে এসে সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করে। এসময় তিনি বলেন,পরের বিচার আমরা করি, আমাদের বিচার কেউ করার নেই। ইউপি নির্বাচন করবো বিধায় ভাইয়ের এ খবর জানতে পেরে কাউকে না জানিয়ে মেয়েকে বাড়িতে রেখেই বিয়ে দিচ্ছি।
একিকে গৃহবধু পান্নার ১ম স্বামী করিম ও তার বাবা ঘটনা জানতে পেরে তাকে ঐ বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এ ব্যপারে এ নরপশুদের হাত থেকে গৃহবধূকে রক্ষা করতে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী।
শিরোনাম:
সোমবার , ১৯ মে, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।