মিজান লিটন
চাঁদপুরে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে নতুন কাপড় পড়ে বৈশাখের আনন্দ করা হলো না। মেহেরুন নেছা মিমের। পয়লা বৈশাখে ঘুরতে এসে ডাকাতিয়া নদীতে নৌকা ডুবে ১শিশু নদীতে নিখোঁজের ঘটনা ঘটে। ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার এলাকার পূর্ব শ্রীরামদী মতিন মোল্লা বাড়ির ইব্রাহিম খলিল হাওলাদারের বড় মেয়ে মেহেরুন নেছা মিম (৯) পরিবারের লোকজনের সাথে বৈশাখী আনন্দ করতে ডাকাতিয়া নদীতে নৌকা ভ্রমণে নামে। এ সময় তাদের ভ্রমণকৃত নৌকাটি ঢেউয়ের বাড়িতে নৌকা উল্টে নদীতে সবাই পড়ে যায়। সবাইকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও শিশু মিম নদীতে নিখোঁজ থাকে।
স্থানীয়রা জানায়, মেহেরুন নেছা মিম তার মামি ও বাড়ির অন্যান্যদের সাথে বৈশাখী আনন্দ করতে আসে। এ সময় সবাই একটি নৌকা নিয়ে নদীতে ভ্রমণ করছিল। লন্ডন ঘাট এলাকা থেকে দ্রুত গতিতে আসা একটি স্প্রিট বোর্ড তাদের ভ্রমণকৃত নৌকাটি পাাশ দিয়ে ছুটে গেলে ঢেউয়ের বাড়িতে ঐ ভ্রমণকৃত নৌকাটি নদীতে ডুবে যায়। ঐ নৌকায় প্রায় ১০-১২ জন যাত্রী ছিল। নৌকা ডুবির ঘটনা দেখতে পেয়ে অপর ভ্রমণকৃত নৌকা আরোহীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। তারা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সবাইকে উদ্ধার করতে পারলেও মিমের কোন সন্ধ্যান পায়নি। মীম পুরাণবাজার ৩নং বালক সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণীর ছাত্রী। তারা ২ বোন; এরমধ্যে মীম বড়।
স্থানীয়রা জানায়, এ নৌকাটিতে বয়স্ক লোকের তুলনায় অপ্রাপ্ত ভ্রমণকারীদের সংখ্যা ছিল বেশি। যার ফলে মীম ঐ ঢেউয়ের তোড়ে নদীতে তলিয়ে যায়।
নৌকা ডুবির খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে নৌ-ফায়ার সার্ভিসের ডুবরি ও চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নদীতে তল্লাশী করে মীমকে উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। নৌ-ফায়ার সার্ভিস গভীর রাত পর্যন্ত দুর্ঘটনাস্থলে অনুসন্ধান করে মীমের কোনো সন্ধান পায়নি। দীর্ঘ ১২ঘন্টা পর গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টায় ডাকাতিয়া নদীর ১০নং ঘাট এলাকায় বৈশাখী রঙ্গে রাঙ্গানো লাল জামা পরিহিত শিশু কন্যা মেহেরুন নেছা মিমের মৃত দেহটি পানিতে ভেঁসে উঠে। কোস্টগার্ড সদস্যরা দেখতে পেয়ে তা উদ্ধার করে। কোস্টগার্ড স্টেশনে সাংবাদিকরা মৃত মেহেরুন নেছা মিমের ছবি তুলতে গেলে তারা আইনি জটিলতা দেখিয়ে ছবি তুলতে দেয় না। এর পূর্বে কেউ কেউ মোবাইলের মাধ্যমে মীমের ছবি ধারণ করে। তা সুযোগ করে দেয় কোস্টগার্ডের কতিপয় সদস্যরা। এভাবে আইনি জটিলতা দেখিয়ে কোস্টগার্ড সদস্যরা পুলিশের কাছেও লাশ হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করে। পরবর্তীতে চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক খালেকুজ্জামান কোস্টগার্ড সাবস্টেশন থেকে নদীতে নৌকা ডুবে মেহেরুন নেছা মীমের লাশ থানায় নিয়ে যায়। পরে সূরত হাল করার পর মীমের লাশ তার পিতা ইব্রাহিম খলিল হাওলাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শিরোনাম:
সোমবার , ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২৮ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।