শাহরিয়ার খান কৌশিক ॥
চাঁদপুর বাগাদীতে এক যুবককে অর্শ্ব ও পাইলস চিকিৎসার নামে পায়ু পথে ঢুকিয়ে ভূয়া চিকিৎসা করায় সে এখন হাসপাতালে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ শহরের ঘোষ পাড়ার ভুয়া চিকিৎসক লিটন সরকারকে আটক করেছে।
আজ বুধবার রাতে মডেল থানা পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। জানা যায়, শহরের ঘোষ পাড়ার হারাধন সরকারের ছেলে ভুয়া চিকিৎসক লিটন সরকার চাদসী ক্ষত চিকিৎসালয়ের প্রতিষ্ঠানে সাইন বোর্ড সাটিয়ে হাজীগঞ্জ ও মহামায়া দুটি ফার্মেসী দিয়ে সেখানে সে দীর্ঘ ১৮ বছর টিউমার, পাইলস, পিষ্টলা, অর্শ্ব, গেজ এ সবের চিকিৎসা করে যাচ্ছিল। এছাড়া তার বাসায় দালালের মাধ্যমে রোগীদের এনে এ অপচিকিৎসা করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলেও অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। তার এ অপচিকিৎসায় অনেক লোক পায়ু পথে ক্ষত হয়ে দীর্ঘদিন কষ্ট ভোগ করার পর মৃত্যু বরণ করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। সদর উপজেলার ৮নং বাগাদী ইউনিয়নের সেলিম মাল ওরফে দুদুর ছেলে মাসুদ মাল (৩২) গত ২ মাস পূর্বে পাইলস রোগের চিকিৎসা নিতে লিটন সরকারের কাছে যায়। লিটন সরকার চিকিৎসার নামে তার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা কন্ট্রাকের মাধ্যমে তার অর্শ্ব, পাইলস ও পিষ্টুলা নির্মূল করে দিবে বলে অর্থ হাতিয়ে নেয় এবং যুবক মাসুদ মালের পায়ু পথে ভুয়া চিকিৎসক লিটনের তৈরি গাছ-গাছরা বানানো মলম লাগিয়ে ও নাইট্রিক এসিড ইনজেকশান এর মাধ্যমে দিয়ে ও গরম রড ঢুকিয়ে অপচিকিৎসা করে। এতে করে যুবক মাসুদ মালের পায়ু পথে ক্ষত হয়ে সে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে পারছিলনা ।তার পিতা সেলিম মাল তার অবস্থার অবনিত দেখে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। সেখানকার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মাসুদ মালের পায়ু পথ পরীক্ষা করে দেখতে পায় তার অর্শ্ব ও গেজ চিকিৎসার স্থানটি ইনফেকশন হয়েগেছে। তাকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার পরও বাঁচানো কঠিন হয়ে যাবে। মাসুদ মালের অভিভাবক অনেক অর্থ ব্যয় করে তাকে ঢাকায় চিকিৎসা করানোর জন্য ভর্তি করে। পরবর্তীতে ভুয়া চিকিৎসক লিটন সরকারের সাথে যোগযোগ করলে সে তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়। এতে করে মাসুদ মালের পিতা সেলিম মাল (দুদু) বাধ্য হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে মডেল থানার পুলিশ তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে এবং তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগটি ক্ষতিয়ে দেখছে। এ ব্যাপারে ঘোষ পাড়ায় ঘোষ পাড়ার ও মহামায়ার অধিবাসী ভুয়া চিকিৎসক লিটন সরকারের সাথে যোগাযোগ করলে সে জানায়, আমি দীর্ঘ ১৮ বছর যাবত এম.আর.পি সার্টিফিকেটের আলোকে এ চিকিৎসা করে যাচ্ছি। তিনি আমাকে কোন পত্রিকার পোস্ট দেননি। পোস্ট দিবেন বলে টাকা নিচ্ছে। পত্রিকার সম্পাদক জাকির হোসেন এসে আমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাবে চাঁদপুর মডেল থানা থেকে।
জানা যায়,ভুয়া চিকিৎসক লিটন সরকার ওবাসস্ট্যোন্ডে জনৈক চিকিৎসক টিভিতে এ্যাড দিয়ে ৭ দিনের চুক্তিতে পাইলস এর চিকিৎসা করে থাকে এ চিকিৎসায় তারা নাইট্রিক এসিড ইনজেকশান এর মাধ্যমে পায়ু পথে দিয়ে থাকে এ কারনে অনেক রোগীরই বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মামুনুর রশিদ জানান, বাগাদী ইউনিয় সেলিম মাল (দুদু) তার ছেলে মাসুদ মালকে অপচিকিৎসা করে পায়ু পথে গরম রড ঢুকিয়ে চিকিৎসা করায় তার অবস্থার অবনতি ঘটেছে। যার ফলে তিনি তার ছেলেকে ঢাকা চিকিৎসা করাচ্ছে। এ ব্যাপারে মডেল থানায় লিটন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। মডেল থানা বেপারটি ক্ষতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
উল্লেখ্য নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একজন চাঁদপুর ও ঢাকার একটি পত্রিকার সম্পাদক এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, লিটন সরকার তাকেও পাইলস চিকিৎসার নামে ভুয়া চিকিৎসা করায় সে দীর্ঘদিন যাবত পায়ু পথে সমস্যায় ভোগছেন। এ ভুয়া চিকিৎসকের চিকিৎসায় অনেক মানুষ মৃত্যু বরণ করেছে। তিনিও যেকোন মুহুর্তে মারা যেতে পারেন।