মিজান লিটন
চাঁদপুরের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ সোচ্চার হয়ে উঠেছেন পূর্বের স্থানে লঞ্চঘাট ফিরিয়ে আনার দাবিতে। এই দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে স্থায়ী লঞ্চঘাট স্থাপন বাস্তবায়ন পরিষদের উদ্যোগে জেলা প্রশাসক মোঃ ইসমাইল হোসেনের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। গতকাল ৮ ডিসেম্বর সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পূর্ব স্থানে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে স্থায়ী লঞ্চঘাট স্থাপন বাস্তবায়ন পরিষদ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। এ সময় পরিষদের আহ্বায়ক ফয়েজ আহম্মদ মন্টু, সদস্য সচিব মোশারফ হোসেন মানিক ও প্রধান উপদেষ্টা ও চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক সালাউদ্দিন মোঃ বাবর, ধান চাল ক্রাসার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মহব্বত চৌধুরী, পুরাণবাজার বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুনুর রশিদ, ভোজ্য তেল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাছির খান, বাস্তবায়ন পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ব্যাংকার মজিবুর রহমান, সাবেক পৌর কমিশনার ফরিদ আহমেদ বেপারী, মমতাজ উদ্দিন মন্টু, কোষাধ্যক্ষ গোপাল সাহা, সদস্য জাকির হোসেন খান শিপন, শেখ শরীফ আহমেদ, আবুল খায়ের ভুট্টু হাওলাদার, এ কে আজাদ, মোহাম্মদ আলী কুট্টি, তৈয়বুর রহমান টিপু, ডাঃ রনজিত কুমার দেবনাথ, আশীষ দেবনাথ, গৌতম কুমার সাহা, মোঃ নাছির মোল্লাসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নেতৃবৃন্দ বড় স্টেশনে পূর্বের স্থানে লঞ্চঘাটের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, কতিপয় লোক লঞ্চঘাটটিকে পূর্বের স্থানে ফিরিয়ে না আনার ব্যাপারে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। যা ইতিহাসের একটি অধ্যায়কে মুছে ফেলার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র ছাড়া অন্য কিছু নয়। ব্যবসায়িক সুবিধা সহ দক্ষিণাঞ্চলের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর যাতায়াত ব্যবস্থাসহ সকল ক্ষেত্রে যোগাযোগ ও ট্রান্সপোর্ট প্রথাকে সহজীকরণের মূল লক্ষ্য নিয়ে বড় স্টেশন সংলগ্ন ডাকাতিয়া নদীতে স্থাপন করা হয়েছিল লঞ্চঘাট, স্টিমার ঘাট ও রেল স্টেশন। এই ত্রিমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থার একটিও যদি এখান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়, তাহলে ত্রিমুখী ট্রান্সপোর্ট প্রথা শুধু ভেঙ্গেই পড়বে না, ভেঙ্গে যাবে শত বছরের চাঁদপুরের পরিচিতি এবং ধস নামবে চাঁদপুর পুরাণবাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। ভেঙ্গে পড়বে দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা। তাই ঐতিহাসিক স্থাপনা নষ্ট না করে পূর্বের স্থানে পুনরায় লঞ্চঘাট ফিরিয়ে আনার জন্যে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মন্ত্রী-এমপি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
জেলা প্রশাসক ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ লঞ্চঘাট স্থাপন বাস্তবায়ন পরিষদ নেতৃবৃন্দের বক্তব্য ধৈর্য সহকারে শোনেন এবং এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্যে মন্ত্রী মহোদয়সহ সংসদ সদস্যদের সাথে আলোচনা করবেন বলে তাদেরকে আশ্বাস প্রদান করেন এবং পূর্বের স্থানে লঞ্চঘাট ফিরিয়ে না আনার কারণ কোথায় তা জানার জন্যে চাঁদপুরের পোর্ট অফিসারকেও তলব করেন। পরে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ পুলিশ সুপার মোঃ আমির জাফরের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং পূর্বের স্থানে লঞ্চঘাট স্থাপন প্রক্রিয়া দ্রুত কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পুলিশ সুপারের সহযোগিতা কামনা করেন। পুলিশ সুপার বিষয়টি খতিয়ে দেখার বিষয়ে তাদেরকে আশ্বাস দেন। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ক্ষোভের সাথে আরো জানান, স্টীমার ও ‘বাঙালি’র মতো বড় বড় নৌযান যদি ডাকাতিয়া নদীতে প্রবেশ করতে পারে তাহলে লঞ্চঘাট স্থাপনে বাধা কোথায়।