চাঁদপুর প্রতিনিধি =
চাঁদপুর-৩ (সদর ও হাইমচর) আসনের সাংসদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, মানুষ চায় গণতন্ত্র, চায় স্বাধীনতা, চায় সমৃদ্ধি, অগ্রগতি। বর্তমান সরকার এই পাঁচ বছরে এসবের পুরোটাই করেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, তথ্য প্রযুক্তি, যোগাযোগ, বিদ্যুৎসহ সকল ক্ষেত্রে এই সরকার অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে। এসব উন্নয়ন যেমনি হয়েছে জাতীয় পর্যায়ে, তেমনি হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ে। তাই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকা মার্কায় আবার ভোট চাই। তিনি গতকাল শনিবার চাঁদপুর আউটার স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলার পেশাজীবীদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, গত সাড়ে ৪ বছরে দেশে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার নির্বাচন হয়েছে। এসব নির্বাচনে প্রায় ৬৪ হাজার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। এসব নির্বাচন নিয়ে একটি কথাও উঠেনি। অর্থাৎ আমরা মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি। শেখ হাসিনার অধীনে যে দেশে অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তা ইতোমধ্যে প্রমাণিত। তারপরও অনির্বাচিত কোনো পদ্ধতির দাবি করা অসাংবিধানিক। দেশের সর্বোচ্চ আদালত যেখানে সিদ্ধান্ত দিয়ে দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধান পরিপন্থী, তখন আর সেটি নিয়ে কথা বলার আর কোনো সুযোগ নেই। তিনি বিরোধী দলীয় নেত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে বিনয়ের সাথে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আপনি তাতে সাড়া না দিয়ে হরতাল, জ্বালাও-পোড়াও করছেন, মানুষ মারছেন। এসব করে আপনি শান্তি পান। কারণ, আপনি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন না, আর যাদেরকে সাথে নিয়েছেন তারা এই বাংলাদেশকে এখনো মেনে নিতে পারছে না। আপনারা ১৯৭১ ও ৭৫-এর খুনিদের পুরস্কৃত করছেন, দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ক্ষমতায় থাকাকালীন এই জাতিকে ভিক্ষুকের জাতি হিসেবে পরিচয় করিয়েছেন। আর শেখ হাসিনার সরকার ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত, আবার ২০০৯ থেকে বর্তমান সময় পর্যনত্দ পেছনের সকল অন্ধকার দূর করে, সকল গস্নানি মুছে ফেলে এই দেশ ও জাতিকে একটি আত্ম মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আর এতেই বিএনপি-জামাতের যত গাত্রদাহ। তিনি বলেন, যে সরকার তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিকে এত দূর এগিয়ে নিয়েছে, ধরেই নিতে হবে সে সরকার নিজেতো দুর্নীতি করেই না, দুর্নীতিকে আশ্রয় প্রশ্রয়ও দেয় না। তিনি বক্তাদের বক্তব্য উল্লেখ করে বলেন, আপনাদের মুখে চাঁদপুরের উন্নয়নের কথা বলেছেন। আপনারাই বলেছেন আপনাদের এমপিকে আপনারা দুর্নীতিমুক্ত পেয়েছেন, তার দ্বারা এই পাঁচ বছরে কেউ হয়রানির শিকার হয়নি। যদি তাই হয়, তাহলে আমি আবার ভোট চাই। নৌকার সরকার জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে। তাই আবার নৌকায় ভোট চাই। আমরা এগিয়ে যেতে চাই, সোনার বাংলা চাই। নৌকা ছাড়া অন্য কিছুতে ভোট দিলে দেশে দুঃশাসন আসবে।
মতবিনিময় সভায় সদর ও হাইমচরের প্রায় চার হাজার পেশাজীবী উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন পেশার পৰ থেকে প্রতিনিধিরা বক্তব্য প্রদানকালে চাঁদপুর-৩ নির্বাচনী এলাকায় যে রেকর্ড পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে তার সার সংক্ষেপ তুলে ধরেন। একই সাথে বর্তমান সরকার পেশাজীবীদের বিভিন্ন দাবি পূরণের মধ্য দিয়ে তাদেরকে যে মর্যাদায় আসীন করেছে তারও কিছু বর্ণনা তুলে ধরেন। তারা ডাঃ দীপু মনিরও জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে নানা সফলতা ও দক্ষতার কথা তুলে ধরেন।
স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরীর সভাপ্রধানে বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়কারী আলহাজ্ব ওচমান গণি পাটওয়ারী, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম, বিশিষ্ট চিকিৎসক ও সমাজসেবক ডাঃ এস এম সহিদ উল্লাহ, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মিহির লাল সাহা, আইনজীবীদের পক্ষে অ্যাডঃ আহছান হাবীব, চিকিৎসকদের পক্ষে জেলা বিএমএ’র সভাপতি ডাঃ হারুনুর রশিদ সাগর, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ এমজি ফারুক ভূঁইয়া, পরিবার-পরিকল্পনা বিভাগের পক্ষে ডাঃ মোঃ ইলিয়াছ, স্বাচিপ সভাপতি ডাঃ সৈয়দ এম এন হুদা, উন্নয়ন কর্মী ইফতেখারুল আলম মাসুম, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ নঈমুদ্দিন খান, বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের পক্ষে প্রধান শিক্ষক আব্বাছ উদ্দিন, ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে মোঃ কামাল পাশা, সদ্য সরকারি হওয়া রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পক্ষে আঃ হালিম মিয়া, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষে প্রধান শিক্ষক হাফেজ আহমদ ও ইসমত আরা সাফী বন্যা। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন বাবুরহাট হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যৰ মোশারেফ হোসেন, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ পীযূষ কানত্দি বড়ুয়া ও রয়মনেননেছা মহিলা কলেজের উপাধ্যৰ আফরোজা খাতুন। পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের আয়োজনে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।