শাহায়ারির খান কৌশিক ॥
মতলব উত্তর উপজেলা বালুর চর ছেঙ্গারচর বাজার এলাকায় এক প্রতারক মহিলার নাম ফাতেমা খানম লাভলী (৪৫)। বাবা ছিদ্দিকুর রহমান মাতা হোসনেআরা বেগম। তার নাম পরিচয় ও ঠিকানা গোপন রেখে ছদ্ম নাম লাবনী, শিখা ও খালা শিলিয়া বেগম কে মা, খালু নুর বক্স গাজী কে বাবা পরিচয় দিয়ে এ যাবত কালে অনেক অসহায় লোকদের প্রতারণার ফাদে ফেলে বিয়ে করে ল ল টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে।
ব্যাপক অনুন্ধানে জানা যায়, প্রতারক ফাতেমা খানম লাভলী চাঁদপুর ছেড়ে বেশ কয়েক বছর পূর্বে চট্টগ্রামে বন্দর এলাকায় তার খালুর বাড়িতে গিয়ে অবস্থান করে। খালু নুর বক্স গাজী চট্টগ্রাম বন্দরে নিরাপত্তা কর্মী চাকুরী করা অবস্থায় মারা যায় । সে সময় খালা ও খালুকে বাবা মা পরিচয় দিয়ে ভুয়া ওয়ারিশান সার্টিফিকেট উঠিয়ে খালুর চাকুরীর শেষ সম্বলের টাকা আত্মসাৎ করার জন্য আবেদন করেন। এর পূর্বে সে ১৯৯৯ সালে গার্মেন্টেসে চাকুরী করা অবস্থায় নিজের নাম লাভনী বাবার ছিদ্দিক মীর পরিচয় দিয়ে ঐ বছর ১৪ আগষ্ট তারিখে ফেনী দাগনভূইয়া গ্রামে হাফেজউল্লার ছেলে রফিকুল ইসলাম কে প্রতারণার ফাদে ফেলে বিয়ে করে। বিয়ে করার পর অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে চট্টগ্রাম বাশখালী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণির ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়ে ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে চাকুরির আবেদন করে। ফাতেমা খানম লাভলী ও তালাক পাপ্ত স্বামী রফিকুল ইসলাম কে সাথে নিয়ে চট্টগ্রামে বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া করে অপরাধের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলে। বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিতা যুবতীদের এনে তার বাসায় রেখে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের ঢেকে এনে প্রতারণার ফাদে ফেলে ল ল টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় ভাড়াটিয়া বাসা থেকে এলাকাবাসী বের করে দেয়। পরে ফেনীর ধরাপপুর ৩নং পূর্ব চন্দ্রপুর ইউনিয়ণ পরিষদ থেকে ফাতেমা খানম পিতা নূর মোহাম্মদ সরকার মাতা শিলিয়া বেগম পরিচয় দিয়ে অবিবাহিত সেজে ২০০৮ সালে ২৮শে সেপ্টেম্বর জন্ম নিবন্ধন করে। যার বহি নম্বর-১২। সে জন্ম নিবন্ধন নিয়ে একের পর এক সাধারণ মানুষদের প্রেমের ফাদে ফেলে ভুয়া বিয়ে করে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার অবৈধ বানিজ্য শুরু করে। প্রথম স্বামী রফিকুল ইসলামকে ২০১৪ সালে ৭ ডিসেম্বরে চাঁদপুর আদালতের মাধ্যমে তালাক দিয়ে চট্টগ্রামের প্রবাসীকে একই কায়দায় প্রতারণায় ফেলে বিয়ে করে। প্রতারক ফাতেমা খানক লাভলী এ প্রতারণার খর ফাঁস হয়ে যাওয়ায় সে টাকা পয়সা স্বর্ণলাংকার নিয়ে প্রবাসীর ঘর ছেড়ে পালিয়ে এসে প্রথম স্বামীকে নিয়ে পুনরায় সংসার শুরু করে। পরে এই প্রবাসী ঘটনা জানতে পেরে তাকে তালাক দেন। তালাক প্রাপ্ত প্রথম স্বামী রফিকুল ইসলাম কে নিয়ে ২০১৫ সালে ২৫শে জুলাই চাঁদপুর শহরের চেয়ারম্যানঘাটস্থ এশিয়া হোটেলের দ্বিতীয় তলায় ২নম্বর ক ভাড়া নিয়ে অবস্থান করেন। এ খবর জানতে পেরে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম রাতে এশিয়ান হোটেলে অভিযান চালায়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ঐ প্রতারক মহিলা ফাতেমা খানম লাভলী তার তালাক প্রাপ্ত স্বামীকে নিয়ে পালিয়ে যায়। প্রতারক লাভীর মা হোসনেআরা বেগম মারা যাওয়ার পর ৬ শতাংশ জায়গা নেওয়ার জন্য সে বাদী হয়ে চাঁদপুর আদালতে ঐ ভুয়া মা পরিচয়ধারী খালা শিরিয়া বেগম, সাজেদা বেগম ও মামা মাহমুদুর রহমানের নামে মামলা করে। তার মামলা নং-১০৫/২০১২ মোকদ্দমা। নাম পরিচয় গোপন রেখে এ ধরনের অনেক প্রতারণার ঘটনা ফাস করে দেয় ফাতেমা খানক লাভলীর আত্মীয়স্বজনরা। এই প্রতারক মহিলা এইভাবেই চাঁদপুর ও চট্টগ্রামে অবস্থান করে সাধারণ অনেক মানুষদের ষড়যন্ত্রের ফাদে ফেলে সর্বষ লুটে নেওয়ার গুরুত্বর অভিযোগ অনুন্ধানের মাধ্যমে জানা গেছে।