মিজান লিটন
কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না চাঁদপুর মেঘনা অঞ্চল থেকে বালু উত্তোলন। বৈধ-অবৈধ কে কীভাবে বালু কাটছে, বালু কাটার স্থান, পরিমাণ, রাজস্ব আদায় হচ্ছে কিনা এসবের কোনো কিছুরই তোয়াক্কা নেই। কোনো নিয়ম-নীতির বালাই নেই। প্রশাসনেরও নেই কোনো তদারকি। মেঘনায় চাঁদপুর এলাকায় বালু দস্যুতায় শ’ শ’ কোটি টাকা চলে যাচ্ছে ব্যক্তির পকেটে। রাতারাতি বনে যাচ্ছে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ। এসব দেখার যেনো কেউ নেই। প্রশাসন যেনো অসহায়। মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীর কড়া নির্দেশ যারা মেঘনায় অবৈধভাবে বালু কাটছে তাদের শক্ত হাতে দমন করার।
গত ১৩ জুন শুক্রবার বিকেলে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা আইন-শৃঙ্খলা সমন্বয় কমিটির মাসিক সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম এমপি প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য ওই কড়া নির্দেশ প্রদান করেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন নদ-নদী থেকে বালু উত্তোলনের জন্য সরকার স্ব-স্ব জেলা প্রশাসকের অধীন রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে নির্দিষ্ট এলাকায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ বালু কাটার জন্য বালু মহাল ইজারা দিয়ে থাকে। সরকারের এ খাতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় হয়। কিন্তু উল্টোটা দেখা যাচ্ছে চাঁদপুরে। এখানে দিনের পরদিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর এমন কি যুগও চলে যাচ্ছে মেঘনায় বালু দস্যুতা চলছে তো চলছেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা প্রশাসনের রাজস্ব বিভাগ থেকে এ যাবৎ বালু মহাল ইজারা প্রদান করা হয়নি। অথচ বালু কেটে প্রাকৃতিক সম্পদ লুটে নেয়া হচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, হাইমচর উপজেলার কাটাখালী, সদরের হরিণা, সাখুয়া, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মোলহেডের পশ্চিম-উত্তর দিকে, মতলব উত্তর উপজেলার এখলাশপুর ও ষাটনল এলাকায় বালু কাটা হচ্ছে। ছোট বড় মিলিয়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫টি ড্রেজার বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। উচ্চ আদালতের রিট আছে, মহামান্য হাইকোর্টের অনুমোদিত, এসব বলে চাঁদপুরের নদ-নদীর প্রাকৃতিক সম্পদ বালু দস্যুরা লুটে নিচ্ছে। বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রশাসন বা সরকারকে এ অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধে বা সরকারের রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। সরকার দলের নাম ভাঙ্গিয়ে এ বালু কেটে ব্যক্তিবিশেষ গাড়ি বাড়িসহ বিপুল সম্পদের মালিক হয়ে গেছেন। বিগত বিএনপি সরকারের সময়ও বিএনপির কতিপয় নেতা বালু দস্যুতার সাথে জড়িত ছিলেন। সরকার আসে সরকার যায়, চাঁদপুরের বালু দস্যুতা বন্ধ হয় না। সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ব্যক্তির পকেটে চলে যাচ্ছে। একটি সূত্র জানায়, চাঁদপুরে বালু উত্তোলনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে কোনো বালু মহাল ইজারা দেয়া হয়নি। জনমনে প্রশ্ন- তাহলে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি না থাকলে মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলন তারা কীভাবে করছে। চাঁদপুরবাসী যে কোনো মূল্যে চাঁদপুরের নদী সীমায় অবৈধ বালু কাটা বন্ধ দেখতে চায়। তারা মন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন দেখতে চায়।