ফাহিম শাহরিণ কৌশিক খান
চাঁদপুর শহরের ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে ডক ইয়ার্ডগুলোতে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ ও ঝুঁকিপূর্ণ তার ব্যবহারের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এ সব দুর্ঘটনায় নির্মাণ শ্রমিক ও ওয়ার্কশপের কর্মচারীরা হতাহত হচ্ছে। জানা যায়, ডাকাতিয়া পাড়ের জাহাজ নির্মাণ ও ইঞ্জিনের মেশিনারি কাজের ডক ইয়ার্ডগুলোতে প্রতিষ্ঠার পর থেকে কোন ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালিত না হওয়ায় মালিক পক্ষ তাদের ইচ্ছামতো চালিয়ে যাচ্ছে বিদ্যুতের বৈধ- অবৈধ সংযোগ ব্যবহার করছে। সরজমিন প্রতিবেদনে গিয়ে দেখাযায়, শ্রমিকরা তাদের কাজে ব্যস্ত। প্রায় প্রতিটি ডক ইয়ার্ডের বিদ্যুতের উচ্চ ভোল্টেজের বৈদ্যুতিক তার অনায়াসে খোলা পরে আছে, বেশিরভাগ বিদ্যুত ওয়েডিং মেশিনের উপর নিরাপত্তা বেষ্টনি নেই, যেসব তারের মধ্যে দিয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতের সংযোগ লাইন নেওয়া হয়েছে সেইসব তারের অনেক স্থানে জোড়া লাগানো, শ্রমিকদের নেই কোন নিরাপত্তা পোষাক, সরকারের চোখ ফাঁকি দিয়ে অনেকে চালাচ্ছে অবৈধ বিদ্যুত। সব মিলিয়ে পুরো ডক ইয়ার্ড এলাকাই চলছে ডক মালিকদের একচ্ছত্র দাপটে। তারা প্রশাসনের কাউকে তোয়াক্কা না করে ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে কয়েকজন ডক মালিকদের ওয়ার্কশপে প্রবেশ করে দেখা যায় তাদের বিদ্যুতের প্রধান বোর্ডের উপরে কোন রকম ঢাকনা নেই, বোর্ড থেকে সরাসরি যেখানে বিদ্যুত নেওয়া হয়েছে সেখানেও রয়েছে খোলা সংযোগ। এছাড়াও অনেক মালিক পক্ষ জানেইনা ভ্রাম্যমান আদালত কি? কতিপয় শ্রমিকদের সাথে এলো মেলো পরে থাকা বিদ্যুতের তারে কথা জানতে চাইলে তারা জানায়, মালিককে অনেকবার ছেড়া তার ঠিক করে কাজ করার জন্য বলা হলেও মালিক পক্ষ তা কোনরকম কর্নপাত করেননি। ডক ইয়ার্ড গুলোতে প্রতিদিনই ছোটখাট দূঘর্টনাসহ ঘটছে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এ বছর নাছিরের ওয়ার্কশপে একই মাসে পরপর দু‘জন শ্রমিক বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে নির্মম ভাবে মৃত্যু বরণ করে। সেইসব শ্রমিকদের পরিবারের সাথে কোনরকম যৎসামান্য অর্থের বিনিময়ে রফদফা করেই মালিক পক্ষের শেষ।
একটি সূত্র জানায়, ৫নং ঘাট শাহপরান ওয়ার্কশপে রাতে আঁধারে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে অন্ধকারচ্ছন্ন জায়গায় শ্রমিকরা ও হেড মিস্ত্রী স্টিল বডি ট্রলারের ওয়েডিং মেশিন দিয়ে কাজ করে। এই শাহপরান ওয়ার্কশপের মালিক নাছির বিভিন্ন এলাকা থেকে চোরাই জাহাজ এনে রাতের আঁধের কেটে ফেলে। পরে সেই চোরাই লোহার প্লেট দিয়ে পুনরায় নতুন করে স্টিলবডি ট্রলার তৈরি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এছাড়া পুরাণবাজার চড়ে রয়েছে আরেকটি ডক ইয়ার্ড। সেখানেও এভাবে চোরা স্টীল বডি বোট ফেলা হয়। বিআইডব্লিউটিএ বেশ কয়েকটি পল্টন তারা রাতে নদীর পাড় থেকে কেটে নিয়ে গেছে। এই চুরির ঘটনায় এই সংঘবদ্ধ চোরচক্ররা বেশ কয়েকটি মামলার আসামী হলেও তারা ধরা ছোয়ার বাইরে থাকায় দিন দিন চুরির প্রবণতা বেড়েই চলছে। এই চোরাই স্টীল বডি বোট তড়িঘড়ি করে কাঁটতে গিয়ে নাছিরের এই শাহপরান ওয়ার্কশপে হেড মিস্ত্রীসহ ২জন বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। চুরির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য নাছির মোটা অঙ্কে টাকার বিনিময়ে মৃত পরিবারের লোকদের ম্যানেজ করে দ্রুত সমাধান করে।
শ্রমিকরা মনে করেন, শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং সরকারের বিদ্যুতের সঠিক ব্যবহারের স্বার্থে মালিক পক্ষকেও সচেতন হওয়া প্রয়োজন । এ বিষয়ে উর্ধতন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ জরুরী বলে মনে সচেতন মহল
শিরোনাম:
রবিবার , ৯ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২৫ কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।
