স্টাফ রিপোর্টার ঃ চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের শাহ্তলী জিলানী চিশতী উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় ও চাঁদপুর জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে গ্রামীন জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন প্রচার কার্যক্রম শক্তিশালীকরন প্রকল্পের অধীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক, প্রতিরোধ বিষয়ে মহিলা সমাবেশ ও চলচ্চিত্র প্রদর্শন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল ২৬ জানুয়ারী (রবিবার) সকাল ১১টায় জিলানী চিশতী কলেজ মিলনায়তনে জিলানী চিশতী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও দৈনিক চাঁদপুর খবর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক সোহেল রুশদীর সভাপ্রধানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর জেলার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান।
প্রধান অতিথি চাঁদপুর জেলার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান তার বক্তব্যে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে ১০টি উদ্যোগ গ্রহন করেছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। ২০৪১সালের মধ্যে আমাদের দেশটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিনত হবে। পদ্মাসেতুর প্রকল্পসহ বড় বড় মেঘা প্রকল্প আজ বাস্তবায়িত হচ্ছে। সন্তানের উন্নতিতে বাবার চেয়ে মায়ের অবদান বেশি।
তিনি বলেন, আপনারা সন্তানদের সাথে শাসন ও সৌহার্দ্য দুয়ের সমন্বয় গড়তে হবে। মোবাইল ফোনের কারনে আজ কিশোর-কিশোরীরা ঘর থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতে হবে। বর্তমান যুগ প্রতিযোগিতার যুগ। এই প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে সন্তানদের পড়ালেখার পাশাপাশি আদর্শ ও নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে। ছোটবেলা থেকেই ভালো অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান পরিবার এবং সেরা শিক্ষক হলেন মা। সোনার বাংলা গড়ার জন্য সোনার মানুষ গড়তে হবে।
চাঁদপুর জেলা তথ্য অফিসের সহকারি তথ্য অফিসার মো: দেলোয়ার হোসেনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জনপ্রশাসন পদকপ্রাপ্ত চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানিজ ফাতেমা।
বিশেষ অতিথি জনপ্রশাসন পদকপ্রাপ্ত চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানিজ ফাতেমা তার বক্তব্যে বলেন, কন্যা সন্তান, এমনকি শিশু সন্তানরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আপনারা খোঁজ নিবেন আপনার সন্তানরা যেখানেই যায় তারা নিরাপদ কিনা। আপনারা যারা মা আছেন শাসন করবেন, কিন্তু শাসনের সাথে সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়তে হবে। আমরা আমাদের সন্তানদের সুন্দর দেখতে চাই। বিশজন মা একত্রে হয়ে যদি বলেন আমরা নিজেরা স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য ঋন চাই। আমরা স্বাবলম্বী হতে চাই। ঘরে বসেও ইনকাম করা যায়। কোন মেয়েকে বাল্যবিবাহ দেওয়া যাবেনা।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন অনেক এগিয়ে। আপনার কন্যা সন্তানকে আপনি পড়ানোর ইচ্ছা পোষন করলে, সরকারও সহযোগিতা করবে। বর্তমানে সরকার প্রাথমিকে শতভাগ উপবৃত্তি দিচ্ছে। মায়েরা যদি সচেতন হন, তাহলে বাল্যবিবাহ রোধ করা যাবে। সন্তানের পড়া-লেখায় চাপাচাপি করা যাবেনা। যারা যে কাজে ভালো তাদের তাই শিখতে দিতে হবে। এই কলেজে আধুনিক একটি একাডেমিক ভবন এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই করে দিয়েছেন। আমাদের চাঁদপুরের রতœ মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনির আন্তরিক সহযোগিতায় এই ভবনগুলো হয়েছে। শিক্ষার্থীরা শিক্ষক ও বাবা-মায়েদের সম্মান করতে হবে। বেশি বেশি বই পড়ার অভ্যাস করতে হবে। বই পড়লে অনেক কিছু জানা যায়। এই প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক সুন্দর। এখানে শিক্ষার্থীরা খুবই ভালো। যার পরিশ্রমে এই প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে যাচ্ছে তিনি এই কলেজ গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান সোহেল রুশদী। আমাদের সকলকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অন্তরে ধারন করতে হবে। এই আদর্শ অন্যদের মাঝেও ছড়িয়ে দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য রাখেন, শাহতলী জিলানী চিশতী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও দৈনিক চাঁদপুর খবর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক সোহেল রুশদী।
অনুষ্ঠানে সভাপতির ও শাহতলী জিলানী চিশতী কলেজ গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান ও দৈনিক চাঁদপুর খবর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক সোহেল রুশদী তার বক্তব্যে বলেন, আমি প্রথমেই মুজিব বর্ষের শুভেচ্ছা জানাই। আজকে যে সকল মায়েরা উপস্থিত হয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের ছোয়া প্রত্যন্ত অঞ্চলে চলে এসেছে। স্বাধীনতার পূর্বে এত উন্নয়নের ছোয়া এলাকায় হয়নি যা এখন হয়েছে। আমাদের গর্বের বিষয় আমাদের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনির বদোন্যতায় আমরা সকল প্রতিষ্ঠানে চার তলা একাডেমিক ভবন পেয়েছি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আমরা শতভাগ উপবৃত্তি পাচ্ছি। এতে ঝড়ে পড়া রোধ হয়েছে। বিনামূল্যে পাঠ্যবই দিচ্ছে। এগুলো সবই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান।
তিনি বলেন, এই কলেজটি চাঁদপুর সদর উপজেলার প্রথম কলেজ। কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৭০সালে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অর্জনগুলো ঘরে ঘরে পৌছে দিতে হবে। সরকার দেশটি ২০৪১সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে পরিনত করার লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। একটি প্রবাদ আছে, তোমরা আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের শিক্ষিত জাতি দিব। আপনাদের সন্তানদের বাল্য-বিবাহ, মাদক, গুজব ইত্যাদি থেকে দূরে রাখতে হবে। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি গত ১বছরে শিক্ষাক্ষেত্রে দেশে সব্বোর্চ অর্জন এনে দিয়েছেন। আপনাদের সমস্যাগুলো সাথে সাথে শিক্ষকদের ও আমাদের জানাবেন। এই প্রতিষ্ঠানগুলো আপনাদের সন্তানদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ। আমরা এবং প্রশাসন সব-সময় আপনাদের পাশে থাকবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি গোলাম কিবরিয়া জীবন, শাহতলী কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন, জিলানী চিশতী কলেজের অধ্যক্ষ মো: হারুন-অর রশিদ, ২৯নং উত্তর শাহতলী যোবাইদা বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আবুল কালাম আজাদ,৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের মহিলা মেম্বার মিসেস ফিরোজা বেগম।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর জেলা তথ্য অফিসার মো: নুরুল হক ও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, জিলানী চিশতী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নেপাল চন্দ্র কর্মকার।
এসময় মহিলা সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জিলানী চিশতী কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের সহকারি অধ্যাপক সাহেরা আক্তার, ভূগোল বিষয়ের সহকারি অধ্যাপক ও গভর্নিং বডির শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য মো: গোলাম সারওয়ার, যুক্তিবিদ্যা বিষয়ের সহকারি অধ্যাপক সামিমা আক্তার, সমাজকর্ম বিষয়ের প্রভাষক ও গভর্নিং বডির শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য মো: নুরুল বাতেন, প্রভাষক মাওলানা ছোহাইল আহমাদ চিশতী, প্রভাষক ও গভর্নিং বডির মহিলা শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য নুরুন্নাহার বেগম মুক্তা, প্রদর্শক মো: মুঞ্জুর হোসেন পাটওয়ারী, প্রভাষক ফারজানা আক্তার, প্রভাষক মো: জিয়াউর রহমান, প্রভাষক মো: হানিফ মিয়া, প্রভাষক মো: জহিরুল ইসলাম খান মুরাদ, প্রভাষক মো: মানিক মিয়া, প্রভাষক মো: হাবিবুর রহমানপ্রভাষক মো: মাহবুবুর রহমান, প্রভাষক মো: শাহাদাৎ হোসেন, জিলানী চিশতী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহাকারি প্রধান শিক্ষক মো: শাহাদাৎ হোসেন, সিনিয়র শিক্ষক মো: রফিকুল ইসলাম তালুকদার, সিনিয়র শিক্ষিকা ফাহিমা জাহান, সহকারি শিক্ষিকা রাবেয়া বেগম, সহকারি শিক্ষক মো: লুৎফুর রহমান, সহকারি শিক্ষক বিপুল চন্দ্র নন্দী, সহকারি শিক্ষক মো: ফজলুল করিম খান, সহকারি শিক্ষক মো: সাইফুল ইসলাম, সহকারি লাইব্রেরীয়ান মো: রবিউল আওয়াল খান, অভিভাবক ফিরোজা বেগম, মুন্নি বেগম, রোকেয়া বেগম, তাহমিনা বেগম, রুমা আক্তার, জেসমিন বেগম, রুপালী আক্তার, আছমা বেগম, রুজিনা বেগম, শাহনাজ বেগম, জাহানারা বেগম, ছাবিকুর নাহার, কুহিনুর বেগম, ইসরাত জাহান, হামিদা বেগম, ছালেহা আক্তার, রিয়া বেগম, পিয়ারা বেগম, রাহিমা বেগম, হালিমা আক্তার, ছালমা আক্তার, শাহানারা বেগম, ফুলমতি, পারভীন আক্তার, শাহিনা আক্তার, জাহানারা বেগম, হাছিনা বেগম, মল্লিকা, কোহিনুর বেগম, মরিয়ম বেগম, মারজানা আক্তার, আছমা আলম, তাহমিনা বেগম, মনোয়ারা বেগম, জাহানারা বেগম, নাজমা বেগম, আমেনা বেগম, হাফছা বেগম, আয়শা আক্তার, লাখী বেগমসহ অন্যান্যরা।
আলোচনা সভার পূর্বে চাঁদপুর জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে মায়েদের বাল্য-বিবাহ প্রতিরোধ, মাদক, সন্ত্রাস ইত্যাদি বিষয়ে প্রজেক্টটরের মাধ্যম্যে চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন জিলানী চিশতী উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা শহিদুল ইসলাম।