ফরিদগঞ্জের কলাবাগান মার্কেটের ব্যবসায়ীদের অপরাধ কি ?ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগে মালিকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও স্বারকলিপি প্রেরন
শিমুল হাছান ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি :
দুই মাসের অগ্রিম ভাড়া প্রদানে বিলম্ব হওয়ায় ফরিদগঞ্জের কলাবাগান মার্কেটের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী গ্রামীণ বস্ত্রালয়ের মালিককে মারধর করেছে মার্কেট কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (২৪ জুলাই ২০২০ খ্রিঃ) বিকেলে ফরিদগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী কার্যালয়ের সন্মুখে বাজার ব্যবসায়ীদের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন মারধরের শিকার ব্যবসায়ী আবুল হোসেন জহির।
নিয়মিত দোকানের অগ্রীম ভাড়া পরিশোধ করা সত্বেয় ভাড়া আদায় নিয়ে একের পর এক ব্যবসায়ীকে নাজেহাল ও মারধরের বিষয়টি নিয়ে ফরিদগঞ্জের ব্যবসায়ী প্রশ্ন তুলে বলছে কলাবাগান মার্কেটের ব্যবসায়ীদের কি এমন অপরাধ যে বার বার উক্ত মার্কেটের মালিকের হাতে ব্যবসায়ীরা লাঞ্চিত হতে হচ্ছে ?
লিখিত বক্তব্যে জহির বলেন, আমি ১০ লক্ষ টাকা অগ্রিম প্রদান করে মাসিক ১০ হাজার টাকা ভাড়ায় বিগত ১৪ বছর ধরে কলাবাগান মার্কেটে ব্যবসা করে আসছি। গত ৩ জুলাই শুক্রবার মার্কেট কর্তৃপক্ষ আমাকে দুই মাসের ভাড়া অগ্রীম প্রদান করতে ২০ জুলাই পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে নোটিশ প্রদান করে। আমি ২১ জুলাই অগ্রিম টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেই। ২১ তারিখে মালিক পক্ষের ফরিদ আহমেদ রিপন আমার কাছ থেকে টাকা নিতে আসেন। দোকানে ক্রেতা থাকায় টাকা প্রদানে সামান্য বিলম্বের ইচ্ছা প্রকাশ করলে তিনি আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করেন। এক পর্যায়ে পাশ^বর্তী দোকান থেকে গজ (কাপড় পরিমাপের দন্ড) নিয়ে আমাকে বেদম প্রহার করেন।
মৌখিক বক্তব্যে জহির আরো বলেন, মালিক পক্ষের অপর একজন মিলন হোসেনকে ঘটনার বিষয় অবহিত করতে গেলে তিনিও আমাকে কলার চেপে মারধর করেন। মালিক পক্ষের আরো একজন নুরুন্নবী নোমানকে অবহিত করলে তিনি আমাকে বলেন এই মার্কেটে মার খেয়ে ব্যবসা করতে পারলে করো, না হয় দোকান ছেড়ে দাও।
জহির আরো বলেন, মার্কেটের মালিক পক্ষ আমাকে দোকানের তিন বছর মেয়াদী চুক্তি নামা প্রদান করেছেন। চুক্তি নামার মেয়াদ এক বছর বা তার বেশী সময় থাকতেই চুক্তি ভঙ্গ করে মালিক পক্ষ আমার কাছ থেকে তিন বার অগ্রিম (এ্যাডভান্স) টাকা নিয়েছেন। শুধু তাই নয় কলাবাগান মার্কেটের তৃতীয় তলায় একটি টর্চার সেল আছে দাবী করে ক্ষুদ্ধ ব্যবসায়ীরা আরো বলেন, এই মার্কেট থেকে যে সকল ব্যবসায়ী ব্যবসা গুটিয়ে চলে গেছেন তাদের অনেকের অগ্রিম টাকাও মালিক পক্ষ পরিশোধ করেননি ।
একই সংবাদ সম্মেলনে উক্ত মার্কেটের অপর ব্যবসায়ী মোবাইল বাজারের স্বত্তাধিকারী সৌরভ হোসেন পাটওয়ারী বলেন, ফরিদ আহমেদ রিপন গত কয়েক মাস পূর্বে আমাকে ঝাড়– পেটা করেন। এ সময় তিনি আরো এই মার্কেটের একাদিক ব্যবসায়ী তাদের হাতে প্রায় প্রতিনিয়ত লাঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেন।
ফরিদগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির আহবায়ক ওহিদুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, করোণাকালে প্রধানমন্ত্রী ভাড়াটিয়াদের প্রতি সহনশীল আচরনের আহবান জানালেও কলাবাগান কর্তৃপক্ষ সে আহবানের প্রতি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছে। ভাড়া মওকুফ দূরে থাকুক উল্টো অগ্রীম টাকা প্রদানে কয়েক মিনিট সময় বিলম্বের অযুহাতে তারা ব্যবসায়ীকে মারধর করেছে। অতীতেও এ মার্কেটের অনেক ব্যবসায়ী মারধরের শিকার হয়েছেন এবং অনেকেই দোকান ছেড়ে গেলেও তারা তাদের অগ্রীম প্রদানকৃত টাকা ফেরত পাননি বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। কলাবাগান পরিবারের এ অনিয়মের বিরুদ্ধে যথাযথ ভূমিকা নিতে সরকারের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এ সময় ফরিদগঞ্জ বাজার শতাদিক ব্যবসায়ীগণ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
উলেখ্য সংবাদ সন্মেলরে আগে কলাবাগান মার্কেটর মালিকদের অসদআচরনের বিচার চেয়ে বাজারের ৪৯২ জন ব্যবসায়ীর সাক্ষরিত স্বারকলিপি প্রদান করেন স্থানীয় এমপি, পুলিশ সুপার চাঁদপুর , উপজেলা চেয়ারম্যন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌর মেয়র, অফিসার ইনচার্জ ফরিদগঞ্জ বরাবর।
ওই সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে বক্তব্য রাখেন, ফরিদগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী কমিটির আহবায়ক অহিদুর রহমান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, ও যুবলীগ নেতা গাফপার হোসেন সজিব, ফরিদগঞ্জ বাজারের প্রতিষ্ঠিত ফার্মেসীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ সবুজ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লব- এর সভাপতি মো.কামরুজ্জামান, সাধারন সম্পাদক আব্দুস ছোবহান লিঠন ও প্রেসক্লাব ফরিদগঞ্জের সভাপতি এমকে মানিক পাঠান, সাধান সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বেলালসহ ফরিদগঞ্জে কর্মরত বিভিন্ন প্্িরন্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়ার একদল সাংবাদিক সহ বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাপশন : সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছেন মারধরের শিকার ব্যবসায়ী আবুল হোসেন জহির।