আতাউর রহমান সোহাগ—-
আর্সেনিক মুক্ত বিশুদ্ধ পানি পান করতে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হত দরীদ্র ও বঞ্চিত এলাকার জনসাধারনের জন্য সরকারী ভাবে বরাদ্দ হওয়া ১৪৫টি ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন নিয়ে রমরমা বানিজ্যের গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় থেকে জৈনিক ঠিকাদার হান্নান তার বিশেষ তদবিরের জোরে বিশেষ বরাদ্দের নামে প্রায় কোটি টাকার ডিপ টিউবওয়েল বরাদ্দ করতে সক্ষম হয়েছে বলে তিনি দাবী করছে।
এদিকে ওইসব টিউবওয়েল পেতে ব্যাপক হারে অর্থ আদায়ের মাধ্যমে সেগুলো স্থাপনে রমরমা বানিজ্যে অনিয়মের অভিযোগে উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার জৈনিক ঠিকাদারের বিল আটকে রেখেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
উপজেলা জনস্বার্থ অফিস সুত্রে জানা গেছে ২০১৩ -১৪ অর্থ বছরে ফরিদগঞ্জের ১৫টি ইউনিয়নের মানুষের জন্য মোট ১৪৫টি আর্সেনিক মুক্ত পানি পেতে গভীর নলকুপের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি গভীর নলকুপের জন্য সরকারী ভাবে ব্যায় নির্ধারন করা হয়েছে ৫৯ হাজার টাকা। আবার এসব গভীর নলকুপ গুলো পাবে হতদরীদ্র ও আর্সেনিক মুক্ত পানি সংগ্রহে বঞ্চিত এলাকার লোকজন। এই নলক’প গুলো স্থাপনের জন্য জৈনিক ঠিকাদার হান্নানের ল্যান্ডপল কনস্ট্রেকশন পেয়েছে ৯০টি, ওমর ফারুকের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পেয়েছে ৩০টি ও হোসেন এন্টারপ্রাইজ নামে এক প্রতিষ্ঠান পেয়েছে ২৫টি গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ। ইতিমধ্যে ওইসব টিউবওয়েল স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবী করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
জনস্বাস্থ্যর্ বিভাগের একটি সুত্র জানিয়েছে, প্রাপ্ত এসব টিউবওয়েল গুলোর মধ্যে ১৫ ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানের নামে মাত্র ৪টি, স্বয়ং ঠিকাদার হান্নানের নামে ৩০টি, আ্ওয়ামীলীগের নামে ৩০টি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের নামে ১৪টি,ও ইউএনও এর নামে ১১টি ডিপ টিউবওয়েল স্থানীয় ভাবে ভাগ বাটোয়ারার মাধ্যমে তা স্থাপন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, ওই সব ডিপ টিউবওয়েল পেতে জৈনিক ঠিকাদার হান্নান কিছু লোক ম্যানেজ করে কৌশলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে রমরমা বানিজ্য করেছে। শুধু তাই নয় তার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে পাওয়া ৯০টি ডিপ টিউবওয়েল স্থাপনে দায়সারা ভাবে নি¤œ মানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করা হয়েছে। এসব অভিযোগ পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার ঠিকাদার হানাœানের প্রায় ৩০ লাখ টাকার বিল আটক রেখেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছ্ ে।
বিভিন্ন এলাকার কয়জন জনপ্রতিনিধি জানায়, স্থাপন করা ওইসব ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন করতে গিয়ে বিভিন্ন উপকার ভোগীদের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা থেকে শুর করে বিভিন্ন অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় নি¤œ মানের সামগ্রী দিয়ে দায়সারা ভাবে এসব টিউবওয়েলের কাজ করা হলেও কোনটার এখনও মাথা নেই কিংবা টিউবওয়েলের নিচের অংশ পাকা করা ছাড়াই এখন সরকারী বিল ভাউচার তুলতে ব্যস্থ হয়ে পড়েছে ঠিকাদার।
তবে অভিযুক্ত ঠিকাদার হান্নান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয় দাবী করে জানায়, ফান্ড না থাকায় বিল পাচ্ছি না। আমি ফরিদগঞ্জের মানুষের জন্য বিভিন্ন তদবির করে এসব টিউবওয়েল বরাদ্দ এনেছি। সততার মধ্যে থেকে কাজ করেছি। এখন কি কারনে বা কি উদ্দেশ্য উপজেলা চেয়ারম্যান আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করছে তা আমার বোধগম্য নয়।
এ ব্যাপারে জনস্বার্থ বিভাগের ফরিদগঞ্জের প্রকৌশলী ওয়াহিদুর রহমান জানায়,হতদরীদ্র ও বঞ্চিত এলাকার জনসাধারনের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের অর্থায়ানে বিশেষ বরাদ্দের নামে মোট ১৪৫টি গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার গতকাল সোমবার তার কার্যালয়ে এক আলাপে এ প্রতিনিধিকে বলেন, বিভিন্ন এলাকায় আর্সেনিক মুক্ত পানি পেতে সরকারের বরাদ্দ করা ১৪৫টি ডিপ টিউবওয়েল স্থাপনের ব্যাপারে ব্যাপক হারে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থাপন করা বেশ কিছু টিউবওয়েলের পুরোপুরি কাজ এখনো সম্পন্ন না করা ছাড়া যে কারনে বাধ্য হয়ে জৈনিক ঠিকাদার হান্নানের বিল আটক করা হয়েছে।
শিরোনাম:
বুধবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৭ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।