ফরিদগঞ্জে আয়েশা বেগম (২০) নামে তিনমাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহননের ঘটনায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার রাতে উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ বুধবার রাতে লাশ উদ্ধার করে বৃহস্পতিবার সকালে পোস্টমর্টেমের জন্য চাঁদপুর প্রেরণ করেছে। এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হলেও ওই গৃহবধূর পিতা জামাতা জসিম উদ্দিনসহ ৪জনকে আসামী করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রামের জসিম উদ্দিনের সাথে পাশর্^বর্তী ইউনিয়ন পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের বিষেরবন্দ গ্রামের আঃ রাজ্জাক পাটওয়ারীর ছোট মেয়ে আয়েশা বেগমের ৬ মাস পূর্বে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর বিয়ে হয়। আয়েশা তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
আয়েশার পিতা আঃ রাজ্জাক জানান, বিয়ের সময় তার স্বামীকে স্বর্ণালঙ্কার ছাড়াও নগদ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করি। কিন্তু সেই টাকার পর আবারো সে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে এবং তার মেয়েকে মানসিক নির্যাতন করে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে ৫০ হাজার টাকা দেয়ার কিছুদিন পর আবারো জসিম টাকা দাবি করে। তারা আমার মেয়েকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে। বুধবার রাতে সেই বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে আমার মেয়ে আয়েশা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানানো হয়। যা আমার কাছে বিশ^াসযোগ্য নয়। কোনো কারণ ছাড়া সে কেনো আত্মহনন করবে?
আয়েশার বোন রুনা জানান, তার ছোট বোন আয়েশা নামাজী। সে আত্মহননকে ভয় পায়। তাছাড়া সে অন্তঃসত্ত্বা। এই অবস্থায় তাকে মেরে ঝুলিয়ে দেয়া বা আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা ছাড়া আর কোনো কারণ থাকতে পারে না।
এ ব্যাপারে আয়েশার স্বামী স্কীম ম্যানেজার জসিম উদ্দিন জানান, বুধবার সন্ধ্যায় স্বামী-স্ত্রী উভয়ই একত্রে মাগরিবের নামাজ পড়ার পর নাস্তা করেন। পরে তিনি কৃষি জমিতে পানি দিয়ে কাজ শেষ করে রাত ৯টায় বাড়ি ফিরে ঘরের দরজায় এসে ‘আয়েশা আয়েশা’ বলে ডাকেন। দরজা খুলছে না বলে দরজা ধাক্কা দেন। তারপরও দরজা খুলছে না বলে তিনি অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে দরজায় লাথি মেরে দেখেন, তার স্ত্রী আয়েশা ঘরের আড়ার সাথে ঝুলে আছে। তিনি চিৎকার দিয়ে উঠেন। এই সময় তার মা সহ বাড়ির অন্য লোকজন এসে ঘর থেকে দা দিয়ে ফাঁসির ওড়না কেটে দেন।
এ ব্যাপারে লাশ উদ্ধারকারী ফরিদগঞ্জ থানার এসআই জালাল জানান, সংবাদ পেয়ে লাশ উদ্ধার করে পোস্ট মর্টেমের জন্যে চাঁদপুর প্রেরণ করেছি। অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়া আয়েশার বাবা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসলে প্রকৃত সত্য জানা যাবে।