মাত্র ১৭ দিন পূর্বে বাবার মৃত্যু হয়েছে। বাবা জীবিত থাকতে বোনের জামাইয়ের আবদার মিটাতে দিয়েছেন টাকা। সেই টাকায় বিদেশও গিয়েছে। কিন্তু নির্যাতন থামেনি। নির্যাতনের বিষয়ে এলাকা ও থানায়ও বহুবার সালিসি বৈঠক হয়েছে। কিন্তু চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী। প্রতিবারই সালিসি বৈঠকে ক্ষমা চেয়ে স্ত্রীকে ঘরে তুলে নিতেন। কিন্তু ক’দিন পরই আবারো আগের অবস্থায় শুরু হতো নির্যাতন। বাবা জীবিত থাকলেও স্বামীর আবদার মেটাতে আবারো টাকা দিতেন। কিন্তু বাবা নেই, তাই হয়ত নির্যাতন সইতে সইতে বোনটি নিজেই গলায় ফাঁস দিয়েছে। নচেৎ বোন জামাই নিজেই মেরে লাশ ঝুলিয়ে দিয়েছে। এভাবেই বর্ণনা দিলেন বোন কাজল বেগমের নিষ্প্রাণ দেহের সামনে দাঁড়িয়ে ছোট বোন রেখা আক্তার।
এর আগে রোববার দুপুরে থানা পুলিশ রূপসা উত্তর ইউনিয়নের বদিউজ্জামানপুর রাঢ়ী বাড়ি থেকে কাজল বেগম (২৩) নামে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী মামুন হোসেনকে আটক করে নিয়ে আসে পুলিশ।
জানা গেছে, ১০ বছর পূর্বে উপজেলার ১১ নং চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়নের আলোনিয়া গ্রামের সদ্য মৃত শাহজাহান মৃধার মেয়ে কাজল বেগমের সাথে রূপসা উত্তর ইউনিয়নের বদিউজ্জামানপুর গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদিনের ছেলে মামুন হোসেনের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
কাজল বেগমের বোন রেখা জানান, বিয়ের পর থেকেই তার বোনকে নানাভাবে নির্যাতন করতো বোন জামাই মামুন হোসেন। এ নিয়ে বহুবার সালিসি বৈঠক হয়েছে। ইতিপূর্বে তাকে কয়েক দফা টাকা দেয়া হয় বিদেশ যাওয়ার জন্য। মাত্র ১৭ দিন পূর্বে তার বাবা শাহজাহান মৃধার মৃত্যু হয়। ক’দিন পূর্বেও তাকে নির্যাতন করেছে। রোববার সকালে তার বোনের জামাই মামুন তাকে জানায়, তার বোন গলায় ফাঁস দিয়েছে।
লাশ উদ্ধারকারী থানার এসআই কুদ্দুছ জানান, সংবাদ পেয়ে আমিসহ ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল রোববার দুপুরে লাশ উদ্ধার করেছি। পোস্ট মর্টেমের জন্য চাঁদপুর পাঠানো হয়েছে।
ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শহিদ হোসেন জানান, গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী মামুন হোসেনকে আটক করা হয়েছে।