আনিছুর রহমান সুজন
বুধবার রাতের ঘটনার জের ধরে ফরিদগঞ্জে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ও বুধবার রাতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ ২জন আটকের প্রতিবাদে ও মুক্তির দাবীতে দুই দফা চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের চরকুমিরা এলাকায় গাছ কেটে অবরোধ করেছে তাদের সমর্থকরা । দীর্ঘ তিন ঘন্টা অবরোধে ওই সড়কের উভয় পাশে কয়েক কিলোমিটার ধরে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। সকাল ১০টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিাতি স্বাভাবিক করে। তবে সারদিনই তারা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বলে জানা গেছে। এদিকে থানায় দায়েরকৃত মামলার ঘটনায় আটককৃত দুইজনকে আদালতে তোলা হলে আদালত উভয়কে জামিন দেয়।
এর আগে বুধবার রাতে ঘোষিত উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম সোহাগের উপর হামলার ঘটনায় তার বাবা মোস্তফা কামাল মিয়াজী বাদী হয়ে সাইফুল ইসলাম রিপন, ও স্বপনসহ ১২জনকে সুনিদিষ্ট প্রায় শতাধিক অজ্ঞাত যুবককে অভিযুক্ত করে ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছে।
অণ্যদিকে বৃহষ্পতিবার বিকালে উপজেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে ছাত্রলীগের সম্পাদক মাহবুব আলম সোহাগের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিল শেষে বক্তব্য রাখেণ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী, সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার, উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি বিল্লাল হোসেন হাজী সফিক, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, সহসভাপতি জহিরুল ইসলাম সুজন প্রমুখ।
জানা গেছে, বুধবার রাতে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে বিবাদমান ছাত্রলীগের একাংশের নেতা জেলা ছাত্রলীগের সদস্য পাবেলকে মারধর করে অপর অংশের নেতা ঘোষিত উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব। এর জের ধরে উভয় পক্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় পাবেলের সমর্থকরা উপজেলা পরিষদে ঢুকে বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেল ভাঙচুর এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকারের অফিস কক্ষের দরজা ভাংচুর করে। এসময় পুলিশ যুবলীগ কর্মী স্বপনকে আটক করে। এর কিছুক্ষণ পর তার পক্ষ নিয়ে ছাত্রলীগের একটি অংশ ওয়াপদা মাঠের বিজয় মেলায় হামলার চেষ্টা করে। এসময় তারা সেখানে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবকে বেধড়ক মারপিট করে মিছিল নিয়ে বাজারে চলে যায়। পুলিশ মিছিল থেকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম রিপনকে আটক করে।
রাত প্রায় ১২টার দিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে চরকুমিরা ও টিএন্ডটি এলাকায় গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করে। পুলিশ তা সরিয়ে দেয়ার পর বৃহস্পতিবার সকালে রিপনের সতীর্থরা আবরো চরকুমিরা এলাকায় গাছ এবং এর ওপর ময়লা ফেলে ফের অবরোধ সৃষ্টি করে। এসময় তারা কয়েকটি যানবাহনে ভাংচুর চালায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ সরিয়ে ফেললে প্রায় তিন ঘন্টা পর সড়ক যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়। সকালে পুলিশ গাছ সরিয়ে দেয়ার পর বিক্ষুদ্ধরা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে।
ফরিদগঞ্জ থানার ওসি নাজমুল হক জানান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের উপর হামলায় ঘটনায় গ্রেফতার দেখিয়ে আটককৃত রিপন ও স্বপনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ফের সংঘর্ষ এড়াতে ফরিদগঞ্জে সারাদিন অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।পুলিশের বিভিন্ন টিম উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় টহল দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে ফরিদগঞ্জে উত্তেজনা বিরাজ করছে।বুধবার রাতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাতাহাতির ঘটনার পর তা চরমে পৌছে।
শিরোনাম:
মঙ্গলবার , ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২৯ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।