প্রতিনিধি
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় এমপি যখন মরা ডাকাতিয়া নদী এবং এর আশপাশের জনবসতি বাঁচানোর জন্যে বড় ধরনের প্রকল্প অনুমোদনের জন্যে চেষ্টা করে চলেছেন, তখন তারই অনুসারী হিসেবে দাবিদার তার দোহাই দিয়ে দিনের পর দিন অবৈধভাবে চালিয়ে যাচ্ছে ডাকাতিয়া নদীতে ড্রেজিং। নবনির্মিত ডাকাতিয়া নদীর উপর ব্রিজের অতি কাছেই দাসপাড়া সংলগ্ন নদীর তীরে চলছে এ ড্রেজিং। অব্যাহত এ অবৈধ ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে চলছে বালু উত্তোলনের মহোৎসব।
সরজমিনে এলাকায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় এমপির অনুসারী দাবিদার লিটন হাজারী ওই এলাকায় অবৈধ ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। কয়েক মাস পূর্বে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম এবং পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজে উপস্থিত হয়ে ড্রেজিং বন্ধ করার সাথে সাথে ভেঙ্গে দেয় ড্রেজার মেশিন। এরপর কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর গত এক সপ্তাহ ধরে আবার সেই লিটন হাজারী শুরু করেছে নদী থেকে বালু উত্তোলন।
সরজমিনে গতকাল মঙ্গলবার কয়েক দফা এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, কচুরিপানার জট লেগে থাকা নতুন নির্মিত দৃষ্টিনন্দন পাকা ব্রিজটির অদূরে ড্রেজিং মেশিন চলছে অবিরত। একটি মোটা পাইপ দিয়ে বিভিন্ন বাড়ির ভেতর দিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে বালু ফেলা হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে, দাসপাড়া এলাকার কয়েকটি পুকুর বা ডোবা ভরাটের কন্ট্রাক্ট নিয়ে লিটন হাজারী নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। এদিকে প্রশাসনের নাকের ডগায় এভাবে দিনের পর দিন ড্রেজিং চললেও তাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। গত কয়েক দিন ধরে স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় এ নিয়ে লেখালেখি হলেও কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় চাঁদপুর কণ্ঠের পক্ষ থেকে সরজমিনে অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার ফরিদগঞ্জে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া গেল। স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত লিটন হাজারীর বক্তব্যে জানা গেছে, কয়েকদিন আগের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত নেতা-কর্মীদের চিকিৎসা করাতে নাকি সে এ ড্রেজিং করাচ্ছে। কিন্তু এভাবে শত শত মানুষের বসতিকে হুমিকর মুখে ঠেলে দিয়ে নিজের আর্থিক লাভ কার উপকারে আসবে এ প্রশ্ন সকলের। অবৈধ ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে মরা ডাকাতিয়া নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে এভাবে বছরের পর বছর বালু উত্তোলনের কারণে হুমকির মুখে রয়েছে এ এলাকার জনবসতি। ডাকাতিয়া নদীর উপর বেইলী ব্রিজের স্থলে দৃষ্টিনন্দন পাকা সেতু নির্মাণ হলেও সেটিও এখন হুমকির মুখে। সেতুটি নির্মাণকালে এর পাশ থেকে লাখ লাখ ফুট বালু উত্তোলন করা হয়েছে। ওই সময়ে সরকারি দলের রিপন নামে এক লোক ওই কোম্পানীকে এ কাজে সহায়তা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এভাবে একের পর এক অবৈধ ড্রেজিংয়ের পর বৈধ ড্রেজিং হিতে বিপরীত হতে পারে।