প্রতিনিধি
ইভটিজিংয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতের অাঁধারে পেট্রোল ঢেলে এক প্রবাসীর বসতঘর জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত ৫ দিন পূর্বে এ ঘটনা ঘটলেও পুনরায় হামলার ভয়ে ওই প্রবাসীর স্ত্রী- সন্তানরা দিনের বেলায় পুড়ে যাওয়া ঘরের সামনে অবস্থান করলেও রাতে পার্শ্ববর্তী রায়পুর উপজেলায় গিয়ে আশ্রয় নেন। এ ব্যাপারে থানায় মামলায় দায়েরের পর থানা পুলিশ মাত্র একবার ঘটনাস্থলে গিয়েছে। সর্বশেষ ভুক্তভোগীরা পুলিশ সুপারের কাছে গিয়ে ঘটনা জানালে পুলিশ তড়িঘড়ি করে গতকাল সোমবার দুপুরে অগি্নসংযোগ ঘটনার অভিযুক্ত পারভেজ (২২) নামে একজনকে আটক করেছে। উপজেলার দক্ষিণাঞ্চল পশ্চিম আলোনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
থানায় দায়েরকৃত মামলার অভিযোগে প্রকাশ, পশ্চিম আলোনিয়া গ্রামের প্রবাসী মনির হোসেনের স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় স্থানীয় মুরাদ হোসেনসহ বখাটেরা উত্ত্যক্ত করতো। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনকে জানালে গত ৩১ জানুয়ারি তারা দলবলে প্রবাসী মনির হোসেনের ঘরে এসে বাড়াবাড়ি করলে গুম ও আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এ সময় ঘরে মনির হোসেনের স্ত্রী হালিমা বেগম ও তার ছেলেমেয়েদের মারধর করে সন্ত্রাসীরা। এতেই তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি। তারা গত ৩ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে মনির হোসেনের বসতঘর পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়। এ সময় মনির হোসেনের স্ত্রী ও সন্তানরা অন্যত্র থাকায় তারা বেঁচে যায়।
গতকাল সোমবার সকালে সরজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে প্রবাসী মনির হোসেনের বৃদ্ধা মা মনোয়ারা বেগম ও বাবা আহাম্মদ উল্যাহ মুন্সী জানান, মঙ্গলবার গভীর রাতে হঠাৎ করেই তারা মনির হোসেনের ঘরে আগুন দেখতে পান। এ সময় আশপাশের লোকজনসহ চেষ্টা করলেও ঘরের কোনো কিছুই তারা রক্ষা করতে পারেন নি। তখন ঘরে কেউ না থাকায় তারা প্রাণে বেঁচে যান। তারা আরো জানান, তাদের সাথে কারো কোনো বিরোধ নেই। কিন্তু স্থানীয় একটি চক্র তাদের নাতনিকে উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করেছে। বসতঘর পুুড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে স্থানীয় ইউপি সদস্য অলি আহাম্মদ জানান, হালিমার শ্বশুর আহম্মদ উল্যাহ মুন্সী বুধবার সকালে এসে ঘটনা তাকে জানান।
এদিকে ঘটনার পর মনির হোসেনের স্ত্রী হালিমা বেগম বাদী হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করার পর পুলিশ ওই দিন রাতে ঘটনাস্থলে যায়। এরপর তারা আর কোনো খোঁজ রাখে নি বলে তিনি জানান। পরে রোববার তারা ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও চাঁদপুর পুলিশ সুপারের কাছে গিয়ে বসতঘর পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনা জানালে গতকাল সোমবার সকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মনিরুল ইসলাম পারভেজ (২২) নামে এক অভিযুক্তকে আটক করলেও হুমায়ুন নামে আরেকজন পালিয়ে যায়।
হালিমা বেগম জানান, তারা বসতঘর হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। দিনের বেলায় সম্পদ রক্ষার্থে বাড়িতে থাকলেও রাতে পুনঃ হামলার আশঙ্কায় তারা পার্শ্ববর্তী রায়পুর উপজেলায় গিয়ে থাকতে বাধ্য হন।