মো. শিমুল হাছান
ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৭নং পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের ভাওয়াল গ্রামে সম্পত্তিগত বিরোধের জেরে, প্রতিপক্ষের ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা সীমানা প্রাচীর ও সরকারিভাবে জনসাধারণের জন্য স্থাপন করা একটি গভীর নলকূপ গুড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়া হামলায় আহত তিন ব্যক্তি ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে এই ঘটনাটি ঘটে ভাওয়াল গ্রামের খাসের বাড়িতে। এনিয়ে প্রবাসী মিজানুর রহমানের স্ত্রী আহত শিল্পী বেগম বাদী হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ রোববার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
লিখিত অভিযোগের বিবরণ ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ৭নং ইউনিয়নের ভাওয়াল গ্রামের খাসের বাড়ির প্রবাসী মিজানুর রহমান পাটওয়ারী সাথে ওয়ারিশের সম্পত্তি নিয়ে তার অন্য ভাইদের সাথে বিরোধ চলে আসছিলো। এনিয়ে স্থানীয় মেম্বার, চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা শালিস মিমাংসার মাধ্যমে সীমানা নির্ধারন করে দেয়। সিদ্ধান্ত অনুসারে মিজানুর রহমানের স্ত্রী শিল্পী বেগম গত বুধবারে নিজ দখলকৃত সম্পতিত্তে ৫০ ফুট দৈর্ঘ ও ৬ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট একটি সীমানা প্রাচীর নির্মান করে। সীমানা প্রাচীর নির্মানের সময় মিজানুর রহমানের অন্যান ভাইয়েরা কোন বাঁধা প্রদান না করলেও গত শনিবার সকালে চাঁদপুর থেকে সন্ত্রাসী ভাড়া এনে সীমানা প্রাচীর গুড়িয়ে দেয়। এছাড়াও সরকারি অর্থায়নে জণসাধারণের স্বার্থে স্থাপিত একটি গভীর নলকূপ ও ভবনের জানালা ভাংচুর করে। সন্ত্রাসীদের হামলায় আহতরা হলেন মুক্তিযোদ্ধা মৃত. আবুল হাসেম পাটওয়ারীর স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া, শিল্পী বেগম ও মো. খোরশেদ আলম।
এসর্ম্পকে শিল্পী বেগম এ প্রতিনিধিকে বলেন, ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া আমার স্বামীর দখলকৃত সম্পতিত্তে সালিশের সিদ্ধান্ত অনুসারে সীমানা প্রাচীর নির্মান করি। কিন্তু প্রতিপক্ষের এমরান হোসেন ভুট্টু(৪০), মো. মাঈনুদ্দীন(৩৫), সোহেল হোসেন(৩৩), মো. শাহনাজ রহমত উল্যা (দুলাল), ফাতেমা বেগম(৩২) ও ফরিদা বেগমের নের্তৃত্বে চাঁদপুর থেকে আনা ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে মাটির সাথে গুড়িয়ে দেয়। জনসাধারনের ব্যবহৃত গভীর নলকূপটি ভেঙ্গে ফেলায় এলাকার ৫০/৬০টি পরিবার পানি সংকটে ভুগছে। এছাড়া হামলায় আমি, আমার মা রাজিয়া বেগম ও আমার ভাই খোরশেদ আলম গুরুত্বর আহত হয়। প্রতিপক্ষের হামলায় আমাদের সাড়ে তিন লক্ষ টাকা সমপরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়। অপরএক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার বাবার বাড়ি ও স্বামীর বাড়ি একই বাড়ি। প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকিধামকি দিয়ে যাচ্ছে। আমি প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
এনিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজনের বক্তব্যের জন্য একাধীক বার চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
এসর্ম্পকে ইউপি চেয়ারম্যান আলী আক্কাছ ভূঁইয়া বলেন, গত এক বছর পূর্বে ওই পরিবারের পৈত্রিক সম্পত্তির ভিটির অংশ ৬ ভাইয়ের মধ্যে বন্টন করে সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এছাড়া পৈত্রিক সম্পত্তির বোনের অংশ বাকী সম্পত্তি থেকে দেওয়া ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সালিশের ১ বছর পর প্রবাসী মিজানুর রহমান পাটওয়ারীর স্ত্রী সম্পত্তির উপর সীমান প্রাচীর নির্মান করলে প্রতিপক্ষের লোকজন ৫০/৬০ জন লোক এনে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা করে ভাংচুর করে মাটির সাথে গুড়িয়ে দেয়। যা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।
এসর্ম্পকে ফরিদগঞ্জ থানার এস আই আনোয়ার হোসেন বলেন, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষ থানায় পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ দিয়েছে। উভয় পক্ষকে বুধবার থানায় আসতে বলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
শিরোনাম:
বুধবার , ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ , ১৯ মাঘ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।