স্টাফ রিপোর্টার ॥
ফরিদগঞ্জে পাষন্ড স্বামী কর্তৃক এক গৃহবধূকে হত্যার পরিকল্পনা ব্যর্থ হলে অবশেষে নাটকীয়ভাবে নেশার ঔষধ খাইয়ে বরিশালের লঞ্চে উঠিয়ে দেয়ার ৭দিন পর তাকে তার স্বজনরা উদ্ধার করে শুক্রবার দুপুরে। শনিবার ফরিদগঞ্জ থানায় হাজির করা হয়। এব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানায় অপহৃতা নিজেই বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছে।
মাজেদা ও তার পরিবারের লোকজন জানায় , ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার পশ্চিম বড়ালি গ্রামের মৃত আবুল খায়েরের কন্যা মাজেদা আক্তার বিপুল (১৮)-এর সাথে পাশ্ববর্তী গাব্দেরগাঁও চৌকিদার বাড়ির আলী আকবর (২৪)-এর সাথে গত ৫ মাস পূর্বে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই আলী আকবর ও তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন অজুহাতে স্ত্রী মাজেদার সাথে দুর্ব্যবহার করছিল। এক পর্যায়ে তাকে বাপের বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে টাকা আনার জন্যে চাপ প্রয়োগ করে। নিরূপায় হয়ে মাজেদা কয়েক দফা বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিলেও স্বামী ও তার পরিবারের মন ভরেনি। এরই জের ধরে সর্বশেষ গত ৩ অক্টোবর শুক্রবার ত্চ্ছু ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাজেদার সাথে দুর্ব্যবহার করে এবং মারধর করে। এরপর নাটকীয়ভাবে স্বামী ভুল স্বীকার করে মাজেদাকে নিয়ে বেড়ানো ও মার্কেটিং করার কথা বলে সিএনজি যোগে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে নিয়ে আসে। এর পর বরিশালের লঞ্চে উঠতে বললে মাজেদা তাতে সায় না দিলে তাকে মারধর করে জোর করে লঞ্চে উঠিয়ে ছাদে নিয়ে রুটি খেতে দেয়। রুটি খাওয়ার পর মাজেদা জ্ঞান হারিয়ে ফেললে সটকে পড়ে স্বামী আলী আকবর । পরে আলী আকবর নিজে পরদিন ফরিদগঞ্জ থানায় এসে তার স্ত্রী টাকা-পয়সা, স্বর্ণ-গহনা ইত্যাদি নিয়ে পালিয়েছে মর্মে অভিযোগ দায়ের করে।
অন্যদিকে মাজেদা অজ্ঞান অবস্থায় বরিশাল চলে গেলে লঞ্চের লোকজন তাকে বরিশালের উজিরপুরে রাস্তায় ফেলে গেলে, জনৈক ফিরোজা বেগম (৪০) তাকে উদ্ধার করে গুঠিয়া বন্দরের দি আসমা ড্রাগ হাউজে চিকিৎসা নেয়া অবস্থায় জ্ঞান ফিরে পায়।পরে মাজেদা সুস্থ হয়ে তার গ্রামের বাড়িতে মোবাইল ফোনে এসব ঘটনা বিস্তারিত জানায়। পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে তাকে বরিশাল থেকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় স্বামী আলী আকবর ও তার চাচা আনোয়ার উল্যাহকে আসামী করে মামলা দায়ের করে।
এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি নাজমুল হক বলেন, আমরা ভিকটিম মাজেদা আক্তার বিপুলের বিষয়ে যাবতীয় ঘটনা বিস্তারিত জেনেছি। শ্রীঘ্রই এ ব্যাপারে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. আমির জাফরও অবগত হয়েছেন এবং তিনি এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ প্রদান করেছেন।