সাখাওয়াত হোসেন মিথুন:
হাজীগঞ্জে ৯ নং গন্ধ্যর্বপুর উত্তর ইউনিয়নের তালিয়া গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির তৈয়ব আলী মাস্টার নিজ বাড়িতে আতঙ্কে দিন কাটছে। গত ২ অক্টোবরের ঘটনা মনে পড়লে চমকে উঠেন। সারাদিন নিজ গৃহে দিন কাটান আতঙ্কে লোক লজ্জা ও ভয়ে অপরিচিত কাউকে দেখলে ৭০ বছরের এই বৃদ্ধা নিজেকে লুকাতে চেষ্টা করেন।
সরজমিনে গতকাল বুধবার ওই ইউনিয়নে তৈয়ব আলী মাস্টারের নিজ বাড়ি গিয়ে খোজ করলে ভয়ে নিজের ঘর থেকে বের হতে চাননি। পরিবারের অন্যান্যদের সদস্যদের সাথে অনেকক্ষন কথা বলে নিরভয় দিলে সংবাদ কর্মীদের সাথে কথা বলতে রাজি হন। আলাপ কালে তিনি জানান, ৬ ছেলে ও ১ কন্যা সন্তানের জনক তিনি। ৪ ছেলে বর্তমানে দুবাই প্রবাসে আছে ১ ছেলে দুবাই থেকে ছুটিতে দেশে এসেছে আরেক জন বাড়িতে থাকে। এই সময় তিনি প্রতিনিধিকে জানান, বড় ছেলে মোস্তফা দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে রয়েছে। মাঝে মধ্যে সে ঐ দেশে লোক আনা নেওয়া করে। অন্যান্যদের মতো মৈশামুড়ার আব্দুল্লাহকে সে বিদেশে নেয়। সেখানে গিয়ে কি যে সমস্যার কারনে আব্দুল্লাহ দেশে চলে আসে তা আমার জানা নেই। আব্দুল্লাহকে নেওয়ার জন্য আমার ছেলের সাথে আব্দুল্লাহর মামার সাথে দুবাইতে টাকার লেনদেন হয়েছে। এ নিয়ে কিছু দিন পূর্বে এলাকায় একটি শালিস হয়। ঐ শালিসে আব্দুল্লাহর মামার সাথে দুবাইতে মোস্তফার ১ লাখ টাকার লেনদেন হওয়ার কথা। তার পূর্বেই আব্দুল্লাহ আমাকে তার বাড়ির কাছে পেয়ে আটকে রেখে মারধর ও পিছ মোড়ে বেঁধে গ্রামের রাস্তায় ঘুরায়।
ঘটনার দিন ২ অক্টোবর চাঁদপুর থেকে একটি ব্যক্তিগত কাজ সেরে বেলচোঁ বাজার থেকে নৌকায় করে বাড়ি ফেরার পথে মৈশামুড়া বাজারের কাছে আব্দুল্লাহর সাথে দেখা হয় আমাকে খুব শ্রদ্ধাভক্তি দেখিয়ে তাদের বাড়ির সামনের মসজিদের পার্শ্বে চায়ের দোকানে বসিয়ে চা ও কেক খাওয়ায়। চা খাওয়া শেষে আমি মসজিদে আছর নামাজ পড়তে ঢুকে যাই। নামাজ শেষে আব্দুল্লাহ আমাকে কৌশলে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আমার পেছনে দু’হাত বেঁধে নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে আমার নাক মুখে রক্ত বের হয়ে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমি পানি খেতে চাইলে ময়লা পানি এনে দেয়। ঐ পানি না খাওয়ার কারনে আবারো আমাকে মারধর করে। এর পর পর একটি কাপড় দিয়ে আমার নাক মুখের রক্ত মুছে আমাকে পিছ মুড়ে একটি রশি দিয়ে বেঁধে ঘর থেকে নামিয়ে আনে। এর মধ্যে এলাকার বেশকিছু লোক জড়ো হয়ে পড়ে। এই সব লোকদের সামনে আমাকে বালুর মাঠে ও রাস্তায় হাটায়। ইতি মধ্যে খবরটি পুরো এলাকা হয়েগেলে আমার বাড়ি থেকে আত্মীয় স্বজনরা সেখানে হাজির হয়। এরপর এক এক করে ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য ও অন্যান্যরা হাজির হয়। আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসীর চেষ্টায় সেখান থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে রাতেই আত্মীয় স্বজনরা আমাকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েভর্তি করায় ৫ দিন আমি হাসপাতালে চিকিৎসা নেই।
তৈয়ব মাস্টার জানান, অনেক আগেই থেকে এ সব লোকদের কারনে আমি বাড়ি থেকে বের হতে পারিনি। আবার বাড়ি থেকে বের হইনা কারন ঐ দিনের ঐ ঘটনার পর আব্দুল্লাহ ও তার বাবা আমাকে শাশিয়ে বলেছে, ঐ ঘটনা নিয়ে জানাজানি করলে আমাকে মেরে ফেলবে।
এই ঘনটায় তৈয়ব আলী মাস্টারের ছেলে মোস্তফা স্ত্রী রেহানা বেগম বাদী হয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আশেক আলীসহ নির্যাতনের সাথে জড়িত ৪ জনকে আসামী করে ১১ অক্টোবর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে একটি মামলা দায়ের করে মামলা নং ৮৪।
শিরোনাম:
শুক্রবার , ২১ মার্চ, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৭ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।