মিজান লিটন-
চাঁদপুর শহরের বিপনীবাগে স্বামীর সাথে অভিমান করে গৃহবধু ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ্আপোষ মিমাংসায় মোটা অংকের টাকা দাবি করলে তা না দেয়ায় আত্মহত্যার ঘটনাটি ওই গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকজন স্বামীর বাড়ির লোকদেরকে অভিযুক্ত করে হত্যা মামলা করেছে। পুলিশ অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২ জনকে আটক করে জেলে পাঠিয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্টে আত্মহত্যার প্রমাণ মিলেছে।
জানা যায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিপনীবাগ এলাকার অতিথি ভিলার চতুর্থ তলার ভাড়াটিয়া ফরিদগঞ্জ উপজেলার ঘড়িয়ানা গ্রামের ইব্রাহীম মিয়ার ছেলে সরোয়ার হোসেন সুমন ও পুরাণবাজার পূর্ব শ্রীরামদি এলাকার নাজিম উদ্দিন মোল্লার মেয়ে ফাইমা আক্তার হ্যাপীর ছিলো প্রথম বিবাহ বার্ষিকী। পূর্বের দিন রাতে বিবাহ বার্ষিকী পালন করাকে কেন্দ্র করে সরোয়ার সুমন ও হ্যাপীর মধ্যে মনোমালিন্য হয়। যার জন্য রাতে দু’জনের মাঝে আর কথা হয়নি। এর ফলে হ্যাপী আক্তার স্বামী সরোয়ার সুমন সকালে ঘুম থেকে উঠে হাত মুখ ধুতে বাথরুমে গেলে রাগের বশবর্তী হয়ে স্বামীর অনুপস্থিতিতে দরজা বন্ধ করে নিজের ওড়না দিয়ে শয়ন কক্ষের সিলিংফ্যানের সাথে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
ঘটনার দিন হ্যাপীর স্বামী সরোয়ার হোসেন সুমন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলো তার স্ত্রী রাগান্বিত ছিলো। তাছাড়া সে চাকুরী করার সুবাদে স্ত্রীকে বেশি সময় দিতো না বলেও জানায়। সকালে ঘর থেকে বের হয়ে রাতে বাসায় ফিরতো। চাকুরী করতো ফরিদগঞ্জের একটি কমিউনিটি ক্লিনিকে। সেখান থেকে এসে আবার কর্ণফুলি হাসপাতালেও কাজ করতে হতো। হ্যাপী দরজা না খোলায় পরে তা ভেঙ্গে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে হ্যাপীকে নামিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করি।
চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ শাহআলম, উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল থেকে ফাইমা আক্তার হ্যাপীর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে আসে। এ সময় সরোয়ার সুমন ও তার মাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। তখন মৃত ফাইমা আক্তার হ্যাপীর মামা বালিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সফিক দেওয়ান আপোষ মিমাংসার জন্য সরোয়ার সুমনের পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা দাবী করে। ওই টাকা দিতে সরোয়ার সুমনের পরিবার অপরাগতা প্রকাশ করলে হ্যাপীর পিতা নাজিম উদ্দিন মোল্লা চাঁদপুর মডেল থানায় সরোয়ার হোসেন সুমন ও তার পিতামাতাকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করে। ওই দিনই চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ ফাইমা আক্তার হ্যাপীর লাশ ময়না তদন্তকরে। একটি সূত্র জানায় মৃত হ্যাপীর পরিবার হ্যাপীর সহপাঠীদেরকে টাকা দিয়ে শহরের মানববন্ধন ও প্রশাসনের কাছে সরোয়ার সুমনের ফাঁসি চেয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে। গত ৪ অক্টোবর মৃত ফাইমা আক্তার হ্যাপীর ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক সিরাজুল ইসলাম ময়না তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করেছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে ফাইমা আক্তার হ্যাপী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।