সাখাওয়াত হোসেন মিথুন (হাজীগঞ্জ):
মাদকের জোয়ারে ভাসছে ডাকাতীয়া নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা জনপদ হাজীগঞ্জ। নদীর স্রোতের মত ভারত থেকে ডাকাতীয় নদী দিয়ে হাজার হাজার বোতল ফেন্সিডিল ভেসে আসছে এই জনপদে। আর এসব ফেন্সিডিল ডাকাতীয়ানদীর পাড়ের কুমিল্লা, চাঁদপুররের অঞ্চল থেকেই আসছে হাজীগঞ্জ উপজেলা সহ বিভিন্ন অঞ্চলে। তাই প্রতিদিনই গভীর রাত থেকে ভোররাত পর্যন্ত্ম যানবাহন চলাচালে ব্যস্ত্ম থাকে হাজীগঞ্জ ডাকাতীয়া নদীরপাড় ও সিমান্ত্মবর্তী রাস্ত্মাগুলো। প্রাইভেটকার, মাইক্রো, মটর সাইকেলযোগে বহন করা হয় এসব ফেন্সিডিল। ফেন্সিডিল বহনকারী যানবাহন গুলোর অবিরাম ভূঁ ভূাঁ শব্দে ঘুম ভাঙ্গে এই উপজেলার সাধারণ মানুষের। স্থানীয় থানা প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় পরিচালিত হচ্ছে মাদকের এই রমরমা ব্যবসা। এই ব্যবসায় থানা প্রশাসন কিংবা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর হাজীগঞ্জ সার্কেল থেকে কোন রকম প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নজীর নেই। তবে বছরে দুই একবার অভিযান চলিয়ে ছোট খাট দুই একটি চালান আটক করার ঘটনা ঘটেছে।
ফেন্সিডিল বিক্রয় করে এই অঞ্চলর কয়েকটি পরিবার কোটিপতি বনে গেছে। তারা আজ এই অঞ্চলের প্রভাবশালী পরিবারে পরিণত হয়েছে। বর্তমান ক্ষমতাশীল দল ও বিরোধী দলের স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী নেতার কারেও দাঁড়িয়েছে। অনেকেই হয়েছে মহিষ গাড়ির গাড়োয়ান থেকে দুরপাল্লার বাস, ট্রাক, ইটভাটা, প্লাষ্টিক, ফ্যাক্টরীর মালিক। মাদক ব্যবসা পরিচালন করে হয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ঠিকাদার। বর্তমান প্রভাবশালী সমাজের অধিকাংশ লোক ও রাজনৈতিক স্থানীয় শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিভিন্ন ধরনের মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কেও অর্থ দিয়ে কেও লোকবল আবার কেওবা প্রশাসনিক ক্ষমতা দিয়ে সহযোগিতা করেছে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পরেই এদের পদচারণায় থানা পরিণত হয় রাজনৈতিক বৈঠক খানায়। ডাকাতীয়ানদী দিয়ে ফেন্সিডিল আনা নেওয়াকে, সীমান্ত্মবর্তি এলাকা থেকেও কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীদের ডিলার ও সরবাহের প্রধান নৌকার ও সড়ক পথে চালান আটক হয়। কিন্তু মামলা হলে কি হবে? পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যাদের এত ভাব তাদের কাছ থেকে মাসোহারা নেওয়া হয়। তাদের বিরূদ্ধে মামলা! ফাইনাল চার্জশীটেই শেষ। এভাবে প্রায় ১৩টি পরিবার তাদের পরিবারের উপার্জনের অবলম্বনকে হারিয়ে পথে বসেছে। তবে; একবার মাসোহারা দেওয়ার পর। হাজীগঞ্জ উপজেলার এবং ইউনিয়ন গুলোর প্রায় ১০০টি পরিবার সরাসরি ফেন্সিডিল সহ বিভিন্ন ধরনের মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত। তাদের পরিবারের স্কুল কলেজের পড়ুয়া ছেলে মেয়েরাও একাজে জরিড়ত রয়েছে। একারণে এই অঞ্চলটিতে এলাকার উচ্চ শিক্ষার হার কম হয়ে আসছে। কারণ তারা লেখাপড়ার চেয়ে টাকা উপার্জনকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। এই অঞ্চলে জীবন যাত্রার মান অনেকটা ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ছেলেমেয়েদের বিয়ে খুব একটা সুশীল সমাজে হচ্ছে না। তাদের পরিবারের ছেলেমেয়েদের বিয়ে তাদের মত মাদক ব্যবসায়ীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই হচ্ছে। মাদক দব্যবসায় আধিপত্য বিস্ত্মারকে কেন্দ্র করে প্রায় সময়ই নিজেদের মধ্যেই হাঙ্গা-দাঙ্গা বাধার ঘটানা ঘটছে। পুরো এলাকা জুড়ে বিরাজ করে কোলাহল পুরো এলাকা জুড়ে বিরাজ করে কোলাহল আর অশান্ত্মি। উপজেলাব্যাপী এখন মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ধবংস হচ্ছে যুব সমাজ। রক্ষা পাচ্ছে না ছাত্র ও সুশীল সমাজের মানুষরাও। হাতের কাছে ফেন্সিডিলসহ নানা রকম মাদক ছড়াছড়ি হওয়ার সামান্যতম পরিবারিক, মানুসিকসহ অন্যান্য কারণে উঠতি বয়সীরাও ফেন্সিডিলে আসক্ত হয়ে পড়েছে।
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ