প্রধান বিরোধী দলসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গঠিত সরকার অবৈধ বলে মন্তব্য করেছেন কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা। শুক্রবার ‘ভারতের দায়িত্ব’ শীর্ষক সম্পাদকীয়তে এ মন্তব্য করেছে।
সম্পাদকীয়তে বলা হয়, একপাক্ষিক নির্বাচনে মাত্র ২২ শতাংশ ভোটে ক্ষমতাসীন সরকারই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। ফলে গণতন্ত্রের মাপকাঠিতে নতুন সরকারের বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ কিংবা সরাসরি অবৈধ।
সম্পাদকীয়তে বলা হয়, বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকার বিষয়েও নয়াদিল্লির একটি স্পষ্ট অবস্থানে আসা দরকার। মূল বিরোধী দলের বয়কটে এবার বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিতভাবেই একপাক্ষিক হয়েছে, মাত্র ২২ শতাংশ ভোট পড়েছে, ক্ষমতাসীন সরকারই কার্যত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পুনরায় ক্ষমতার হাল ধরেছে। স্বভাবতই গণতন্ত্রের মাপকাঠিতে নূতন সরকারের বৈধতা প্রশ্নযোগ্য কিংবা সরাসরি অবৈধ। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন তাদের অনাস্থা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে। গণতান্ত্রিক নীতিতে আমূল অঙ্গীকারাবদ্ধ ভারতও স্বস্তিতে নেই।
আনন্দবাজার লিখেছে, শেখ হাসিনারও যেমন সরকার-চালনার জন্য আরও ‘বৈধ’ জনভিত্তি দরকার, বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়ারও উচিত, প্রয়োজনীয় শর্তসাপেক্ষে নির্বাচনের মতো গুরুতর গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করা
আনন্দবাজার লিখেছে, এই মুহূর্তে ভারতের অন্যতম বৃহৎ সংকটটির নাম : বাংলাদেশ। ঢাকার নির্বাচন পরবর্তী ঘটনাক্রম দেখাইয়া দিতেছে যে নির্বাচনের কয়েক মাস আগে হইতে যে লাগাতার রাজনৈতিক সংঘর্ষে সে দেশ আচ্ছন্ন ছিল, সেই সংঘর্ষ পরিস্থিতি আরও অনেক তীব্র হইয়াছে, একটি ভোট অনুষ্ঠান যেন রাতারাতি দেশটিকে দুই শিবিরে বিভক্ত করিয়া দিয়াছে। এক দিকে আওয়ামী লীগের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ, অন্যদিকে বিরোধী দুই দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামি পক্ষ।
মৌলবাদী, হিংসাপন্থী ইত্যাদি বিভাজনের অতি-সরলতায় যাইবার প্রয়োজন নাই, কেননা সকল সমাজগত ও ধর্মগত তকমা বাদ দিয়াই বলা যাইতে পারে, দুই রাজনৈতিক গোষ্ঠীর এই বিভাজনের মধ্যে জমা হইয়াছে তুমুল বিস্ফোরক বারুদ। একদিকে যেমন সেই বারুদে জ্বলিতেছে বাংলাদেশের শহর-গ্রাম-জনপদ, প্রবল বিরোধিতার মধ্যেও ভোটদানের ‘স্পর্ধা’ দেখাইবার অপরাধে বহু মানুষের ঘরবাড়ি জমিজমা পুড়িতেছে, সঙ্গে সঙ্গে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তেও সেই বারুদ বিপুল বেগে আছড়াইয়া পড়িবার উপক্রম।
শিরোনাম:
মঙ্গলবার , ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২৯ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।