জিয়াউর রহমান বেলাল ॥
চাঁদপুর সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বাগাদী গণি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী সাথী আক্তার (১৪) আত্মহত্যা মামলায় বিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষক ও ১ অফিস সহকারিসহ ৫ বিবাদী পৃথক পৃথকভাবে জামিন লাভ করেছেন। চাঁদপুরের মাননীয় জেলা ও দায়রা জজ সালেহ উদ্দিন- এর বিজ্ঞ আদালতে এবং চাঁদপুরের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইউসুফ আবু কাউসার- এর বিজ্ঞ আদালতে উল্লেখিত বিবাদীরা সম্প্রতি পৃথক পৃথক তারিখে সশরীরে ও স্বেচ্ছায় উপস্থিত হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে উভয় বিজ্ঞ আদালত পৃথক পৃথকভাবে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, যেহেতু বাদী তার মামলার আর্জির বিবরণে ৩নং বিবাদী হিসেবে মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন শিক্ষক এবং পিতা অজ্ঞাত উল্লেখ করেছেন : নামের মিল থাকায় ও পিতা অজ্ঞাত হওয়ায় মামলার ৩নং বিবাদী হিসেবে মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন নামে বিদ্যালয়ে ২জন শিক্ষক রয়েছেন সেহেতু উভয়কে স্বেচ্ছায় বিজ্ঞ আদালতে উপস্থিত হয়ে পৃথক পৃথকভাবে জামিনের প্রার্থনা করে জামিন নিতে হয়েছে। সাথী আক্তার বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল এবং সে গত ২৯ আগষ্ট ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ তারিখ বেলা ১২টার পর নিজেদের ঘরের আড়ার সাথে ওড়না দ্বারা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এ আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে।
এ ব্যাপারে সাথীর পিতা মোঃ দেলোয়ার হোসেন শেখ (দেলু) নিজে বাদী হয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় ৪ জনকে বিবাদী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ৬৩,জিআর মামলা-৪৯৬/২০১৬ইং তাং- ২৯/০৮/২০১৬ইং, ধারাঃ ৩০৬পিসি। বিবাদীরা হলেনঃ বাগাদী গণি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আলাউদ্দিন মজুমদার (৫০), বিদ্যালয়ের অফিস সহকারি (যদিও মামলায় তার পদবী শিক্ষক দেখানো হয়েছে; বস্তুতঃ তিনি শিক্ষক নন, বিদ্যালয়ের অফিস সহকারি মাত্র) ফাতেমা আক্তার (৪০), বিদ্যালয়ের শিক্ষক যথাক্রমে মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৮) ও মোঃ জাকির হোসেন (৪০)। পুলিশ ঘটনার পর পর বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আলাউদ্দিন মজুমদারকে আটক করে কোর্টে প্রেরণ করলে বিজ্ঞ বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেন। মামলাটির তদন্তভার ন্যস্ত হয় চাঁদপুর সদর মডেল থানার চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা এসআই মাহবুব আলম মন্ডলের ওপর। বর্তমানে তিনি মামলাটির ব্যাপক তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
চাঁদপুরের মাননীয় জেলা ও দায়রা জজ সালেহ উদ্দিন- এর বিজ্ঞ আদালতে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ খ্রিস্টাব্দ তারিখে মামলার ১নং বিবাদী মোঃ আলাউদ্দিন মজুমদার জামিন প্রার্থনা করলে বিজ্ঞ বিচারক তার জামিন মঞ্জুর করে। এছাড়া চাঁদপুরের বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল মেজিস্ট্রেট ইউসুফ আবু কাউসার- এর বিজ্ঞ আদালতে গত ৩ অক্টোবর ২০১৬ খ্রিস্টাব্দ তারিখে উল্লেখিত মামলার ২ ও ৩ নং বিবাদী যথাক্রমে অফিস সহকারি ফাতেমা আক্তার এবং মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন নামে ২ শিক্ষকসহ ৩ বিবাদী স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এর পরদিন অর্থাৎ গত ৪ অক্টোবর ২০১৬ খ্রিস্টাব্দ তারিখে মামলার ৪নং বিবাদী মোঃ জাকির হোসেন স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে জামিনের প্রার্থনা করলে বিজ্ঞ আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। এ নিয়ে মামলার বিবাদী ৪ শিক্ষক ও ১ অফিস সহকারিসহ ৫ জন পৃথক পৃথকভাবে জামিন লাভ করেন। বিবাদীদের পক্ষে জামিন প্রার্থনার ক্ষেত্রে কৌঁশলী হিসেবে ছিলেন যথাক্রমে অ্যাডভোকেট মোঃ সেলিম আকবর, অ্যাডভোকেট সাইয়েদুল ইসলাম বাবুসহ প্রায় ২০জন অ্যাডভোকেট।