নিজস্ব প্রতিনিধি
চাঁদপুরের বাবুরহাটে ৩টি দোকানে অভিনব কায়দায় চুরি করেছে একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্র। নগদ টাকা ও মালসহ প্রায় দু’ লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে মার্কেটের কেয়ারটেকার ও পাহারাদারের সহযোগীতায় চুরির ঘটনায় অভিযোগ করেছে ব্যবসায়ীরা।
সরজমিনে জানা যায়, বাবুরহাট বাজারে স্মৃতি ট্রেডার্সের তালা খুলে নগদ ১৩ হাজার ৮শ’ টাকা একটি স্যামফনি মোবাইল সেট, মোবারক মার্কেটে বাবুরহাট মেডিসিন সেন্টারে নকল চাবি দিয়ে তালা খুলে ৩৫ হাজার টাকা এবং পাশের সিটি ফার্মেসীতে একই কায়দায় নগদ ৪৫ হাজার টাকাসহ প্রায় দেড় লাখ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। মোবারক মার্কেটের দু’ ফার্মেসীর দোকান মালিক শিফন ও মমিন গাজী জানায়, প্রতিদিনের ন্যায় রাত ১০ টায় দোকান বন্ধ করে তালা মেড়ে বাড়িতে চলে যায়। বুধবার সকাল সাড়ে ৮ টায় মার্কেটে এসে দোকানের তালা খুলে ভিতরে ঢুকে চুরির ঘটনা দেখতে পায়। চোর চক্ররা অভিনব কায়দায় মার্কেটে ঢুকে নকল চাবি বানিয়ে তালা খুলে দোকানের ভেতরে ক্যাশ ভেঙ্গে টাকাসহ মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় শার্টার আটকিয়ে পুনরায় তালা লাগিযে চলে যায়।
খবর পেয়ে বাবুরহাট বাজার কমিটির সেক্রেটারী হুমায়ন কবির দুলাল ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদার মালিকদের চুরির ঘটনা দেখেন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে বলে জানান। তিনি বলেন, মোবারক মার্কেট ও চেরাগ আলী মার্কেটের দোতালায় দিনে-রাতে মাদকসেবীরা ও জুয়াড়িরা এখানে এসে মাদক সেবন এবং জুয়া খেলায় মেতে উঠে। মোবারক মার্কেটে কেয়ারটেকার সোহাগ মার্কেটের দোতালায় বদ্ধ একটি ঘরে এলাকার মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের নিয়ে প্রতিদিন আড্ডা বসায়। ঘটনার দিন রাতে চোর চক্ররা মার্কেটের দোতালায় অবস্থান করে এই চুরির ঘটনা ঘটায়। সোহাগ মোবারক মার্কেটে একটি স্টোশনারী দোকান দিয়ে ব্যবসা করেন। সম্প্রতি চাঁদপুরের ডিবি পুলিশ কয়েকশ’ বোতল যৌন উত্তেজক শিরাপ তার দোকান থেকে জব্ধ করে। সে ব্যবসায় অন্তরালে মাদক ব্যবসায় সাথে জড়িত রয়েছে। এদিকে বাবুরহাট বাজারে স্মৃতি ট্রেডার্সে তালা খুলে চুরির ঘটনায় বাজারের পাহারাদাররা সম্পৃক্ত রয়েছে বলে অনেক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন।
বাবুরহাট বাজারে ৯ জন পাহারাদার থাকা সত্ত্বেও কিছুদিন পরপর ও চুরি হওয়া ঘটনা জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বাবুরহাট বাজার কমিটি প্রতি দোকানদারের কাছ থেকে ১০০ থেকে ১৫০ টাকার পাহারাদারের বেতন নিয়ে থাকে। তারা প্রায় ৬৫ হাজার টাকা দোকানদার কাছ থেকে প্রতি মাসে উঠান। প্রতি পাহারাদারকে ৪ হাজার টাকা ৯জনকে ৩৬ হাজার টাকা দিলেও বাকী টাকা আত্মসাৎ করে। বাবুরহাট বাজারে বেশ কয়েকবার দোকানে চুরি হওয়ার ঘটনায় বাজার কমিটি কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে অনেক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন। তারা আরো জানায়, বাজারে যেসব পাহারাদার রেখেছে তাদের বয়স ন্যূনতম ৫৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সী। তাদের মাধ্যমে কোন মতেই পাহারাদারের কাজ হবে না বলে তারা জানায়। দোকানে চুরি হওয়ার ঘটনায় মালিক পক্ষরা চাঁদপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানা যায়।