শওকত আলী:-
খালাতো বোন জ্যোৎস্না ফোন করে জানিয়েছিল তানজিলা আক্তার (৯) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। লাশ আনার ব্যবস্থা করছে। তখন লাশ পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরে পুলিশ তাদেরকেসহ লাশ থানায় নিয়ে গেছে। আমার ৪ মেয়ে এক ছেলের মধ্যে তানজিলা তৃতীয় মেয়ে। বাড়ির কাছে কোনো স্কুল না থাকায় বোনের বাড়িতে পড়ালেখা শিখার জন্যে দিয়েছিলাম। স্বামী পরের বাড়িতে শ্রমিকের কাজ করে- একনাখাড়ে কথাগুলো বললেন নিহত তানজিলার মা।
এই খুনের ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে আটক করেছে। বুধবার আটককৃতদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আটককৃতদের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিশু তানজিলা আক্তারের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্যে মর্গে প্রেরণ করেছে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ।
খুন হওয়া গৃহকর্মী সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বাঁশগাড়ী চর এলাকার তৈয়ব আলীর মেয়ে। সে নিতাইগঞ্জ কুলি বাগানে মাছ ব্যবসায়ী নান্টু হাওলাদারের বাড়িতে ৩বছর যাবত বাসায় কাজ করে আসছিল।
পুরাণবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম জানান, বাড়ির গৃহকর্তা নান্টু হাওলাদারের স্ত্রী জ্যোৎস্না বেগম (২৫), তার বাবা নুরু হাওলাদার ও ফুফা খালেক কুড়ালীকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত শিশু তানজিলার বাবা তৈয়ব আলী বেপারী বাদী হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি হত্য মামলা দায়ের করেন। মামলায় আটক ৩ জন ছাড়াও আরো ৩ জনের নাম উল্লেখ করে ৬ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়।
পুলিশ স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে বলেন, সোমবার দুপুরে তানজিলা স্কুলে যায় এবং খেলাধুলায় অংশ নেয়। কিন্তু রাতের বেলা অজ্ঞাত কারণে শিশুটি নিহত হলে ওই রাতেই লাশ দাফনের জন্যে প্রশাসনকে না জানিয়ে বাবা-মার কাছে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার তানজিলার সহপাঠীরা স্কুলে যাওয়ার জন্যে ডাক দিলে কোনো সাড়া শব্দ ছিল না। ঐ বাড়িতে তালাবদ্ধ থাকায় প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। বাড়ি থেকে সবাই পালিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে পুরাণবাজার ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং খোঁজ খবর নিয়ে বাঁশগাড়ী চরের ইউপি সদস্যের সহযোগিতায় শিশু তানজিলার লাশ উদ্ধার করে পুরাণবাজার পুলিশ ফাঁড়ি।
চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মেয়েটিকে খুন করে আত্মহত্যার কথা বলে চালিয়ে দিয়ে লাশ গুম করার চেষ্টা করা হয়েছিল। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে তদন্ত কাজ চলছে।