ঢাকা: জোটসঙ্গী জামায়াতের টানা দু`দিনের হরতাল শেষে মঙ্গলবার বিএনপির নিজের ডাকা দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল শুরু হয়েছে। সরকারের দুর্নীতি, দুঃশাসন, নির্যাতন, নিপীড়ন ও `গণহত্যা`র প্রতিবাদে এ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে।
সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত হরতালের সমর্থনে কোনো পিকেটিংয়ের খবর পাওয়া যায়নি। পাওয়া যায়নি কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবরও।
গত শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ১৮ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াত ইসলামী বিএনপির এ হরতালে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে। সোমবার রাতে দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান এক বিবৃতিতে এ সমর্থনের কথা জানান।
সমর্থন দেওয়া হয়েছে আরেক শরিক ইসলামী ঐক্যজোটের পক্ষে। সোমবার ইসলামী ঐক্যজোটের কেন্দ্রীয় নেতাদের এক জরুরি সভায় মঙ্গলবারের হরতালে সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।পরে তা বিবৃতির মাধ্যমে জানানো হয়।
এদিকে হরতালের আগের রাতে গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়ছে। পল্টন থানা ও নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সন্ধ্যার পর থেমে থেমে ককটেল বিস্ফোরিত হয়। পুলিশ ও র্যাব সেখানে কয়েক দফা ফাঁকা গুলি চালিয়েছে। রামপুরা বিটিভি ভবনের সামনের সড়কে কয়েকটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে মিরপুরের প্রজন্ম চত্বর এলাকাতেও। কয়েকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার বাইরে সিলেট রেল স্টেশন, চট্টগ্রামের বাড়বকুণ্ড রেল স্টেশনে আগুন দেওয়া হয়েছে। গাজীপুরে দুটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এর আগে ভারতের রাষ্ট্রপতি অবস্থানের কারণে হরতালে পুলিশের কড়া নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যেও সোনারগাঁও হোটেলের সামনে একটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়। বিকালে কমলাপুর রেলস্টেশনে একটি ট্রেনে আগুন দেয় হরতালকারীরা। এতে কয়েকটি বগি পুড়ে যায়।
হরতালে নাশকতা ঠেকাতে সোমবার সন্ধ্যায় মাঠে নেমেছে বিজিবি। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর থাকবেন পুলিশ, র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় দশ হাজার সদস্য। তাৎক্ষণিক সাজা দিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দশটি টিম কাজ করবে।
সোমবার এক বিবৃতিতে হরতাল পালন করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। হরতাল প্রতিরোধে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলো। জামায়াতের হরতালে প্রতিরোধের ডাক দিলেও `গণতান্ত্রিক দল` হওয়ায় বিএনপির হরতালের বিরুদ্ধে কোনো অবস্থানে থাকবে না বলে জানিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ।
হরতালের আওতামুক্ত : জরুরি সেবায় নিয়োজিত হাসপাতাল ও ক্লিনিকের অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি, সংবাদপত্রের যানবাহন অবরোধের আওতামুক্ত থাকবে। এ ছাড়া বাংলাদেশে বিদেশি কূটনৈতিক মিশনের এবং সামরিক বাহিনীর যানবাহনও কর্মসূচির আওতাবহির্ভূত থাকবে। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ এ কথা জানিয়েছেন।