চাঁদপুর শহরে স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে থেকে তৈরি হওয়া বিকেলের বাজার বলে খ্যাত মরহুম করিম পাটওয়ারী সড়কের বিপনীবাগ বাজার। এ স্থানটি একসময় ডোবা আর নর্দমায় পরিণত ছিল।
এখানে বর্তমান স্বর্ণখোলার হরিজন পল্লীর হরিজন বসবাস করতো। তৎকালিন চাঁদপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান মরহুম আব্দুল করিম পাটওয়ারী ১৯৭৪-৭৫ সালে স্বর্ণখোলায় স্থানটিতে হরিজনকে পল্লী করে বিপনীবাগ থেকে তাদের সরিয়ে নিয়ে যান। আর তিনি এ ডোবা নালা ভরাট করে এটিকে বাজারে পরিণত করেন। চাঁদপুর শহরের নতুন বাজারে ৩টি বাজার রয়েছে।
পালবাজার, নতুনবাজার আর বিপনীবাগ বাজার। এরমধ্যে পালবাজার আর নতুনবাজার খুব সকাল থেকেই বাজার মিলে থাকে। কিন্তু বিপনীবাগ বাজারে সকালে তেমন একটা বাজার মিলে না। শুধু স্থায়ী দোকানীরা তাদের মুদি মালের দোকান খুলে থাকে। কিন্তু মাছ-তরকারি কারণে তেমন একটা বিক্রি সকালে হয় না। তবে প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে নতুনবাজারে ও পালবাজারের মাছ বিক্রেতারা এই বাজারটিকে সরগম করে তোলে। এমন কি চাঁদপুর সদর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে জেলেরা মাছ নিয়ে বিকেলে এই বাজারে চলে আসে। বিপনীবাগ বাজারটি চাঁদপুর পৌরসভার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। বিপনীবাগের মাছ বাজারটি পৌরসভা কর্তৃক ইজারা দেয়া হয়ে থাকে। আর ইজারা দারের লোকেরাই বিকেলে মাছ বাজারটি দেখা শোনা করে। প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে শহর ও আশ-পাশের গ্রামাঞ্চলে মানুষ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাছ ধরে পাইকারি ও খুচরা মাছ বিক্রি করতে বিপনীবাগ বাজারে নিয়ে আসে।
বিপনীবাগ বাজারটি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর মাছ বাজারটি প্রথমে একটু অন্তরালে ছিল। বর্তমানে তা মরহুম আঃ করিম পাটওয়ারী সম্মুখ ভাগে নিয়ে আসা হয়েছে। প্রতিদিন সকালে বিপনীবাগ বাজারটি জমজমাট না হলেও প্রতিদিন দুপুর ৩টার পর থেকে মাছ বাজারটি জমে উঠতে শুরু করে। এ বাজারটি প্রতিষ্ঠা করতে মরহুম আঃ করিম পাটওয়ারী বহু ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। আজ সেই বিপনীবাগ বাজারটি জমজমাট হয়ে উঠেছে। প্রায় ১০-১৫ বছর ধরে মাছ বাজার এ সম্মুখ ভাগে আনা হয়েছে, শুধু মাত্র ক্রেতার সুবিধার্থে। বিপনীবাগ বাজারে প্রায় অর্ধশতাধিক মাছ বিক্রেতা ব্যবসা করে যাচ্ছে। তাছাড়া এমন কিছু মাছ বিক্রেতা রয়েছে তারা মৌসুমী ব্যবসায়ী। দুপুরের পর থেকে ৪/৫ জন পাইকারের কাছে নদীতে ও খালে-বিলে জাঁক ফেলে জেলেরা মাছ ধরে সিএনজি স্কুটার, আটোবাইক ও রিক্সা যোগে এ বাজারে বিক্রির জন্য ছুটে আসে। বিপনীবাগ বাজারের পুরানো মাছ বিক্রেতা ফারুক, হাসান, মিন্টু, আবদুল গনি, বাদশা মিয়া, পরিমল, গণেশ, নুরু, আবদুল রাজ্জাক, শহীদ মুন্সী, দীপক দাস, হোসেন, তাফাজ্জল হোসেন, আমির হোসেন, সমির মুন্সী দীর্ঘ বছর ধরে এ বাজারে মাছের ব্যবসা করে আসছে।
তারা জানায়, প্রতিদিন বিকেলে অফিস আদালতের লোকজন দিনের কাজ শেষ করে বাসায় ফেরার পথে এ বাজার থেকে তারা সদাই করে বাসায় ফিরে। ক্রেতা সাধারণ জানায়, এ বাজারে আমরা সদাই করে তৃপ্তি পেয়ে থাকি। মাছ থেকে শুরু করে তরকারি বিকেল হলে তরতাজা কিনতে পাই। পন্যের দাম উঠা নামা করলেও সদাই করে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়।
শিরোনাম:
বুধবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৭ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।