মিজান লিটনঃ-
গত কয়েক সপ্তাহের অসহনীয় লোডশেডিংয়ে বিরক্ত হয়ে অবশেষে পল্লী বিদ্যুতের কয়েক হাজার গ্রাহক গতকাল বৃহস্পতিবার বাকিলায় সড়ক অবরোধ করেছে। এতে সকাল পৌনে ১১টা থেকে পৌনে ২টা পর্যন্ত টানা ৩ ঘণ্টা চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। ঘটনাটি ঘটেছে উক্ত সড়কের হাজীগঞ্জের বাকিলা বাজারে। পরে পুলিশ অবরোধকারীদেরকে সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
গতকাল সকাল পৌনে ১১টায় দল মত নির্বিশেষে বিদ্যুৎ গ্রাহকরা একত্রিত হয়ে প্রথমে বাকিলা বাজারে জড়ো হয়। এ সময় বাকিলা বাজারের আশপাশ এলাকার কয়েক হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এলাকাবাসীর সাথে বাজারের অধিকাংশ ব্যবসায়ী সড়ক অবরোধে অংশ নেয়। এর ফলে সড়কের দু’পাশে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানবাহন আটকা পড়ে। যানবাহন আটকে যাওয়ায় কয়েক হাজার যাত্রী সাধারণকে অসহনীয় গরমে প্রচণ্ড ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ঘটনার প্রায় ১ ঘণ্টা পর হাজীগঞ্জ থানার এসআই আনোয়ার, এসআই শাহআলম ও এসআই হাবিব সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে বাকিলা বাজারে উপস্থিত হন। পুলিশের এই কর্মকর্তারা অবরোধকারীদের বার বার বুঝাতে ব্যর্থ হন। অগত্যা পুলিশকে চুপচাপ বসে থাকতে দেখা যায়। এর মাঝে প্রশাসন ও বিদ্যুৎ সমিতির উপরস্থ কোনো কর্মকর্তাকে অবরোধস্থলে উপস্থিত হতে দেখা যায়নি। ইতিমধ্যে অনেকটা সময় অতিবাহিত হওয়ার পর প্রচণ্ড গরমে অধিকাংশ অবরোধকারী যার যার ভাবে সড়ক থেকে চলে যায়। দুপুর ২টার কিছু পূর্বে অবশিষ্ট অবরোধকারীদের সাথে পূর্বে আসা পুলিশ কর্মকর্তাদের আলোচনার পর অবরোধকারীরা সড়কের প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে দিলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
জানা যায়, সামপ্রতিক সময়ে জেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে অসহনীয় পর্যায়ে লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। এ কারণে পল্লী বিদ্যুতের হাজার হাজার গ্রাহকের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করে আসছে। অসহনীয় লোডশেডিংয়ের কারণে বিদু্যতের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা রীতিমতো পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
অবরোধকারী বাকিলা বাজারের বেশ কিছু ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা জানান, পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং সব সময় আছে, থাকবে এটা আমরা জানি। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সীমাহীন ও অসহনীয় লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। এতে করে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য লাটে উঠার উপক্রম হয়েছে। তাই আমরা সহনীয় পর্যায়ে লোডশেডিং দেয়ার দাবিতে আজকের অবরোধে নামি।
চাঁদপুর পল্লী বিদু্যৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার একেএম সামছুদ্দিন হায়দার চৌধুরী জানান, সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে সেটা পুলিশ দেখবে। আমরা জাতীয় গ্রীড থেকে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ পাই তার সবটাই সাব স্টেশনগুলোতে ভাগ করে দেই। বিদ্যুৎ ব্যবহার বেশি হলে আমাদের বিদ্যুৎ সমিতির আয় বাড়ে, তাহলে আমরা কেনো বিদু্যৎ বন্ধ রেখে সমিতির লোকসান গুণতে যাবো।