প্রতিনিধি
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের বিভিন্ন দাবি আদায়ে সারাদেশব্যাপী সড়কপথ, নৌপথ ও রেলপথে অনির্দিষ্টকাল অবরোধের পাশাপাশি দফায় দফায় হরতাল চলাকালীন সময়ে, সড়ক পথে গাছ কেটে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, টায়ার জ্বালিয়ে আগুন, পিকেটারদের হামলা ও নাশকতার আশঙ্কায় দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ রয়েছে সড়ক পথে চাঁদপুরের সাথে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, রায়পুর, কচুয়াসহ আরো কয়েকটি সড়কের বাস চলাচল।
এ রোডগুলোতে নিয়মিত শতাধিক যাত্রীবাহী বাস চলাচল করছে। অনির্দিষ্টকালের হরতাল অবরোধের কারণে সড়ক পথে চাঁদপুর থেকে এ সকল রোডে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ থাকায় এর সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় ৫ শতাধিক বাস শ্রমিক ও তাদের পরিবারগুলো অর্ধাহারে অনাহারে মানবেতর জীবনযাপনের শিকার হচ্ছে। অপরদিকে মালিকপক্ষ তাদের পরিবহনের লোন পরিশোধ, শ্রমিকদের প্রতিদিনের খোরাকি জোগান দিতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছে। হরতাল অবরোধে পিকেটারদের হামলার শিকার হয়েছে চাঁদপুরের প্রায় অর্ধশত বাস। যার ক্ষতির পরিমাণ অর্ধকোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে মালিক পক্ষ জানায়। গতকাল ১০ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার শহরের স্বর্ণখোলা পৌর বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, অনেক পরিবহন শ্রমিক কাজ না থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছে। এদের কয়েকজনের সাথে আলাপ করলে তারা জানায়, অনির্দিষ্টকাল অবরোধ ও হরতালের কারণে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে অর্থাভাবে, অনাহারে মানবেতর দিন যাপন করতে হচ্ছে। কনকনে শীতে স্ত্রী-সন্তানদের গরম কাপড় কিনে দিতে পারছে না।
তারা আরো জানায়, প্রতিনিয়ত মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেই পরিবহন লাইনে তাদেরকে রুটি-রুজি করতে হয়। এভাবে অনির্দিষ্টকাল হরতাল অবরোধ চলতে থাকলে তারা স্ত্রী সন্তান নিয়ে বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে। কয়েকজন পরিবহন মালিকদের সাথে আলাপকালে তারা জানায়, অবরোধ হরতালে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে পিকেটারদের হামলায় চাঁদপুরের অর্ধশতাধিক পরিবহন ভাংচুরের শিকার হয়েছে। যার ক্ষতির পরিমান অর্ধকোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। দীর্ঘদিন পরিবহনগুলো বন্ধ থাকার ফলে গাড়ির ইঞ্জিন ও ব্যাটারিসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশে বড় ধরনের যান্ত্রিক ত্র“টি দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ পরিবহনের উপর মোটা অঙ্কের ঋণ নেয়া আছে, সময় মত ঋণ পরিশোধ করতে পারছিনা। শ্রমিকদের মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের চলার মতো অর্থ যোগান দিতে নিয়মিত হিমশিম খেতে হচ্ছে। দিনের পর দিন এভাবে হরতাল অবরোধ চলতে থাকলে মালিক পক্ষ আর্থিক ভাবে যে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে, তা পুষিয়ে উঠতে বহু সময় লেগে যাবে। বাস টার্মিনালের অভ্যন্তরে বহু ওয়ার্কশপ, খাবার হোটেল ও বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও চরম হতাশার মধ্যে রয়েছে। পরিবহনগুলো বন্ধ থাকায় ওয়ার্কশপগুলোতে তেমন কোন কাজ হচ্ছেনা। পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও যাত্রী সংশ্লিষ্ট খাবার হোটেলগুলো এবং বিভিন্ন স্টেশনারী দোকানগুলোতে আগের মতো বেচা বিক্রি নেই।
তারা জানায়, অবরোধ হরতাল বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমাদেরকে চরম হতাশার মধ্যে থাকতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সকলের দাবি, সরকার ও বিরোধী জোট সারা বাংলাদেশের লাখ লাখ পরিবহন শ্রমিক, তাদের পরিবার ও জনসাধারণের কথা চিন্তা করে দ্রুত বর্তমান সঙ্কট থেকে উত্তোরণের জন্য দ্রুত প্রদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
শিরোনাম:
সোমবার , ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২৫ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।