বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বিল পরিশোধ না করে ‘পালিয়ে’ যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে অ্যাপোলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বুধবার সকালের দিকে ভাটারা থানায় এ জিডি করা হয় বলে বাংলামেইলকে নিশ্চিত করেন ওসি সরোয়ার হোসেন।
তিনি জানান, আজ সকালে অ্যাপোলো হাসপাতালের একজন সিকিউরিটি অফিসার থানায় এসে জিডিটি করেন। হাসপাতালের বিল পরিশোধ না করায় এ জিডিটি করা হয়।
ডিউটি অফিসার এএসআই হাবিবুর রহমান চাঁদপুর নিউজকে জানান, সকাল সোয়া ১০টার দিকে অ্যাপোলো হাসপাতালের সিকিউরিটি এক্সিকিউটিভ মো. শাহ আলম থানায় এসে জিডিটি করেন।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, গত ৪ জানুয়ারি থেকে রিজভী আহমেদ তাদের হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। গতকাল রাত পৌনে ৪টার দিকে হাসপাতালের নার্স লাভনী তার কেবিনে খোঁজ নিতে গিয়ে দেখতে পান তিনি সেখানে নেই। এরপর হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ-খবর নিয়েও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। তিনি হাসপাতালের কোনো বিলও পরিশোধ করেননি।
গুলশান জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) লুৎফুল কবির বাংলামেইলকে জানান, রাত ৩টার দিকে কাউকে কোনো কিছু না জানিয়ে রিজভী আহমেদ হাসপাতাল ত্যাগ করেন। তিনি হাসপাতালের কোনো বিলও পরিশোধ করেননি। এজন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভাটারা থানায় একটি জিডি করেছেন।
এদিকে পুলিশের প্রহরায় থাকলেও হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে যান বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে পুলিশ প্রহরায় ভর্তি ছিলেন তিনি। তবে তিনি এখন কোথায় অবস্থান করছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আবার বিএনপির দাবি পুলিশ তাকে অন্য কোথাও নিয়ে গেছে।
তবে অ্যাপোলো হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার মফিজুল ইসলাম চাঁদপুর নিউজকে বলেন, ‘ভোর ৪টার পর থেকে রিজভী আহমেদকে পাওয়া যাচ্ছে না।’
হাসপাতাল ছাড়ার ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিকতার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘তিনি তো পালিয়ে গেছেন। আর কেউ পালিয়ে গেলে, আনুষ্ঠানিকতা করবো কী করে?’
পুলিশের গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) সাইদুর রহমান বাংলামেইলকে বলেন, ‘ওনি পালাবেন কেন? সুস্থ হওয়ার পর ডাক্তার তাকে রিলিজ দিয়েছেন, তাই হয়তো তিনি হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন।’
রিজভীর ঘনিষ্ঠজন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-সম্পাদক প্রফেসর আমিনুল চাঁদপুর নিউজকে বলেন, ‘আমরাও শুনেছি রিজভী ভাই হাসপাতালে নেই। কিন্তু তার সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারছি না। এতো পুলিশি প্রহরায় হাসপাতাল থেকে তিনি পালিয়ে যান কীভাবে? আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে অন্য কোথাও নিয়ে গেছে হয়তো।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বলেন, ‘আমরাই তো তাকে খোঁজছি। তিনি কোথায় আছেন আমরা জানি না।’
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রিজভী আহমেদ চাঁদপুর নিউজকে বলেন, ‘আমি আগের থেকে এখন অনেকটাই সুস্থ। আমাকে পুলিশ কোনো মামলায় আটক করেছে কি না এ বিষয়ে কিছুই জানায়নি।’ তার রুমের আশপাশে গোয়েন্দা ও পুলিশ সদস্যরা পাহারা দিচ্ছে জানিয়েছিলেন তিনি।
পুলিশের গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান চাঁদপুর নিউজকে বলেন, ‘আমরা তো তাকে আটকই করিনি। তিনি যদি চলে গিয়ে থাকেন তাহলে সেটা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিষয়।’
উল্লেখ্য, গত শনিবার রাতে ডিবির একটি দল নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে অসুস্থ রিজভী আহমেদকে ধরে নিয়ে যায়। ডিবির দাবি, রিজভী অসুস্থ থাকায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে আটক করা হয়নি।