বিয়ের কাজে আনুষ্ঠানিকতা শেষে পুরো প্যান্ডেলটি সরিয়ে নিলেও অজ্ঞাত কারণে বিয়ের গেট না সরিয়ে রাতের আঁধারে তাতে আগুন ধরিয়ে প্রতিপক্ষ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটি পরিবারকে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর আগে বিয়ের প্যান্ডেল করার অজুহাতে ওই সংখ্যালঘু মধু দেবনাথের পরিবারের সৃজনকৃত গাছ কেটে নেয়া, রান্না ঘর পুড়িয়ে দেয়া এবং ওই পরিবারের তিন সদস্যকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ রয়েছে, ওই ঘটনাকে পাশ কাটাতে বিয়ের গেটে আগুন ধরানোর এই পরিকল্পনা এঁটেছে বাবুল খানরা। সংবাদ পেয়ে বুধবার বিকেল ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন চাঁদপুর জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান এক্য পরিষদ, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপনব ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান এক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ এবং তাদের সফরসঙ্গী সাংবাদিকবৃন্দ।
ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ৪নং সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়নের তাশাসন গ্রামের পৈত্রিক সূত্রে বসবাসরত মধু দেবনাথ গংয়ের সাথে ক্রয়সূত্রে বসবাসকারী বাবুল খানদের দীর্ঘদিন থেকেই জমিজমা নিয়ে প্রায়শই ঝগড়াঝাটি লেগে থাকতো। একই বাড়ির বাসিন্দা হলেও উভয় পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক শীতল ছিলো। সর্বশেষ বাবুল খানের ছোট মেয়ে আস্টা মহামায়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী হাওয়া আক্তার ইতির বিয়ের প্যান্ডেল নির্মাণ নিয়ে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে।
বাবুল খান তার মেয়ের বিয়ের প্যান্ডেল নির্মাণ করতে মধু দেবনাথের সৃজনকৃত গাছ কাটা, বাধা দেয়ায় রান্না ঘরে আগুন এবং ওই পরিবারের তিন সদস্যকে পিটিয়ে আহত করেছে বলে থানায় লিখিত অভিযোগ করে মধু দেবনাথ। অভিযোগ পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ঘটনার জের হিসেবে গত ১০ নভেম্বর হাওয়া আক্তার ইতির বিয়ে শেষে পুরো প্যান্ডেল খুলে ফেললেও অজ্ঞাত কারণে ওই বাড়ি থেকে প্রায় দুশ’ গজ দূরে নির্মাণ করা বিয়ের গেটটি রেখে দেয়। যা ওই রাতেই পোড়ানো হয়। পরদিন মধু দেবনাথ গং এই গেট পুড়িয়েছে অভিযোগ তুলে ফরিদগঞ্জ থানায় পাল্টা লিখিত অভিযোগ করেন বাবুল খান নিজেই।
এ ব্যাপারে মধু দেবনাথ সংবাদকর্মীদের জানান, একই বাড়িতে থাকার কারণে আমাদের মধ্যে সোহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকার কথা থাকলেও ওই পরিবারের লোকজন গত ১৭/১৮ বছর ধরে আমাদের হয়রানি ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে। অন্যদিকে বাবুল খান জানান, মধু দেবনাথের পরিবারটি খারাপ প্রকৃতির। এলাকার কোনো মানুষজনের সাথে সুসম্পর্ক নেই। আমার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান উপলক্ষে তাদের ঝোঁপঝাড়গুলো সরিয়ে দেয়াতে তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। তবে তিনি সৃজনকৃত গাছের ডালপালা কাটার কথা স্বীকার করে বলেন, ওই জায়গাটি তার।
বুধবার বিকেলে পরিস্থিতি দেখতে যান চাঁদপুর জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডঃ বিনয় ভূষণ মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ রনজিত রায় চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান এক্য পরিষদ নেতা বাসুদেব মজুমদার, চাঁদপুর সদর হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক বিমল চৌধুরী, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপনব পরিষদের সভাপতি হিতেশ চন্দ্র শর্মা, সাধারণ সম্পাদক লিটন কুমার দাস, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তপন মজুমদার, সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক নারায়ণ রবিদাস, সদস্য মানিক চন্দ্র দাস মঙ্গল, তমাল পাল প্রমুখ।