ইকবাল আজিজ শাহীন: আজ সত্যি সত্যিই আমি একা হয়ে গেলাম বন্ধু, তোর আমার গ্রাম ছিলো পাশাপাশি কিন্তু একজন আরেক জনের জন্য ছিলাম অন্তঃপ্রাণ এটা কচুয়ার আওয়ামীলীগের প্রায় সবাই জানে, কতো নেতা তোকে আমাকে আলাদা করার চেষ্টা করেছে সেই কাজী তাজুল ইসলাম বিএসসি থেকে শুরু করে অনেকে কিন্তু পারেনি বন্ধু ! তুই চাইলে আমাকে অনায়াসে ছেড়ে ভালো থাকতে পারতিস কিন্তু ছেড়ে যাসনি! কত খুনসুটি হয়েছে তোর সাথে কিন্তু না! একে অপরকে বুঝতে পারলাম, কেউ বুঝতে পারুক আর না পারুক।
২০১১ সালে যখন আমি পৌর সভার কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচন করবো ০২ নং ওয়াড থেকে, দল নমিনেশন দিলো না, অথচ ২০০৪ সালে আমি জোট সরকারের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে যখন নির্বাচন করলাম তখন কেউ নির্বাচন করার সাহস করলো না! কি দূরভাগ্য দলের সুসময়ে ভুলে গেলো নেতারা, তুই ভুলে যাস না আমায় বন্ধু। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর মনে হলো আমার চেয়ে বেশি খুশি তুই।
আজ তুই এই ভাবে চলে যাবি ? কি করে ভাবি বল তুই আর নেই, আজ কত কথা মনে পড়ে নজরুল ? কত রাত কাটিয়ে দিলাম নানান আলাপনে দু’জন। আজ আমায় এই ভাবে পেলে চলে গেলি কিছু বলে গেলি না বন্ধু ? এই বার যখন পয়লা রমজানে আমার বাবা এই দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলো, তোকে জানতে ভুলে গেলাম কিন্তু তুই সুজন,শাহীন, শিমুল সহ ঠিকঠাক আমার বাড়িতে গিয়ে হাজির, আর অনেকের জন্য কত কি না করলাম জোট সরকারের তান্ডবে বাড়ি ঘর ছাড়লাম আজ ক্ষমতায় আছে এক বারের জন্য একটা খবর ও নিলো না!
তোকে দেখেছি মনে হয় আমার একটা ভালো খবর পেলে আমার চেয়েও বেশি খুশি তুই হতিস। কোন খারাপ খবর শোনলে কেউ বলার আগে হাজির হয়ে দাঁড়িয়ে যাইতে আজ আর কে আমায় এই ভাবে ছায়া দিবে বন্ধু ? তোকে যখন ২০১৫ সালে বললাম তুই এই বার ০১ নং ওয়াড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচন করবি, মেয়র নির্বাচন এটা সময় না, অনেক কথা হলো তুই রাজি হয়ে গেলি, সেই দিন ও আমার কথা জানতে চাইলি আমি কি করবো ? আমি তোকে বলেছিলাম, আমি অজানার পথে পাড়ি দেবো, তুই চুপসে গেলি শুধু এই টুকু বললি তুই যা ভালো মনে করিস কর। আজ আর কেউ আমাকে এই ভাবে বলবে নারে বন্ধু !
শিশির ভাই যখন প্রথম উপজেলা নির্বাচন করতে কচুয়া গেল, শিশির ভাইয়ের বন্ধুরা থাকবে কোথায় তোকে ফোন দিলাম তোর বাড়ির চাবি কই ? তুই একবারে জন্য জানতে চাইলি না কেন শুধু বললি আমি বড় ভাবি কে ফোন দিয়ে বলছি তোকে বাড়ির চাবি দিয়ে দিতো, শিশির ভাইয়ের বন্ধুদের নিয়ে হাজির হওয়ার আগে বাদল চাবি নিয়ে হাজির, ঘর খুলে সব তৈরি করে বললো কাকা আর কিছু লাগবে কি না ? নজু কাকাকে একটা ফোন দিয়ে বলে দেন না হয় কাকা রাগ করবে, আমি সত্যি অবাক হয়ে ছিলাম বন্ধু !
কেউ কি কাউকে এই ভাবে বাড়ির চাবি দিয়ে দেয় ? অথচ শিশির ভাই একজনকে বলে রেখে ছিলো ওনার বন্ধুরা আসবে, তাদের বাসায় থাকবে, শিশির ভাইয়ের বন্ধুরা যখন কচুয়া বিশ্বরোড তখন আর ফোন ধরেনি অনেক পর ফোন ধরলো তার বাবা আর বললো সাব ঘুমিয়ে পড়েছে। তুই সেই দিন এগিয়ে না এলে কি হতো ! সাইফুল ভাই, বিমান দা,সাজু ভাই, আলতাফ ভাই আজও দেখা হলে বলে, আর শিশির ভাই চেয়ারম্যান হওয়ার পর আমরা দূরে চলে এলাম আর যাঁরা সেই দিন রাতে ফোন ধরেনি তাঁরা কত কাছে ছিলো, এই জন্যই মনে হয় শিশির ভাইয়ের এই হাল ! তুই ত চলে গেলি বন্ধু আজ কত কথা মনে পড়ে নজরুল কত কথা ! মনে হয় একটা মহা কাব্য লিখতে পারবো তোর আর আমার গত দুই যুগের কথা –
চলবে…