সব পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ এবং সব পোর্টাল রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা হচ্ছে। সে লক্ষ্যে জাতীয় অনলাইন গাণমাধ্যম নীতিমালা-২০১৪ প্রণয়ন করছে তথ্য মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে তৈরি করা হয়েছে খসড়া। নীতিমালার পরিপন্থী সংবাদ, কার্টুন, ছবি, বিজ্ঞাপন, ধর্ষণের দৃশ্য ধারণ ও প্রচার, অশোভন দেহভঙ্গিসহ অমানবিক বিষয়গুলো প্রচার করা যাবে না। নামমাত্র ফি নিয়ে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন নেয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে কোনো টাকার অঙ্ক উল্লেখ করা হয়নি। আইন ও বিধিবিধান তৈরি পর্যন্ত তথ্য মন্ত্রণালয় ও তথ্য অধিদফতর অনলাইন কার্যক্রম তদারকি করবে। অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদসহ যাবতীয় বিষয় তদারকির জন্য একটি অনলাইন গণমাধ্যম কমিশন গঠন করবে সরকার।
জানা গেছে, অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালার খসড়া তৈরি করেছে আইটি বিশেষজ্ঞ মোস্তফা জব্বারের নেতৃত্বে একটি কমিটি। এখন সব সুপারিশ যাচাই-বাছাইয়ের পর্যায়ে রয়েছে। নীতিমালাটি প্রণয়নে সম্পৃক্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যেখানে-সেখানে অনলাইন সংবাদ সংস্থা গড়ে উঠেছে। প্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নতিতে এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে এসব নিয়ন্ত্রণে কার্যকর আইন ও বিধিবিধান থাকা দরকার। অনলাইন গণমাধ্যম সুষ্ঠু নীতিমালার আওতায় না আনা গেলে অশুভ পরিণতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
একটি প্রতিষ্ঠানের নামে অপর প্রতিষ্ঠান (ডোমেইন) রেজিস্ট্রেশন দেয়া যাবে না। রেজিস্ট্রেশন দেয়ার আগে তা জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম কমিশন থেকে যাচাই করে নিতে হবে। একই নামে দেশে কোনো দৈনিক কিংবা সপ্তাহিক পত্রিকা নেই। এ কারণে একই নামে একক অনলাইন প্রাতষ্ঠানও রাখা ঠিক হবে না। বস্নগারদের রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা হবে। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কাউকে পোর্টাল, ব্লগ নির্মাণ, সংবাদ-ফিচার কিংবা কোনো লেখা ছবি ও কার্টুন প্রকাশ করা যাবে না। অনলাইনে জনবল নিয়োগের নির্দিষ্ট কাঠামো থাকবে। নির্দিষ্ট সংখ্যক জনবল থাকলেই রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার উপযুক্ত হবে। নির্দিষ্ট অফিস স্পেস থাকতে হবে। কর্মচারীদের বেতন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পরিশোধ করতে হবে। জাতীয় ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদ মেনেই তাদের বেতন-ভাতা নির্ধারণ ও পরিশোধ করতে হবে। এসব শর্ত মানলেই কেবল রেজিস্টার্ড অনলাইন প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি বিজ্ঞাপন প্রকাশের অনুমতি পাবে।
যে কারণে নীতিমালা দরকার : গণতন্ত্র, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, আন্তর্জাতিক নীতি, নিরপেক্ষতা, ব্যক্তির ব্যক্তিগত অধিকারের গ্যারান্টি নিশ্চিত করা এবং অনলাইন গণমাধ্যমের মান উন্নয়নের জন্য নীতিমালা দরকার। সরকারি ও বেসরকারি অনলাইন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় উন্মুক্ত ও সুষম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি, রেজিস্টার্ড অনলাইন গণমাধ্যম একটি কাঠামোয় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অনলাইন গণমাধ্যম বলতে বাংলা, ইংরেজিসহ অন্য কোনো ভাষায় জনগণের জন্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভিডিও, অডিও, টেঙ্ট, অথবা মাল্টিমিডিয়ায় তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ কিংবা সম্প্রচারকারী সংস্থাকে বেঝোবে।
লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক : লাইসেন্স ফি হবে নামেমাত্র। সব প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে এ ফির পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে। থাকবে অনলাইন গণমাধ্যম আইন, নীতিমালা ও বিধিমালাও। লাইসেন্সপ্রাপ্ত সব প্রতিষ্ঠান সরকারের কাছে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য হবে। সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, রাষ্ট্র পরিচালনার মূল নীতি, রাষ্ট্রীয় আদর্শ এবং নীতিমালা সমুন্নত রাখতে হবে। অনলাইনে বিজ্ঞপন প্রচারেও কঠোর নিয়মনীতি আরোপ করা হচ্ছে। পাঁচ বছরের নিচে কোনো শিশুকে বিজ্ঞাপনের মডেল করা যাবে না। শিশুর জন্য মায়ের দুধের বিকল্প নেই- কথাটি গুরুত্ব সহকারে ৫ সেকেন্ড এবং গুঁড়া দুধ এক বছরের কম বয়সী শিশুর জন্য নয়- বিজ্ঞাপনটি ৫ সেকেন্ড করে প্রচার করতে হবে।