প্রতিনিধি
চাঁদপুর শহরের একমাত্র বিনোদনের স্থান শহর রক্ষা বাঁধ বড়স্টেশন মোলহেড। ঘুরতে আসা সব বয়সী পর্যটকদের দাবি এই স্থানে যেন নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ বক্স নির্মাণ করা হয়। চলতি বছরে চাঁদপুর পৌরসভা এই বিনোদনের স্থানে ব্যাপক মহা উন্নয়নের জন্য ২ কোটি টাকার কাজে হাত দিচ্ছে। বড়স্টেশন মোলহেডে দূর দূরান্ত থেকে ঘুড়তে আসা ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা নানা সময় নানা বিপত্তির মাঝে পড়তে হয়। এমন বিপত্তির মধ্যে রয়েছে বখাটেপনা, ছিনতাই, ইভটিজিংসহ নানান বাধা বিপত্তি।
প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পাশ্ববর্তি জেলা নোয়াখালি, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা থেকে অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন রিজার্ভ করে বড় স্টেশন মোলহেডের এই বিনোদন স্পটটিতে সময় কাটাতে ছুটে আসে। সকালে স্কুল কলেজে পড়–য়া ছাত্র ছাত্রীরা তাদের মনের মানুষকে নিয়ে ডেটিং করতে আর গল্প করে সময় কাটাতে এই স্থানে এসে থাকে। আর তখনই এরা বেশি সমস্যার সম্মুখিন হয়। শহরের কিছু বখাটে যুবক এদের সাথে ইভটিজিং, চুরি, ভ্যানিটিব্যাগ ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে বড় স্টেশন মোলহেডে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় পর্যাপ্ত পর্যটক এখানে বিনোদন করে সময় কাটাচ্ছে। সিএনজি স্কুটার, মাইক্রোবাস, মোটর সাইকেল, প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন পরিবহন নিয়ে পর্যটকরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে এই স্থানে ছুটে এসেছে। এর একটাই কারণ সকালের পূর্বাকাশের টকটকে লাল সূর্যটা যখন পদ্মা মেঘনার গহিন জলে দিনের ক্লান্তি শেষে ডুবে যায়। সেই সময়ের দৃশ্যটি স্মৃতির পাতায় ক্যামেরার মাধ্যমে বন্দি করতে। আবার অনেক পর্যটক মেঘনার উত্তাল ঢেউয়ে নৌকা নিয়ে ভ্রমণ করে বিকেলের সময়টুকু পাড় করে। অন্যান্য দিনের চেয়ে প্রতি শুক্রবার বিকেলে বড় স্টেশন মোলহেডে পর্যটকদের পদচারণায় এই বিনোদনময় স্থানটি মুখরিত হয়ে উঠে।
মোলহেডে বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য নাগরদোলা, মেড়ি ঘোড়ার চক্কর স্থাপন করা হয়েছে। একই স্থানে বসেছে বাচ্চাদের খেলনা সামগ্রীর স্টল, আর অগনিত চটপটি আর ফুসকার দোকান, এসব দোকানে পর্যটকরা বসে চটপটি আর ফুসকা খেয়ে গল্প করে সময় কাটিয়ে থাকে।
হাজীগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা এক দম্পত্তি জানায়, আমরা এ নিয়ে যত বার এই স্থানে এসেছি। আমরা আনন্দ উপভোগ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। মেঘনা নদীর উত্তাল ঢেউয়ের বুকে নৌকা নিয়ে ঘুরে বেশ মজা পেয়েছি।
চাঁদপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মাহমুদা আক্তার জানান, সে তার পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে এসেছে। সাথে তার খালাতো বোনরা রয়েছে। সে জানায়, চাঁদপুর শহরবাসীর পাশাপাশি অন্যান্য স্থানের লোকজন এখানে বিনোদন করতে এসে থাকে। তাই দূর দূরান্তের পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসন যদি এখানে একটি পুলিশ বক্স স্থাপন করে তাহলে পর্যটকরা নিরাপদে এখানে আনন্দ করতে পারবে। তাই আমরা পুলিশ সুপারের কাছে দাবী জানাবো যেন বড় স্টেশন মোলহেডে একটি পুলিশ ক্যাম্প অথবা পুলিশ বক্স স্থাপন করা হয়। একই দাবি জানালেন, ফরিদগঞ্জের রূপসা গ্রামের আবু খালেক, মতলবের রহিমা আক্তার, শিল্পী আক্তারসহ আরো অনেকে।
চাঁদপুর পৌরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আহ্বায়িকা ও মহিলা কাউন্সিলর ফরিদা ইলিয়াস জানান, চাঁদপুর পৌরসভার জেন্ডার কমিটি কর্তৃক বড়স্টেশনের এই বিনোদন স্পটে ৬০টি পাশ বেঞ্চ ও একটি আধুনিক গণশৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে। যাতে করে দূর দূরান্ত থেকে আসা পর্যটকরা এখানে বসতে পারে সে জন্যই এই বেঞ্চ নির্মাণ। ২টি বেঞ্চ নষ্ট হয়ে গেছে। গণশৌচাগরে দেখাশোনার জন্য নিজস্ব লোক রয়েছে। এছাড়া চলতি বছরে চাঁদপুর পৌরসভা কর্তৃক আরো ২টি কোটি টাকার মহা উন্নয়ন কাজ করা হবে। এই উন্নয়ন কাজে রয়েছে আরো ৩০টি পাকা বেঞ্চ নির্মাণ, রক্তধারা টাইল্স বসানো, ভেতরে উন্নত ঘাস দিয়ে রক্তধারা লেখা এবং গাড়ি পার্কিং করার স্থান নির্মাণ। ফরিদা ইলিয়াছ আরো বলেন, চাঁদপুর শহরের বিনোদনের আর কোনো স্থান না থাকায় প্রতিনিয়ত বড় স্টেশন মোলহেডে পর্যটকদের ভিড় রয়েছে। তাই এদের নিরাপত্তা দিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছি এখানে পুলিশ বক্স নির্মাণ করার।
শিরোনাম:
শনিবার , ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৩ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।