শওকত আলী ॥
চাঁদপুর শহরে সিজার করার পূর্বে পরীক্ষা নিরিক্ষা ছাড়া সিজার করায় সিজারিয়ান কালে প্রসুতির শরীরে ডায়াবেটিক থাকায় হার্ড এটাক হয়ে ভুল চিকিৎসায় হেলেনা আক্তার (২০) নামে প্রসুতির মৃত্যু হয়েছে বলে গাইনী চিকিৎসক তানিয়া জানান। প্রসুতির আত্বীয় স্বজন ও এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে হাসপাতাল ভাংচুর করেছে। প্রসুতি হেলেনা আক্তারের পরিবারের পক্ষ থেকে ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার পর হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ স্টাফরা পালিয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৯টায় শহরের স্টেডিয়াম রোডে আল-বারাকাহ হাসপাতাল এ- ডায়াগণস্টিক সেন্টারে এই ঘটনা ঘটে। নিহত হেলেনা আক্তার সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর বেপারীর স্ত্রী। এ ঘটনা নিয়ে কয়েক দফা সমজোতার চেস্টা চলছে। গতকাল বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত জানা যায়, এ ভুল চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জীবনের মূল্য ৩লক্ষ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানান, হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদ শাহরিয়ার পলাশ।
হেলেনার শ্বাশুড়ী কুলসুমা বেগম জানান, সকালে তার পুত্রবধুর প্রসব বেদনা হলে গ্রামের পল্লী চিকিৎসক কাদিরের পরামর্শে শহরের পল্লী মঙ্গল হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে চিকিৎসক তাকে দেখে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক না পেয়ে দালালের মাধ্যমে আল-বারাকাহ হাসপাতালে সকাল ১১টায় ভর্তি করেন। এরপর বিকেল ৫টায় হেলেনার সিজারিয়ানের জন্য ওটিতে নেয়া হয়।
হেলেনার চাচী শ্বাশুড়ী মনোয়ারা বেগম জানান, ২ ঘন্টা সিজারিয়ান শেষে কন্যা শিশুর জন্ম হয় এবং আমাদের কাছে নিয়ে আসে। হেলেনা সুস্থ্য আছে তাকে পরে বের করা হবে বলে নার্স ও স্টাফরা জানায়। দীর্ঘ ৪ ঘন্টা পর ওটি থেকে হেলেনাকে বাহির করে আনে কিন্তু তার কোন জ্ঞান ফিরেনি। এতে আমাদের সন্দেহ হলে হাসপাতালের স্টাফদের জিজ্ঞাসা করি। তারা আমাদের চাপে পড়ে হেলেনার মৃত্যু হয়েছে বলে জানায়। রাত ৯টায় হেলেনার স্বজনরা কান্নাকাটি শুরু করলে পর্যায়ক্রমে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফরা পালিয়ে যায়।
হাসপাতালের ভর্তি রেজিষ্টার এর লিখিত তথ্যানুযায়ী জানাযায় সিজারিয়ানের সার্জন ছিলেন ডাঃ শামসুন্নাহার তানিয়া এবং এনেসথেসিয়া দিয়েছেন ডাঃ আবিদ। এ বিষয়ে জানার জন্য ডাঃ শামসুন্নাহার তানিয়ার ব্যাক্তিগত মোবাইলে কথা বললে তিনি জানান, সিজারিয়ান কালে প্রসুতির শরীরে ডায়াবেটিক থাকায় হার্ড এটাক হয়ে। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদ শাহরিয়ার পলাশ জানান, আমি ব্যাক্তিগত কাজে ঢাকায় রয়েছি। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা ছাড়া কিছুই বলতে পারবো না।
চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মাহবুবুর রহমান মোল্লা জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে আমরা তাৎক্ষনিক পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। হাসপাতালের কোন দায়িত্বশীল ব্যাক্তিকে পাওয়া যায়নি। হাবিব মিজি নামে এক স্টাফকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত এবং রোগীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতক এখনো সুস্থ্য রয়েছে।