অপচিকিৎসার অভিযোগে একাধিক মামলার আসামী ভুয়া চিকিৎসক লিটন সরকার আবারও কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চাঁদপুর-এ লিটন সরকারের জামিন আবেদন করলে বিচারক রাজিব কুমার বিশ্বাস জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরনের আদেশ দেন।
অপচিকিৎসার অভিযোগ এনে গত ১৪ অক্টোবর লিটন সরকারের বিরুদ্ধে দন্ডবিধি ৪১৭/৪১৯/৩২৬ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের বাসিন্দা আবুল বাসার মাল। মামলা নং-১৭/২০১৫। সেই মামলায় বৃহস্পতিবার জামিনের আবেদন করেন লিটন সরকার।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর সদর উপজেলার সোবহানপুর গ্রামের মৃত মকরম মালের ছেলে আবুল খায়ের মাল পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে ভুয়া চিকিৎসক লিটন সরকারের সাথে যোগাযোগ করে পিষ্টলা রোগের চিকিৎসার জন্য সরনাপন্ন হয়।
চিকিৎসার জন্য রোগীর কাছ থেকে লিটন ৫০ হাজার টাকা দাবী করে। পরে ৩০হাজার টাকা চুক্তি হয় এবং তাকে পরিশোধ করে। লিটন চিকিৎসক না হয়েও তার শহরের ঘোষপাড়া বাসায় পিষ্টলা রোগের চিকিৎসা করতে গিয়ে পায়ুপথে চিকন লোহার রড কয়েকবার প্রবেশ করায় এবং মলম জাতীয় ঔষধ দিয়ে বেন্ডিজ করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। ওইদিন রাত থেকেই তার পায়ুপথে রক্তক্ষরণ শুরু হয় এবং অন্ডকোষ পুলে যায়। পরে তাকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং পরে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালসহ আরেকটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
মামলার বাদী আবুল বাসার জানান, লিটনের অপচিকিৎসার পর দীর্ঘ ১ বছর আমার ভাই আবুল খায়ের মালা ঢাকাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর এখনও সুস্থ্য করতে তুলতে পারেনি। তার পায়ুপথে এখন ক্যান্সারে পরিণত হয়ে মৃত্যুপথযাত্রী। স্থানীয়ভাবে লিটনের বিরুদ্ধে অপচিকিৎসার বিচার দাবী করে কোন সাড়া পাইনি। শেষ পর্যন্ত আইনের আশ্রয় নিতে হয়েছে। লিটন সরকার চাঁদপুরে বহু মানুষের কাছ থেকে অপচিকিৎসার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আমরা আদালতের আশ্রয় নিয়েছি। লিটন সরকারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
লিটন সরকার সদর উপজেলার মহামায়া দেবপুর এলাকার মৃত হারাধন সরকারের ছেলে। সে অনিয়মে চিকিৎসায় উপার্জিত অর্থে বিশাল বাড়িও করেছেন এলাকায়। ওই বাড়িতে একটি মিনি হাসপাতালও তৈরী করেছেন বলে স্থানীয়রা জানান। স্থানীয় ভাবে বহুমানুষ তার অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন। কিন্তু অভিযোগ নিয়ে গেলে রাজনৈতিক দলের নেতাদের নাম বলে সে হুমকি দেয়ার কারণে কেউ মুখ খুলতে পারেনি। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
উল্লেখ্য, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের মোস্তফা মালের ছেলে মাসুদ মালের এ ধরনের অপচিকিৎসা করার কারণে লিটন সরকার আটক হয়ে জেল হাজতে যায়। পরে জামিনে এসে সে এখন অনেক রোগীকে হুমকি ধমকি দেয়।