মতলব প্রতিনিধি
মতলব দক্ষিণ উপজেলার কালিকাপুর মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় মেয়ের মা রহিমা বেগম বাদী হয়ে মতলব দক্ষিণ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। গতকাল সোমবার ২২ ডিসেম্বর মেয়ের মা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে মোঃ মাসুদ রানাকে প্রধান আসামী করে মাতব্বরসহ বেশ ক’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র থানার অফিসার ইনচার্জের নিকট জমা দিয়েছেন বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
এদিকে শ্লীলতাহানির ঘটনার জরিমানার ৬ হাজার টাকা গত ৪/৫দিন পূর্বে এক মাতাব্বর থানার এসআই মোর্শেদুল আলম ভূঁইয়ার নিকট জমা দিয়েছে বলে জানা যায়। গত ২১ নভেম্বর রাতে কালিকাপুর মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণির ছাত্রীকে লক্ষ্মীপুর গ্রামের তার নিজ বাড়ির উত্তরে জমিনে নিয়ে শ্লীলতাহানি করে একই ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের প্রবাসী আঃ হান্নান সরকারের ছেলে মাসুদ রানা (২০)। মেয়ের বাবা ও মা বাড়িতে না থাকায় এবং অসহায় গরিব হওয়ায় ঘটনা রাতেই ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে এবং ৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে স্থানীয় মাতাব্বর কামাল, মফিজ, খলিল ও ফজলু মুন্সীসহ বেশ ক’জন। জরিমানা আদায়ের টাকা মেয়ে বা মেয়ের বাবা মা কাউকে না দিয়ে তা আত্মসাৎ করে ফেলে মাতাব্বররা। ঘটনার কয়েকদিন পর মেয়ের মা বাড়িতে এসে ঘটনা জানতে পেরে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে তার মেয়েকে শ্লীলতাহানি বিচার দাবি করে। কতিপয় মাতাব্বর তড়িঘড়ি করে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করে এবং জরিমানার ৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। কালিকাপুরের মাদ্রাসা ছাত্রীর শ্লীলতাহানির বিষয়ে ‘মতলবের ইজ্জতের মূল্য ৬ হাজার টাকা তাও ভাগাভাগি করে নিলেন তিন মাতাব্বর’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি গোচর হয়। পরে মতলব দক্ষিণ থানার ওসি কবির হোসেনের নির্দেশে দুজন সাব ইন্সপেক্টর দিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার তদন্ত করেন। বিষযটি সংবাদপত্রে প্রকাশ ও পুলিশ প্রশাসন অবহিত হওয়ায় ঘটনার মূল হোতা মাসুদ রানাসহ ঐ মাতাব্বররা মেয়ের বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন প্রকারের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে। এদিকে ঘটনার সমন্বয়কারী এক মাতাব্বর কামাল হোসেন জানান, জরিমানার ৬ হাজার টাকা থানায় জমা দেয়া হয়েছে। কার মাধ্যমে এবং কার নিকট জমা দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কালিকাপুরের ফজলু মুন্সির মাধ্যমে উক্ত টাকা দেয়া হয়। ফজলু মুন্সি জানান, কামাল আমার নিকট জরিমানার যে ৬ হাজার টাকা জমা দেয় তা আমি ৪/৫দিন পূর্বে থানার এসআই মোর্শেদুল আলম ভূঁইয়ার নিকট দিয়েছি।
থানার এসআই মোর্শেদুল আলম ভূঁইয়ার নিকট ৬ হাজার টাকা জমা দেয়া হয়েছে কি না এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোবাইলে টাকা সম্পর্কে কিছু বলা যাবে না। থানার অফিসার ইনচার্জ কবির হোসেনের নিকট কালিকাপুরের ছাত্রীর শ্লীলতাহানির বিষয়ে অভিযোগ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।