মতলব পৌরসভার ঢাকিরগাঁও মধু প্রধানীয়া বাড়ির রাসেল প্রধানীয়ার স্ত্রী হোসনেয়ারা পান্না (২৫) নামের এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী, শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পথে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ময়না তদন্তের জন্যে লাশ চাঁদপুর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। বিকেলে জানাজাশেষে গৃহবধূর লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
গৃহবধূর ভাই আদনান সরকার জয় জানান, আমার বোন হোসনেয়ারা আক্তার পান্নাকে ২ বছর আগে পৌরসভার ঢাকিরগাঁও এলাকার মধু প্রধানীয়া বাড়ির রাসেল প্রধানের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তার শ্বশুর বাড়িতে তাকে যৌতুক ও গহনার জন্যে তার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদ শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিলো। এরই মধ্যে আমার বোনের সুখের জন্যে তাকে কানের অলঙ্কার দেই। আরো নগদ অর্থ ও গহনার জন্যে ঘটনার দিন সকালে ভিটামিন ট্যাবলেট খাওয়ানোর নাম করে আমার সহজ-সরল বোনটিকে কেড়ির ট্যাবলেট খাইয়ে দেয়। পরে সে কয়েকবার বমি ও পেটের ব্যথায় কাতরালে অবস্থা বেগতিক দেখে আমাদের খবর দেয়। আমি আমার বোনকে ওই বাড়ি থেকে মতলব সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করি। হাসপাতালে আমার ভগ্নিপতি রাসেল প্রধান আমার বোনকে বলেছ যে, তোকে যে ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়েছে সেটা কাউকে বলবি না। দুপুরের দিকে আমার বোন আমার মাকে ঔষধ খাওয়ানোর বিষয়টি বললে আমরা চিকিৎসকের সাথে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করি। কর্মরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্যে তাকে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে পাঠায়। তবে পথিমধ্যে সে মারা যায়।
হোসনেয়ারা পান্নার পিতা মোঃ হারুন সরকার বলেন, আমার মেয়েটি সহজ-সরল ছিলো। জামাইকে বিভিন্ন সময় ব্যবসা করার জন্যে টাকা-পয়সা দিই ও মেয়েটাকে কানের গহনা দিয়েছি। কিন্তু আমার মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকেরা এভাবে কেড়ির ট্যাবলেট খাইয়ে আমার মেয়েকে মেরে ফেললো ! আমি প্রশাসনের কাছে আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
হত্যার বিষয়ে গৃহবধূর শ্বশুর বাড়ি ঢাকিরগাঁয়ে গেলেও বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে এলাকাবাসী গৃহবধূকে মারধর ও মানসিক নির্যাতনের কথাগুলো স্বীকার করেছে।
মতলব দক্ষিণ থানার ওসি স্বপন কুমার আইচ বলেন, হত্যার বিষয়টি জানতে পেরে লাশ ময়না তদন্তের জন্যে চাঁদপুর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে গৃহবধূর লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।