মতলব প্রতিনিধি
প্রেমের টানে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে-মেয়ে পালিয়ে গেলেও মেয়ের পিতা থানায় অপহরণ মামলা করেন। এ অপহরণ মামলার সূত্র ধরে পুলিশ নিখোঁজ হওয়া স্কুল ছাত্রী এবং তার প্রেমিককে উদ্ধার করেছে। মতলব দক্ষিণে স্কুল ছাত্রী পূর্ণিমা (১৪)কে অপহরণের অভিযোগে দু সহযোগীকে প্রথম আটক করে পুলিশ। আটক হওয়া শুক্কুর (১৬) ও আল আমিন (১৭)-এর দেয়া তথ্য অনুযায়ী পূর্ণিমা নিখোঁজ হওয়ার দুদিন পর গতকাল ২০ মে দুপুরে পূর্ণিমা ও তার প্রেমিক বাঁধন কবিরাজ (১৭)কে উদ্ধার করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মতলব দক্ষিণ থানার এসআই জহির। তাদের উদ্ধারের পর আটক তথ্য প্রদানকারী দুজনকে ছেড়ে দেয়া হয়। আর পূর্ণিমা ও বাঁধন এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। এদের মধ্যে পুর্ণিমা হিন্দু ধর্মের আর বাঁধন হচ্ছে মুসলিম।
মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ মে উপজেলার উপাদী উত্তর ইউনিয়নের উপাদী গ্রামের মধু মণ্ডল সিংহের কন্যা বোয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী পূর্ণিমা স্কুলে যাওয়ার পথে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পূর্ণিমার বাবা মধু মণ্ডল সিংহ তার সকল আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে মেয়ের কোনো সন্ধান না পাওয়ায় ঘটনার দিন রাতে মতলব দক্ষিণ থানায় একই গ্রামের মোবারক কবিরাজের ছেলে বাঁধন কবিরাজকে প্রধান আসামী ও ৫/৬ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্ত ভার দেয়া হয় এসআই জহির হোসেনের উপর।
গতকাল মঙ্গলবার অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলার খাদেরগাঁও ইউনিয়নের শুক্কুর (১৬) ও আল-আমিন (১৭)কে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জহির। থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল পূর্ণিমা ও অপহরণকারী বাঁধনকে নবকলস গ্রাম থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে পুলিশ। পূর্ণিমার বাবা সাংবাদিকদের জানান, যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের সাথে বাঁধনের আত্মীয় সম্পর্ক। তাদের সহযোগিতায় তার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। আটক হওয়া একজনের নাম অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে বলেও তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান। পূর্ণিমা গতকাল উদ্ধার হওয়ার পর ঐ মামলা রুজু করা হয়েছে বলে থানা সূত্রে জানা যায়। তবে এফআইআর কর্তৃক মামলার ৬ জনকে আসামী করা হয়েছে বলে জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা।
গতকাল মঙ্গলবার আটক হওয়া দু যুবককে কেনো আটক করা হয়েছিলো এবং কেনো ছেড়ে দেয়া হয়েছে এ সম্পর্কে কর্মকর্তা এসআই জহির জানান, অপহৃতা স্কুল ছাত্রী পূর্ণিমা কোথায় আছে এ বিষয়ে জানার জন্য শুক্কুর ও আল-আমিনকে আটক করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপহৃতা পূর্ণিমা ও অপহরণকারী বাঁধনকে নবকলস গ্রাম থেকে উদ্ধার করার পর শুক্কুর ও আল-আমিনকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এদিকে স্কুল ছাত্রী পূর্ণিমা জানায়, তার সাথে বাঁধন কবিরাজের দীর্ঘ প্রায় ৩ বছর যাবৎ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্ক গড়ে উঠার পর থেকেই পূর্ণিমা মনেপ্রাণে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। কোনো শক্তিই তাদেরকে পৃথক করতে পারবে না। এ ছেলের জন্য প্রয়োজনে জেলহাজতে জীবনযাপন করবে। তবুও একে অপরকে ভুলতে পারবে না। বিয়ে করলে বাঁধনকেই করবে সে।