প্রতিনিধি=
চাঁদপুর শহরের মমিনপাড়ায় গৃহবধূ হাজেরাকে হত্যার সাথে জড়িত আসামী স্বামী শরীফের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
চলতি মাসের ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় যৌতুক নিয়ে গৃহবধূ হাজেরার সাথে শরীফের বড় ভাই ও ভাবীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এলাকা সূত্রে জানা যায়, ওই দিন হাজেরার ভাসুর ও তার স্ত্রীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে মারধর করে। এক পর্যায়ে শহরের মমিনপাড়ায় শ্বশুর বাড়িতেই সে মারা যায়। ওই বাড়ির লোকজন তাকে মৃত অবস্থায় চাঁদপুর শহরের সেন্ট্রাল হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান।
চাঁদপুর সেন্ট্রাল হাসপাতালে পুলিশ কর্তৃক নিহত গৃহবধূ হাজেরার সুরতহালের পর জানা যায় তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিলো। গৃহবধূ নিহত হওয়ার পর চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ লাশ রাতেই থানায় নিয়ে আসে। ময়না তদন্ত শেষে পরদিন নিহতের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে তার স্বামী শরীফ, শরীফের বড় ভাই হাবিবসহ ক�জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দেয়া হয়।
চাঁদপুর মডেল থানায় মামলা হওয়ার পর থেকে শরীফ মমিনপাড়া থেকে পালিয়ে রঘুনাথপুর বন্ধু মামুনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। ১৬ ডিসেম্বর দুপুরে এলাকাবাসী রঘুনাথপুর এলাকায় তাকে আটক করার চেষ্টাকালে সে মোটর সাইকেলযোগে পালাতে চেষ্টা করে। এ সময় সে মোটর সাইকেল দিয়ে বেশ ক�জন পথচারীকেও আহত করে। এক পর্যায়ে রঘুনাথপুর এলাকার সংস্কারবিহীন খাদে পড়ে সে মোটর সাইকেল নিয়ে পড়ে যায়। পরে এলাকাবাসী তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তার আটকের পর মমিনপাড়াসহ চাঁদপুর শহরে সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। ওই দিন দুপুরে চাঁদপুর মডেল থানায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে শরীফ জানান, তার বড় ভাই, মা, ছোট ভাই, বড় ভাবীসহ সবাই হাজেরাকে বিভিন্ন সময় গালমন্দ করতো এবং তাকে মারধরও করতো। ওই দিন সন্ধ্যায় বড় ভাই ও ভাবীদের সাথে হাজেরার কথা কাটাকাটির সময় সে চলে আসে। রাতে হাসপাতালে হাজেরার লাশ আনার আগে তার বড় ভাবী আয়েশা প্রথম মৃত্যুর খবরটি শরীফকে জানায়।
এলাকাবাসীর সাথে আলাপকালে তারা জানান, স্কুল পড়�য়া গৃহবধূ হাজেরার সাথে মাত্র আড়াই মাস আগে বিয়ে হয় মমিনপাড়া এলাকার ফজলুল হক মুন্সীর ৩য় ছেলে শরীফ মুন্সীর। পারিবারিকভাবে বিয়ে হলেও শরীফ হাজেরার সাথে তার বিয়েটা মেনে নিতে পারেনি।
হত্যার সাথে জড়িত আসামী শরীফকে আটকের পর থেকেই তাকে যেনো রিমান্ড কিংবা তার পরিবারের সদস্যদেরকে যেনো পুলিশ আটক না করতে পারে সে জন্য সরকারি ও বিরোধী দলীয় জেলা পর্যায়ের নেতাদের দিয়ে তদবির চালায়। আটকের ১ সপ্তাহ পর গতকাল দুপুরে চাঁদপুর আদালতে আসামী শরীফের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। সিনিয়র চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অসীম কুমার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গৃহবধূ হত্যার সাথে জড়িত ১ জনকে আটক করলেও অন্যান্য আসামীরা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।