আন্তর্জাতিক ইসলামী ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকীর নৃশংস এ হত্যার ঘটনায় তাৎক্ষনিক এক বার্তায় নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন ছারছীনার পীরসাহেব ক্বেবলা আলহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহ মোহাম্মাদ মোহেব্বুল্লাহ। তিনি বলেন, তার এ হত্যাকান্ডে ইসলামী অঙ্গনে অপূরনীয় শূণ্যতার সৃষ্টি হল। এদেশের মানুষ মিডিয়ায় ইসলামী খেদমত আঞ্জামে ফারুকীর অবদান ও বলিষ্ঠ ভূমিকা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী ছারছীনা দরবার শরীফের একনিষ্ট খাদেম ছিলেন, ছারছীনার পীরসাহেব ক্বেবলা আরো বলেন, মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী ছাত্র জীবনে ছারছীনা মাদরাসা অধ্যায়ন করেছন সুনামের সাথে। পীর সাহেব মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। একই সঙ্গে তিনি শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। তার নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনায় আরো শোক প্রকাশ করেছেন বিশিষ্ট আলেম মুফতি আল্লামা মোস্তফা হামীদী, শাহ সাহেব মাওলানা শাহ মোহাম্মদ হোসাইন, অধ্যক্ষ মুহা. শরাফত আলী।
এই নির্মম হত্যা কান্ডের সাথে জরিতদের অতি শিঘ্রই গ্রেফতার করে কঠোর শাস্থির আওতায় আনার জন্যে সরকারের কাছে ছারছীনার পীরসাহেব ক্বেবলা আরহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহ মোহাম্মাদ মোহেব্বুল্লাহ আহব্বান জানান।
উল্লেখ্য গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে পূর্ব রাজাবাজার নাজনীন স্কুল সংলগ্ন ১৭৪ নং ভবনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে হাইকোর্ট মসজিদের খতিব ও বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন শাইখ কাজী নুরুল ইসলাম ফারুকীকে ঢাকার পূর্ব রাজাবাজারের নিজ বাসায় কুপিয়ে ও গলাকেটে করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ, র্যাব ও ডিবিসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সিআইডির ক্রাইম সিনের সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে প্রাথমিকভাবে তা জানাতে পারেনি পুলিশ। তবে ইসলাম বিরোধী ওহাবী ও সালাফিরা যে কোন সময় তাকে হত্যা করতে পারে ঘনিষ্ঠজনদের কাছে এমন আশঙ্কার কথা তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন। বিশিষ্ট এ ব্যক্তির মৃত্যুর খবর শুনে তার রাজাবাজারের বাসায় ছুটে আসেন হাজার হাজার ভক্ত, শুভাকাঙ্খী ও আত্মীয়স্বজন। মানুষের ভীড় সামাল দিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনিকি হিমশিম খেতে হয়।
শাইখ কাজী নুরুল ইসলাম ফারুকী টেলিভিশনসহ গণমাধ্যমের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ওহাবীদের কঠোর ভাষায় সমালোচনা করতেন। হাইকোর্ট মাজার মসজিদে প্রতি শুক্রবার তিনি জুমার নামাজের ইমামতি করতেন। তার ইমামতিতে জামাতে নামাজ আদায় করতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মুসল্লীরা আসতেন। সর্বশেষ তিনি মাই টিভিতে হক কথা ও সত্যের সন্ধানে নামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করতেন। এছাড়া তিনি চ্যানেল আই’য়ের কাফেলা ও শান্তির পথের উপস্থাপক। যে অনুষ্ঠানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ইসলামের স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলোকে ফুটিয়ে তুলছেন। ওই অনুষ্ঠানে তিনি রাসুল (সঃ) এর স্মৃতি বিজড়িত মক্কা-মদীনাসহ ইরান, জর্ডান, মিশরসহ মধ্যপ্রাচ্য ও দূর প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের ইসলামিক ঐতিহাসিক সত্যকে ফুটিয়ে তুলতেন।