ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
চাঁদপুর পৌরসভার ১৪নং ওয়ার্ডের বাবুরহাট বাজারসহ আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন নেশাদ্রব্য বিক্রি ও সেবন চলছে হরদমে। আর এ সকল হাতের নাগালে সহজে পাওয়া যায় বলে এর পরিধি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুব সমাজ ধ্বংসকারী ভয়ঙ্কর এই মাদকের ব্যবসা করে অনেকে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে। এসব নেশাদ্রব্য বিক্রি ও সেবনে আসক্ত হচ্ছে এলাকার ১৪ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত তরুণ ও যুব সমাজ। স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররাও এ মরণব্যাধি নেশায় আসক্ত হচ্ছে। আর এসব নেশাদ্রব্য স্থানীয় বিপথগামী বেশ ক’জন যুবক ইয়াবাসহ বিভিন্ন নেশাদ্রব্য সুকৌশলে বিক্রি করছে। বাবুরহাট এলাকায় মাদক নিয়ে একাধিক মাদক ব্যবসায়ী পুলিশের হাতে আটক হলেও কিছুদিন পর তারা জামিনে মুক্তি পেয়ে আবার তারা অনেকটা প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি শুরু করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাবুরহাটসহ আশপাশের কয়েকজন সচেতন ব্যক্তি সাংবাদিকদের জানান, আগে চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ ইয়াবাসহ কয়েকজনকে আটক করে। তাদের নিজস্ব একটি বাহিনী রয়েছে। নেশা সেবন ও বিক্রির স্থানগুলো হচ্ছে : বাবুরহাট মডেল টাউন সংলগ্ন, অভয় বাবুর দিঘিরপাড়, দশআনী দিঘির পাড়, উঃ দাসদী মিজি স্কুলের আশপাশ, রঙ্গেরগাঁও, বাবুরহাট হাই স্কুল এন্ড কলেজ খেলার মাঠ, কলেজ শাখার আশপাশ, মোবারক ও চেরাগ আলী সুপার মার্কেটের ছাদ, বাবুরহাট মতলব রোড ও বাবুরহাটস্থ মতলব-পেন্নাই সড়কের বটতলা উল্লেখযোগ্য। এসব এলাকায় সন্ধ্যা হলেই বিভিন্ন মডেলের দামী মোটরসাইকেলে করে কিছু যুবকের আনাগোনা দেখা যায়। এদেরকে ভয়ে এলাকার কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। ফলে এদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে একটি বিষয় লক্ষ্য করা যায় যে, ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সী বেশ কিছু যুবক এলাকার কিছু অসহায় হতদরিদ্র লোকজনের মাধ্যমে ফেন্সিডিল, ইয়াবাসহ নানা মাদকদ্রব্য ভ্রাম্যমাণভাবে দেদার বিক্রি করছে। এ বিষয়ে একজন মাদকসেবীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, যারা এগুলো ব্যবসা করছে তাদেরকে দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না যে তারা মাদকের সাথে জড়িত, আর তারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
মাদকসেবীরা মাদকের টাকা যোগানের জন্য নানা রকম অপরাধ কর্মে জড়িয়ে পড়ছে সহজেই। ফলে এলাকায় চুরি, ছিনতাই দিন দিন বেড়েই চলছে। ইদানিং লক্ষ্য করা যায়, রাত ১১টার পর অভয় বাবুর দিঘি সংলগ্ন রাস্তার পাশে বেশ ক’জন বসে আড্ডা দেয় এবং ঐ সড়কে চলাচলকারী পথচারীদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকায় অনেকটা চাপা ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। মাদক ব্যবসায় জড়িত কতিপয় যুবক সমাজের কিছু নামী-দামী ব্যক্তির আত্মীয় বলে তারা মাদকসহ নানা ধরনের অপরাধ কর্মে লিপ্ত হলেও তাদেরকে কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। সমাজ সচেতন অভিভাবকগণ নিজেদের সন্তানদের নিয়ে মারাত্মক দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন যাপন করছে। বাবুরহাট এলাকার বিপথগামী মুখোশধারী কিছু লোক এ সকল নেশাদ্রব্য নিজেকে ধরা ছোঁয়ার বাহিরে রেখে নিরাপদে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। বাবুরহাট এলাকার ছাত্র, তরুণ ও যুব সমাজকে নেশার হাত থেকে রক্ষা করতে পর পর অভিযান চালিয়ে মাদক বিক্রেতাদের গ্রেফতার করে কঠিন সাজা দিতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, র্যাব ও ডিবি পুলিশের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন বাবুরহাটের অভিভাবকবৃন্দ এবং সমাজ সচেতন ব্যক্তিবর্গ।