শাহাদাত হোসেন,
কুয়ালালামপুর মালয়েশিয়া: কুয়ালালামপুর এর গম্বাকে অবস্থিত পুসাত কমুনিতি তে হয়ে গেল বাংলা নববর্ষ উদযাপনের উৎসব। বাংলাদেশি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন মালয়েশিয়া (বি এস ইউ এম) এর উদ্যোগে “বাংলা বর্ষবরণ ১৪২১ উপলক্ষে আলোচনা সভা, সম্মাননা প্রদান এবং সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা” অনুষ্ঠান টি প্রবাসেও যেন দিয়েছে মাতৃভূমির সেই স্নিগ্ধ ছোঁয়া। মালয়েশিয়ার ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই মিলন্মেলার আয়োজন করা হয়। আয়োজনের এর প্রথমেই থাকে ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলা। পান্তা-ইলিশ ছিল মেলার প্রধান আকর্ষণ। আর ছিল নানান মুখরোচক এবং সুস্বাদু বাংলা খাবার এর সমাহার। ছিল ভাপা পিঠা, ভর্তা, চটপটি, ফুচকা, ঝালমুড়ি, লাচ্ছি, বিরিয়ানি, মোরগ পোলাও এবং আর বহু খাবার। বাঙ্গালিরা বহুদিন পর এতসব বাঙালি খাবার যেন লুফে নিয়েছে। মেলায় আর ছিল বিভিন্ন রকম এর নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ও খেলনা। তিল ধারনের ঠায় ছিলনা এই মেলায়। জোহর এর পর থেকে বিশেষ অতিথি এবং শিক্ষকদের আগমন শুরু হয়। আয়োজন এর দ্বিতীয় অংশ ছিল আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান। পরম সম্মানের সাথে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং মালয়েশিয়ার জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে এই অংশ শুরু হয়। তারপর কুরআন তিলাওয়াত করেন ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া এর মোঃ মাবরুক বিল্লাহ। বি এস ইউ এম চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মাদ মহিউদ্দিন এর উদ্বোধনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে অনুষ্ঠান শুরু হয়। জনাব মহিউদ্দিন এর বক্তব্য সবার জন্য খুব উদ্দীপক ছিল। বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি মালয়েশিয়া এর সিনিওর প্রভাষক ও আই টি ম্যানেজার ডঃ এ কে এম মুজাহিদুল ইসলাম, ইউনিভার্সিটি মালায়া এর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এর অধ্যাপক ডঃ শামসুদ্দিন আহমেদ মোহাম্মাদ শাহাদাত এবং ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া এর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এর অধ্যাপক ডঃ এ কে এম নুরুল আমিন। ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া এর ইন্টারন্যাশনাল এফেয়ারস ডিভিশন এর ডিরেক্টর অধ্যাপক ডঃ আকমাল খুজাইরি বিন আব্দ রাহমান। সবশেষে বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া এর স্টুডেন্টস এফেয়ারস এর ডেপুটি রেক্তর অধ্যাপক দাতু ডঃ মিজান হাতিম। এর মধ্য দিয়েই শেষ হয় আলোচনা সভা।তারপর শুরু হয় সম্মাননা প্রদান পর্ব। মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনবদ্য অবদান রাখার জন্য তরুণদের এই সম্মান দেয়া হয়। শিক্ষা ও গবেষণায় অবদান রাখার জন্য সম্মাননা প্রদান করা হয় ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়া এর ডঃ মোঃ পারভেজ আনোয়ার। খেলাধুলায় অবদানের জন্য মোঃ সারোয়ার জাহান (ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া) ইঞ্জিনঃ আহসানুল ইসলাম (ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়া)। বিশেষ উদ্যোগতা হিসেবে সম্মানিত হন মমিনুল ইসলাম মমিন (ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া)। এছাড়া বিনোদনের জন্য রাশিক হায়দার (ইউনিভার্সিটি মালায়া), নেতৃত্বে অসাধারণ অবদানের জন্য আশরার মাতিন (মোনাশ ইউনিভার্সিটি) ও মোঃ তানজিব-উল-হক (ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি পেট্রোনাস), ব্যাবসায়িক ক্ষেত্রে অবদানের জন্য শামিউর রহমান (ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি পেট্রোনাস)এবং বিভিন্ন কার্যক্রমে অবদান রাখার জন্য শারমিন আকতার (ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া) ও শান মাহমুদ (সানওয়ে ইউনিভার্সিটি), পড়াশুনায় অসাধারণ কীর্তি, অনবদ্য নেতৃত্ব, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং সহশিক্ষা কার্যক্রমে অসাধারণ অবদান রাখার জন্য “আইকন এ্যাওয়ার্ড” পান ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া এর জনাব মোহাম্মাদ মহিউদ্দিন। সম্মাননা প্রদান পর্ব শেষ হওয়ার । প্রিয় অভিনেতা হাসান মাসুদ সবার সামনে উপস্থিত হন। দর্শকের উচ্ছ্বাস এর সীমা ছিলনা কোন। তিনি বক্তব্য রাখেন এবং উৎসুক দর্শকদের নানান রকম প্রশ্নের মজার মজার উত্তর দেন। মাগরিব এর পর থেকে শুরু হয় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। উক্ত অনুষ্ঠানে দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয় এর বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা। ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া, সানওয়ে ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি মালায়া, মোনাশ ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি পুত্রা, এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটি, এউ সি এস আই ইউনিভার্সিটি, লিমককওয়িং ইউনিভার্সিটি এবং মাল্টিমিডিয়া ইউনিভার্সিটি এর প্যারফরমার দের চোখ ধাঁধানো প্যারফরম্যান্সে দর্শকরা হারিয়ে যায়। ছিল বাংলা গান, দেশি নাচ, আবৃত্তি, বাচ্চাদের নাচ ইত্যাদি। সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার মধ্য দিয়েই শেষ হয় বাংলা নববর্ষ বরনের এই অনুষ্ঠানটি। মিডিয়া পার্টনার ছিলেন মাসিক ম্যাগাজিন বিচরণ।
শিরোনাম:
সোমবার , ১১ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২৭ কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।