শাহাদাত হোসেন,মালয়েশিয়া থেকে :
৬৯ বছরে পা-রাখলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দলের প্রতিষ্টাবার্ষিকী দেশে-বিদেশে এক যুগে পালিত হলো প্রতিষ্টা বার্ষিকী। এ উপলক্ষে শুক্রবার বিকেলে মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগ পালন করেছে প্রতিষ্টা বার্ষিকী। রাজধানী কুয়ালালামপুরের কারি-কাপালা হল রোমে প্রতিষ্টাবার্ষিকীর এক আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়। মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের (প্রস্তাবিত) সভাপতি মকবুল হোসেন মুকুলের সভাপতিত্বে ও কমিটির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক শাহীন সরদারের পরিচালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের সাবেক আহবায়ক সোহরাওয়ার্দী হোসেন সারোয়ার। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্বা শওকত হোসেন পান্না। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক কামরুজ্জামান কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির। ইফতার পূর্বক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠিত এই দলটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে দেশের গণমানুষের সংগঠনে পরিণত হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্য সোহরাওয়ার্দী হোসেন সারোয়ার তার বক্তব্য বলেন,১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শামসুল হকের নেতৃত্বে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে এই দলের আত্মপ্রকাশ ঘটলেও পরে শুধু আওয়ামী লীগ নাম নিয়ে অসা¤প্রদায়িক সংগঠন হিসেবে বিকাশ লাভ করে। প্রধান বক্তার বক্তব্য মুক্তিযোদ্বা শওকত হোসেন পান্না বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ দেশে পাকিস্তানি সামরিক শাসন, জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন ও শোষণের বিরুদ্ধে সব আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এ দলটি। বিশেষ অতিথির বক্তব্য মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাধারন সম্পাদক কামরুজ্জামান কামাল বলেন, ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আইয়ুবের সামরিক শাসন-বিরোধী আন্দোলন, ৬৪-এর দাঙ্গার পর সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি প্রতিষ্ঠা, ৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন ও ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের পথ বেয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ২৪ বছরের আপসহীন সংগ্রাম-লড়াই এবং ১৯৭১ সালের নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ তথা সশস্ত্র জনযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের ফসল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। সভাপতির বক্তব্য বকবুল হোসেন মুকুল বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বঙ্গবন্ধুর সরকার স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে যখন অর্থনৈতিক মুক্তির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল তখনই স্বাধীনতা বিরোধীচক্র আন্তর্জাতিক শক্তির সহায়তায় ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মাধ্যমে এই সংগঠনটিকে নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা চালানো হয়। ১৯৮১ সালের ১৭ মে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নবউদ্যামে সংগঠিত হয়। আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শাখাওয়াত হক জোসেফ, প্রচার স্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, মালয়েশিয়া যুবলীগের আহবায়ক মো: তাজকির আহমেদ, শ্রমিক লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম বাবুল, সেচ্ছা সেবক লীগের সহ সভাপতি এম এ হান্নান, ছাত্র লীগ নেতা রাসেল শিকদার প্রমূখ। বক্তারা তাদের বক্তব্য বলেন, দীর্ঘ একুশ বছর লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জয়ী হয়ে ২৩ জুন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে আসে। ২০০১ এবং ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পর আর এক দফা বিপর্যয় কাটিয়ে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ আসনে বিজয়ী হয়ে আবারো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায় এই দলটি। পরবর্তী সময়ে ২০১৪ সালের ৫ জানুযারির সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আবারও সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। বর্তমানে বঙ্গ কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে সকলে একযুগে কাজ করার আহবান জানান নেতৃবৃন্দ। আলোচনা সভা শেষে মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ দলের ৬৮ তম প্রতিষ্টা বার্ষিকীর কেক কাটেন। আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে উস্থিত ছিলেন, দাতু আক্তার হোসেন, আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আব্দুল করিম, আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মুক্তিযোদ্বা শাহ জাহান, মামুনুর রশিদ, যুব লীগের যুগ্ন আহবায়ক মো: আবু হানিফ, মনসুর আল বাশার সোহেল, শ্রমিক লীগের সহ সভাপতি শাহ আলম হাওলাদার, আনোয়ার হোসেন, সেচ্ছা সেবক লীগের ভার প্রাপ্ত সভাপতি মো: জালাল উদ্দিন সেলিম, সাধারন সম্পাদক মোনায়েম খান, জালান ইপু শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: আনিছ মোল্লা,কেপং শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: লিটন মাতবর সহ আওয়ামী পরিবারের নেতৃবৃন্দ।